তিনি বলেছেন, সরকারের কূটকৌশলে আজ দেশনেত্রী খালেদা জিয়া জেলে আর তারেক রহমানের মতো নেতা বিদেশে। শারীরিক অবস্থার (অসুস্থতা) কারণে উনি দেশে আসতে পারছেন না।
বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নীচতলায় দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৫তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যুবদল আয়োজিত দোয়া মাহফিলে মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন।
বিএনপির নেতৃত্ব নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপির নেতৃত্বশূন্য হয়ে যায়নি। সেখান থেকেই তারেক রহমান সাহেব আমাদের দল পরিচালনা করছেন। এটা নিয়ে আবার আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা মাঝে মাঝে লম্ফঝম্ফ করে ওঠেন। বলে ফেলেন- সবকিছু তারেক রহমানের নির্দেশে হচ্ছে।
‘হ্যাঁ, ভাই তারেক রহমান সাহেব তো আমার দলের ভাইস চেয়ারম্যান, যা কিছু হয়, মিছিল- মিটিং আন্দোলন সবকিছু-ই তার কথা মতোই তো হবে। আপনাদের কথা মতো করবো নাকি?,’ প্রশ্ন করেন তিনি।
খালেদা জিয়ার অসুস্থতার কথা উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আজকে দেশের অবস্থা এমন হয়েছে যে, আমাদের নেত্রী কোন অবস্থায় রয়েছেন, সেটাও আমরা জানতে পারছি না। কিছুদিন পরপর একটা গৃহপালিত মেডিকেল বোর্ড গঠিত হয়। সেই বোর্ড কি বলে তা আমরা বুঝতে পারি না। যা বলা হয়, তা অত্যন্ত ভীতিকর। তারা (সরকার) কি দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে জেলের ভেতরে রেখে মেরে ফেলতে চান?
‘যুবদলের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনুন’
যুবদলের উপস্থিত নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা কী ভুলে গেছেন নব্বইয়ের আগে এই যুবদল নেতৃত্ব দিয়ে স্বৈরাচার এরশাদকে পরাজিত করেছিল। আজকে তারেক রহমানের জন্মবার্ষিকীতে আমি আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যুবদলের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনুন, এই দেশকে স্বাধীন-স্বার্বভৌম থাকতে সাহায্য করুন। আমি বিশ্বাস করি যুবদল সেটা পারবে। আমাদের বয়স হয়ে গেছে তবুও বলছি যদি তেমন কিছু করতে পারেন আমাদের পাশে পাবেন।
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আজকে এই দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে অনেকটাই নীরবে আমরা আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মবার্ষিকী পালন করছি।
‘কিন্তু সবকিছু যদি নীরবে আমরা অপেক্ষা করি তাহলে আমাদের দায়িত্বগুলো অনাধিকাল পর্যন্ত এভাবে নীরবেই পালন করবো। জন্মদিন বলতে যে উৎসাহ বোঝায় সেভাবে আমরা কখনই কি পালন করতে পারবো না। ’
তিনি বলেন, আমরা আছি একটি দ্বন্দ্বের মধ্যে। নেত্রীর মুক্তি প্যারোলে নাকি জামিনে! কিন্তু নেত্রীর মুক্তি যে রাজপথে হয় কেন জানি আমরা এ কথাগুলো বিবেচনায় নিচ্ছি না। কি কারণে যেন মুক্তির জন্য দোয়া মাহফিল, মানববন্ধন ও প্যারোল এবং জামিন নিয়ে বারবার আলোচনা করছি। মনে হয় গণতন্ত্রের নেত্রী খালেদা জিয়া আমাদের কাছে এই ধরনের আচরণ প্রাপ্য নয়।
‘আমরা যদি খালেদা জিয়ার জন্য আন্দোলন করতে গিয়ে লাখো লোক কারাগারে যাই সেটি হবে তার প্রতি যথার্থ সম্মান প্রদর্শন করা। আমরা যদি রাজপথে গুলি খেয়ে মারাও যাই সেটি হবে গণতন্ত্রের নেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি মনোবল প্রদর্শন করা। ’
জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরবের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় দোয়া মাহফিলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৯
এমএইচ/এমএ