ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

রাজনীতি

কেশবপুরে জেলহত্যা দিবসেও পৃথক কর্মসূচি আ’লীগের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৭
কেশবপুরে জেলহত্যা দিবসেও পৃথক কর্মসূচি আ’লীগের কেশবপুরে জেলহত্যা দিবসেও পৃথক কর্মসূচি আ’লীগের

যশোর: যশোরের কেশবপুরে জেলহত্যা দিবসেও পৃথক কর্মসূচি পালন করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগের একাংশ এবং স্থানীয় এমপির অনুসারী আরেক অংশ। এতে বরাবরের মতো বিড়ম্বনায় পড়েন সাধারণ নেতাকর্মীরা।

শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সকালে দলের শাখা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে উপজেলা আওয়ামী লীগ এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেকের নেতৃত্বে তার অনুসারীরা পৃথকভাবে এ কর্মসূচি পালন করেন।  

এ বিষয়ে কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গাজী গোলাম মোস্তফা বাংলানিউজকে বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী সকালে উপজেলা সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সিনিয়র সহ-সভাপতিসহ পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী দলীয় কার্যালয়ে এসে দেখেন, নেতাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ছাড়াই স্থানীয় সংসদ সদস্য ইসমাত আরা সাদেক ও তার সমর্থকরা পতাকা উত্তোলন করেছেন।

জানতে পারি তিনি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়ে নিজ অনুসারীদের নিয়ে আলোচনা সভাও করেছেন’।

‘পরে আমরা পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় চার নেতার প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাই। পরে তাদের আত্মার শান্তি কামনায় দোয়া এবং আলোচনা সভা করা হয়’।

‘তবে প্রতিমন্ত্রী যেহেতু পতাকা টানিয়েছেন, সেহেতু ওই পতাকা নামিয়ে অবমাননা করেনি। ’ বলেন গাজী গোলাম মোস্তফা।
কেশবপুরে জেলহত্যা দিবসেও পৃথক কর্মসূচি আ’লীগের
কোন্দল নিরসন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পর ইসমাত আরা সাদেক প্রভাব খাটিয়ে নিজের এপিএস, পিও, দেবর, ননদকে আওয়ামী লীগের কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। পরে অরাজনৈতিক কিছু লোককে বড় পদে বসাতে ব্যর্থ হয়ে কিছু সুবিধাবাদী আর প্রশাসনের সহযোগিতায় দলীয় কার্যালয়ের দরজায় তালা মেরে বন্ধ করে দেন। কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপের পর বিক্ষুব্ধ কর্মীরা তালা ভেঙে ফেলেন। এসব ঘটনার পরেও প্রতিমন্ত্রী দলকে কাছে টানার প্রয়োজনবোধ মনে করেননি। এখন আমাদের কী করার থাকতে পারে?’

উপজেলা আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে ছিলেন শাখা সভাপতি এসএম রহুল আমীন, সাধারণ সম্পাদক গাজী গোলাম মোস্তফা, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এইচএম আমীর হোসেন, জেলা কমিটির সদস্য হাসান আলমগীর, বাংলাদেশ আওয়ামী মহিলা লীগের সভাপতি রাবেয়া ইকবাল, উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক কাজী মুজাহিদুল ইসলাম পান্না, উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কাজী আজাহারুল ইসলাম মানিক, যুগ্ম-আহবায়ক জাকির হোসেন মুন্না প্রমুখ।

এর আগে সকালে প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেকের অনুসারীদের কর্মসূচিতে ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি তপন কুমার ঘোষ মন্টু, যুগ্ম-সম্পাদক রফিকুল ইসলাম পিটু, আওয়ামী লীগ নেতা শাহাদাৎ হোসেন, পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম, জেলা পরিষদের সদস্য হাসান সাদেক, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান নাসিমা সাদেক চম্পা, দফতর সম্পাদক মফিজুর রহমান, উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক বিশ্বাস শহিদুজ্জামান, খন্দকার শরিফুল ইসলাম, ছাত্রলীগ নেতা খন্দকার আজিজুর রহমান, সবুজ হোসেন প্রমুখ।

পৃথক কর্মসূচি পালন প্রসঙ্গে উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক বিশ্বাস শহিদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ‘অতীতে দলীয়ভাবে বিভিন্ন জাতীয় দিবসগুলো পালন করা হয়নি। এজন্য আমরা পূর্ব প্রস্তুতি নিয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত স্থানীয় এমপি ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রীকে প্রধান অতিথি রেখে এ আয়োজন করি। এতে আমরা কাউকে আসতে মানাও করিনি। ফলে কোনো ধরণের প্রশ্ন তোলা ঠিক হবে না’।

এ বিষয়ে একাধিক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা বাংলানিউজকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে জনগণ নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে ইসমাত আরা সাদেককে নির্বাচিত করেছেন। আর প্রধানমন্ত্রী তাকে মন্ত্রিসভায় ঠাঁইও দিয়েছেন। কিন্তু নির্বাচনের পর থেকে আওয়ামী লীগ আর প্রতিমন্ত্রী যেন আলাদা ধারার দু’টি দল। এদিক থাকলে ওদিকে রাগ, আর ওদিকে গেলে এদিকে রাগ! আমরা এখন যাবো কোথায়?’

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৭
জিপি/এইচএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।