ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

আ.লীগের নতুন কমিটিকে বিএনপির অভিনন্দন

সিনিয়র স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৬
আ.লীগের নতুন কমিটিকে বিএনপির অভিনন্দন ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কমিটির সব সদস্যকে অভিনন্দন জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।

জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের আয়োজনে কালজয়ী চলচ্চিত্রকার প্রয়াত চাষী নজরুল ইসলামের ৭৫তম জন্মদিন উপলক্ষে রোববার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় কচিকাঁচা ভবন মিলনায়তনে আলোচনা সভা ও প্রমাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপির পক্ষ থেকে এ অভিনন্দন জানান দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, বিএনপি আশা করে গণতন্ত্র ও মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কাজ করবেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ বড় একটি উৎসব করেছে। এই উৎসবে তারা আলোকসজ্জাসহ সব আয়োজন নিখুঁতভাবে হয়েছে, বিদেশি বন্ধুরা এসেছিলেন তারাও কথা বলেছেন। কিন্তু জনগণের জন্য, বাংলাদেশের মানুষের যে চাহিদা তার জন্য তারা কি করেছেন? এ সম্মেলনে সেই মূল বিষয়টিই নেই।

তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধান সংকট হচ্ছে দেশের গণতন্ত্র।   সেই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনার জন্য তারা কি করবেন, তারা তা বলেনি। মানুষের অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠা করার জন্য কি করবেন, তা তারা বলেননি। যে ভোটের অধিকার তারা ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন, সেই অধিকার ফিরিয়ে দিতে কি করবেন তাও বলেননি।

বিএনপির এ নেতা বলেন, এই কাউন্সিলের আগে আমি বলেছিলাম, এই কাউন্সিল থেকে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের পথনির্দেশনা দেখতে পাবো। আশা করেছিলাম, প্রধানমন্ত্রী কিভাবে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসবেন, একটি সংলাপের ব্যবস্থা করবেন, কিভাবে বিরোধী দলের সঙ্গে একটি সমঝোতা করা যায় সেই ব্যাপারে কথা বলবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা সেটি পাইনি। জাতি অনিশ্চয়তার মধ্যে ছিলো, অনিশ্চয়তার মধ্যেই থেকে গেছে।
 
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের কথা ভুলে যাইনি। সেখানে শতকরা ৫ ভাগ মানুষ ভোট দিতে পারেনি। ১৫৩ জন প্রার্থীকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত করা হয়েছে। যে বিরোধী দল করা হয়েছে সেই বিরোধী দলকে কেউ গুরুত্ব তো দেয়না, সরকারও গুরুত্ব দেয়না। তাদের তিনজন সদস্য সরকারের মন্ত্রীসভার সদস্য।

সংসদীয় গণতন্ত্রের কথা বলে বিরোধী দলের নামে অদ্ভুদ জিনিস জাতির সামনে হাজির করা হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে আমাদের বোকা বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এটি হচ্ছে জাতির সঙ্গে সম্পূর্ন প্রতারণা।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে এক হাজার কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে, ৫শ বেশি নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে, হাজার হাজার মানুষ পঙ্গু  হয়েছে, মিথ্যা মামলায় লাখ লাখ মানুষকে আসামি করা হয়েছে। পালিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। এই যে বিভাজনের রাজনীতি, ত্রাসের রাজনীতি; বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থেই একটি ফ্যাসিবাদ জন্ম দিয়েছে।

সরকার ভিন্নমতকে সহ্য করতে পারছে না অভিযোগ করে তিনি বলেন, অধিকারের কথা বলা এখন অপরাধ। যারা এই ধরনের কথা বলে তাদের চিহ্নিত করা হয়, হুমকি দেওয়া হয় গুম-খুন করা হবে বলেও।

এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, সরকার গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করছে। সরকারের কথা মতো কাজ না করলে গণমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

প্রয়াত চাষী নজরুল ইসলামের স্মৃতিচারন করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, তিনি সত্য কথা বলতে ভয় পেতেন না। সাংষ্কৃতিক আন্দোলনের মাধ্যমে অধিকারের রক্ষায় কাজ করেছেন। তিনি এমন সময় চলে গেলেন যখন তাকে খুব দরকার ছিলো।

অধিকার রক্ষায় দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আয়োজক সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জোসনা কাজীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ উপাচার্য আ ফ ম ইউসুফ হায়দার প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৩, ২০১৬
এমএম/ওএইচ/বিএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।