ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

জাতীয় সমৃদ্ধির প্রধান অন্তরায় জঙ্গিবাদ ও মাদক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৭
জাতীয় সমৃদ্ধির প্রধান অন্তরায় জঙ্গিবাদ ও মাদক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের

নোয়াখালী: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মাদক ও জঙ্গিবাদ দু’টিই অভিন্ন দুই শত্রু। জঙ্গিবাদ ও মাদকের ভয়াবহতা আজ জাতীয় সমৃদ্ধির প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, তারুণ্যকে ধ্বংস করছে মাদক, তারুণ্যকে বিপথগামী করছে জঙ্গিবাদ। আজ ইয়াবা নতুন প্রজন্মকে ধ্বংস করে দিচ্ছে।

এভাবে তারুণ্য তথা জেনারেশন ধ্বংস হতে থাকলে দেশের উন্নয়নে বড় শূন্যতা তৈরি হবে। দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধি বজায় রাখতে এই দুই শত্রুকে রুখতে হবে। এজন্য জনপ্রতিনিধি ও সর্বস্তরের মানুষের উচিত পুলিশকে স্বতঃস্ফুর্ত ও আন্তরিকতার সঙ্গে সহযোগিতা করা।

পুলিশ ও সাধারণ মানুষের মধ্যে যে দূরত্ব রয়েছে, তা কমিয়ে আনতে দেশজুড়ে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মন্ত্রী আরো বলেন, দেশের টাকায় পদ্মাসেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন বাস্তবায়ন হচ্ছে। কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা সুন্দর সমাজ গড়তে পুলিশের সঙ্গে জনতার ব্রিজ নির্মাণে কাজ করবে। জনস্বার্থে, দেশের স্বার্থে পুলিশ ও জনগণের যে সেতু নির্মাণ হবে, তা বিশ্বাসের, আস্থার, ভালোবাসার ও ন্যায় বিচারের।

শনিবার (০৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শহীদ ভুলু স্টেডিয়ামে নোয়াখালী জেলা পুলিশ আয়োজিত কমিউনিটি পুলিশিং সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ খাওয়ার অভিযোগের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী আরো বলেন, গুটি কয়েক অসৎ পুলিশ সদস্যের ঘুষ, দুর্নীতি ও অন্যায়ের দায়ভার পুরো বাহিনী নিতে পারে না। তিনি সম্প্রতি কয়েকটি জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের সাহসী অভিযান ও মাদক নিয়ন্ত্রণে ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।
শুধু পুলিশ ঘুষ খায় তা নয়, রাজনীতিকরাও ঘুষ খায়। টাকার বিনিময়ে চাকরির জন্য সুপারিশ, তদবির সবই করে রাজনীতিকরা। নির্বাচন এলে রাজনীতির অঙ্গন টাকায় বেচা-কেনা হয় বলেও মন্তব্য করেন মন্ত্রী।

রাজনীতিকদেরও সৎ হতে হবে। সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে রাজনীতি করায় দেশের ঐতিহ্যবাহী দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। তাই দলীয় সংসদ সদস্যসহ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, মনে রাখবেন সততাই শক্তি, সততাই মুক্তি। ত্যাগীদের মূল্যায়ন হবেই।

সমাবেশে প্রধান আলোচক ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াছ শরীফের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরো বক্তব্য রাখেন- নোয়াখালী জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. এ বি এম জাফর উল্যা, জেলা প্রশাসক বদরে মুনির ফেরদৌস প্রমুখ।

আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক তার বক্তব্যে বলেন, পুলিশকে আরো গণমুখি, সেবামুখি, জবাবদিহি করার উদ্দেশে কমিউনিটি পুলিশিং এর জন্ম। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পুলিশের পাশাপাশি কমিউনিটি পুলিশ দারুন ভূমিকা রাখছে। দেশের মালিক জনগণ, পুলিশ জনগণের সেবক। কিন্তু দেখা যায় জনগণ ও পুলিশের মধ্যে বড় দূরত্ব রয়েছে। এই দূরত্ব কমিয়ে আনতে প্রতিটি পাড়ায়-মহল্লায় কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা চালু করা হবে। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

তিনি আরো বলেন, কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থা জোরদার হলে জনশ্রুত পুলিশি হয়রানি কমে যাবে। থানায় থানায় যেসব দালাল আছে তাও দূর হয়ে যাবে। সামাজিক অপরাধ, পারিবারিক কোন্দলের কারণে হয়রানিমূলক মামলা, মাদকের ভয়াবহতা সবই কমে যাবে। কারণ কমিউনিটি পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশিং ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরা হবেন স্থানীয় জনগণ। কমিউনিটি পুলিশকে যারা নিয়ন্ত্রণ করবে, তারা হবে সৎ, নিষ্ঠাবান তথা জনমানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য। পাশাপাশি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের সহযোগিতা করবে।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের সামনে থেকে প্রায় ১৩ হাজার কমিউনিটি পুলিশের অংশগ্রহণে বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। বিকেলে মন্ত্রী এবং আইজিপি কোম্পানীগঞ্জ থানার নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন করেন। রাতে আইজিপির উপস্থিতিতে জেলা পুলিশ লাইন্স মাঠে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ও নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৪, ২০১৭
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।