বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন খালেদার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বিএনপির এ এমপি বলেছেন, আমি সংসদ নেতার কাছে আহবান জানাবো, আপনি একবার এসে দেখে যান, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী (খালেদা জিয়া) কী অবস্থায় আছেন। আমি নিশ্চিত যে আপনার ভেতরে মানবিকবোধ জাগ্রত হবে।
বিএসএমএমইউতে কারাহেফাজতে চিকিৎসাধীন দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বুধবার (২ অক্টোবর) বিকেলে সেখানে যান সিরাজসহ বিএনপির চার এমপি। অন্য তিন এমপি হলেন- মোশাররফ হোসেন, জাহিদুর রহমান জাহিদ ও রুমিন ফারহানা
সিরাজ বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) কোনো সাহায্য ছাড়া খেতে পারছেন না, হাঁটতে পারছেন না। এখানে তার কোনো চিকিৎসা হচ্ছে না। অবিলম্বে বিশেষায়িত হাসপাতালে তার চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া ম্যাডামের মুক্তি হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি আবার বলছি সংসদের নেতা হিসেবে আপনার কাছে আমার সবিনয় অনুরোধ, আপনি ম্যাডামের জামিনের ব্যবস্থা করুন।
জামিনের বিষয়টা আদালতের, আপনারা মানবিক বিষয় হিসেবে কেন দেখছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে সিরাজ বলেন, এটা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ছাড়া কী হবে? আজকে হাইকোর্ট-সুপ্রিমকোর্ট বিব্রত বোধ করেন।
মুক্তির বিষয়ে খালেদা জিয়া কী বলেছেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ম্যাডাম অবশ্যই মুক্তি চান। তিনি অপরাধ করেননি। তবু বন্দি আছেন। অবশ্যই মুক্তি চান। চিকিৎসার ব্যাপারে তার বক্তব্য, তিনি বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের চিকিৎসা পাচ্ছেন না। সেখানে বিদেশে চিকিৎসার কথা আসছে কেন? তিনি মুক্তির পরে সিদ্ধান্ত নেবেন দেশে নাকি বিদেশে চিকিৎসা নেবেন। আগেতো মুক্তি দরকার। তিনিতো সহসা বিদেশে চিকিৎসা নিতে চান না। এর আগেও বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের নাম বলা হয়েছে। সেই নিজস্ব ডাক্তারের চিকিৎসা নিতেও দেওয়া হয়নি। বিদেশে যদি যাওয়া লাগে যাবেন, সেটা ওনার নিজের সিদ্ধান্ত-পরিবারের সিদ্ধান্ত। সেটাতো আমরা বলতে পারি না।
এসময় রুমিন ফারহানা বলেন, ম্যাডাম বলেছেন জামিন আমার হক। দেশের আইন অনুযায়ী আমি জামিন লাভের যোগ্য। আমিতো কোনো অপরাধ করিনি। সুতরাং এখানে প্যারোলের প্রশ্ন কেন আসবে?
তিনি বলেন, প্যারোলের কোনো কথাই হয়নি। উনি কোনো অপরাধ করেননি। যে টাকার কথা (দুর্নীতি মামলায়) বলা হয়েছে সে টাকা বেড়ে ৬ কোটি হয়েছে।
রুমিন বলেন, আমি দীর্ঘ সময় আদালতে কাজ করছি। এ ধরনের মামলায় একটি আবেদনে জামিন হয়ে যায়। সেখানে আজকে ১৮ মাসের ওপরে এরকম শারীরিক অবস্থায় তিনি কারাগারে আছেন। তাকে পরিকল্পিতভাবে আটকে রাখা হয়েছে। আজকে তার এই শারীরিক অবস্থার জন্য সরকার দায়ী। তাকে কোনো রকমের সুচিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে না। তার অবস্থা যেটা হয়েছে, তিনি কোনো কাজ করতে পারেন না। সেজন্য সম্পূর্ণরূপে সরকার দায়ী।
এর আগে বিকেল ৩টার দিকে বিএনপি দলীয় এ চার এমপি খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হাসপাতালে ঢোকেন। তারা ৪টার কিছু আগে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে আসেন।
হাসপাতালের বাইরে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও ছাত্রদলের নবনির্বাচিত সভাপতি ফজলুল রহমান খোকন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০২, ২০১৯
এমএইচ/এইচএ/
** খালেদার সঙ্গে দেখা করতে গেলেন চার এমপি