ঢাকা, শুক্রবার, ১২ পৌষ ১৪৩১, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অন্যান্য দল

‘জনগণকে যারা ভয় পায়, তারাই ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে’

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৮
‘জনগণকে যারা ভয় পায়, তারাই ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে’

ঢাকা: গণফোরাম সভাপতি, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার আহ্বায়ক ও সদ্যগঠিত ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য’র শীর্ষনেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, অতীতে জনগণের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারেনি। ভবিষ্যতেও পারবে না। 

শনিবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সম্প্রতি বিভিন্ন দাবি আদায়ে বিকল্প ধারার সভাপতি ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্ট ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সমন্বয়ে ‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য’র আত্মপ্রকাশ ঘটে।

এ জোটে এতোদিন আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির উপস্থিতি দেখা না গেলেও শনিবার ঐক্য প্রক্রিয়ার সমাবেশে স্থায়ী কমিটির বেশ ক’জন সদস্যসহ শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে যোগ দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এই জোটের অংশ ঐক্য প্রক্রিয়ার সমাবেশটিতে ড. কামাল বলেন, কেউ কেউ আমাদের এ প্রচেষ্টার মধ্যে ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন। আমরা প্রকাশ্য সভা করছি। কোনো গোপন বৈঠক করছি না। যারা জনগণের শক্তিকে ভয় পায়, তারা জনগণের সংগঠিত হওয়ার প্রচেষ্টাকে ষড়যন্ত্র বলে জনগণকেই অপমান করছে। বঙ্গবন্ধু আমাকে স্বাধীন দেশের সংবিধান রচনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। এটাই আমার সবচেয়ে বড় পাওনা। ব্যক্তিগতভাবে আমার আর কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই।  

দেশে উন্নয়নের নামে অবাধে লুটপাট হচ্ছে অভিযোগ করে ড. কামাল বলেন, ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা লুণ্ঠন হচ্ছে। মেগা প্রকল্পের নামে জনগণের টাকা অপচয় করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে টাকা রাখাও নিরাপদ নয়। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধনীর সংখ্যা বাড়ার যে প্রবণতা তাতে বাংলাদেশের নাম সবার আগে। এটা আমাদের জন্য লজ্জার। এখানে ধনী আরো ধনী হচ্ছে, গরিব আরও গরিব হচ্ছে, মধ্যবিত্তরা টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছে।

তিনি বলেন, বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক প্রতিনিয়ত খারাপ হচ্ছে। তাই জনশক্তি রপ্তানিতে ধস নেমেছে। প্রবাসীরাও দেশে বিনিয়োগে ভরসা পাচ্ছেন না। অন্যদিকে ধনীরা দেশের সম্পদ লুট করে বিভিন্ন দেশে ‘সেকেন্ড হোম; গড়ছে।

‘বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য’র এ নেতা বলেন, আমরা জনগণের ভোটাধিকারসহ মৌলিক অধিকার, মানবাধিকার ও সাংবিধানিক অধিকারসমূহ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে কার্যকর গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও আইনের নিরপেক্ষ প্রয়োগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে যাচ্ছি। জনগণ তাতে সাড়া দিয়েছে। মৌলিক বিষয়ে মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এখন সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোকে ঐক্যবদ্ধ করার সময় এসেছে। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের প্রচেষ্টা সফল হবে।  

তিনি ঐক্যের নেতাদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা নিজ নিজ এলাকায় ফিরে গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলুন, মুক্তির বার্তা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ান। মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করুন।

সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন যুক্তফ্রন্ট চেয়ারম্যান ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ড. আব্দুল মঈন খান, জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব, নাগরিক ঐক্যর আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিকল্প ধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আব্দুল মান্নান, গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু, গণসংহতি আন্দোলনের আহ্বায়ক জোনায়েদ সাকি, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন প্রমুখ।  

জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সদস্য সচিব আবম মোস্তফা আমিনের পরিচালনায় সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব নূর হোসাইন কাসেমী, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫১ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৮
এমএইচ/এজেড/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।