চট্টগ্রাম: মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ, পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খোশগল্প আর অতিথি আপ্যায়ন করে বাসায় আজ বুধবার সময় কাটাচ্ছেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত নাগরিক কমিটির মেয়র প্রার্থী এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী। মাঝে টেলিফোনে নাগরিক কমিটির নেতাকর্মীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়ার পাশাপাশি সংবাদকর্মীদের সঙ্গেও কথা বলেন তিনি।
আগামীকাল বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আইনানুযায়ী নির্বাচনের আগের দিন অর্থাৎ আজ বুধবার প্রার্থীরা কোনো ধরনের প্রচার চালাতে পারেননি।
দুপুর ১টার দিকে নগরীর চশমাহিলের মেয়র গলিতে মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাসায় গিয়ে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির স্থানীয় কয়েকজন নেতা এবং বিজিএমইএ’র কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে ড্রইংরুমে বসে কথা বলছেন তিনি।
আলাপকালে নির্বাচনে নিজের জয়ের ব্যাপারে আবারো আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ‘ভয় পাচ্ছি টাকা ছড়ানো আর অপপ্রচারকে। তবে নির্বাচনে জয়ী হই আর না হই চট্টগ্রামবাসীকে নিয়েই থাকব। ’
কথার ফাঁকে ফাঁকেই চলছিল অতিথি আপ্যায়ন। নিজ হাতে অতিথিদের প্লেটে তুলে দিচ্ছিলেন মিষ্টি আর কলা। এসময় মুক্তিযুদ্ধ আর বঙ্গবন্ধুর প্রসঙ্গ টেনে মহিউদ্দিন বলেন, মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাউজানে যখন এলাকার ছেলেদের সংঘটিত করছিলাম তখন পাকিস্তানি সেনারা একদিন আমাকে ধরে নিয়ে যায়। আমাকে ছাড়িয়ে আনার জন্য বাবা একদিন সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কাছে গেলেন। তখন সাকা চৌধুরী বলেছিলেন ‘তোমার ছেলেকে বলো আরো জোরে জয় বাংলা বলতে। ’ আমাকে মেরে ফেলেছে ভেবে আমার বাড়িতে আমার নামে মেজবানও খাওয়ানো হয়েছিল। পরে একদিন বঙ্গবন্ধুকে এ ঘটনা জানালে তিনি হেসে ফেলেন।
কথার ফাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল নির্বাচনে জয়-পরাজয় নিয়ে কোনো দুশ্চিন্তা আছে কিনা। উত্তরে বলেন, ‘জয়-পরাজয় নিয়ে ভাবিনা। মানুষের পাশে ছিলাম। মানুষ ভোট দিলে জিতব। ’
মাঝে একবার বাসার ভেতর ঢুকে স্ত্রী, সন্তান আর নাতি-নাতনিদের নিয়ে খোশগল্প শুরু করেন। সংবাদকর্মীরা তাকে অনুসরণ করে বাসার ভেতর ঢুকে গেলে তিনি অনুরোধ করেন, নির্বাচন নিয়ে কোনো কথা বলা যাবে না, আচরণবিধি লঙ্ঘন হবে। ’
নিজের স্ত্রী হাসিনা মহিউদ্দিনকে অনুরোধ করেন একদিনের জন্য সংবাদকর্মী সেজে প্রশ্ন করতে। ছেলে মহিবুল হাসান নওফেল আর দুই মেয়ে ইশরাত শারমীন পিয়া এবং নূসরাত শারমিন পাপিয়াকে বলেন, ‘সবসময় নিজের কথা, আরাম-আয়েশ আর বিলাসিতার কথা ভেবোনা। লাভ দ্যা নেশন, লাভ দ্যা কাণ্ট্রি। ’
এরপর সংবাদকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমি সবসময় আমার ছেলেমেয়েদের বলি লেখাপড়া করো তবে সবসময় শুধু বই নিয়ে পড়ে থেকোনা। পত্রপত্রিকা পড়ো, গল্প-কবিতাও পড়ো। আবৃত্তি করো, গান শেখো। ’
এর মধ্যেই এক সংবাদকর্মী নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন করতে চাইলে কিছুটা ক্ষুব্ধ হন তিনি।
আজ সারাদিন কেমন কাটল- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সকালে উঠে বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত করেছি। অনেক দিন পর আজ মেয়ে দুটোর সামনে গিয়ে তাদের পড়ালেখার খোঁজখবর জানতে চেয়েছি। লোকজন ফোন করছে সেগুলো রিসিভ করেছি। আর আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি। ’
বিকেলে তিনি নাগরিক কমিটির কার্যালয়ে গিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন এবং সার্বিক কার্যক্রম তদারকি করেন।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৭২১ ঘণ্টা, ১৬ জুন ২০১০
আরডিজি/এএইচএস