দলের নেতারা বলেন, করোনা সঙ্কটেও সরকার ঘোষিত বাজেটে গণমানুষের স্বার্থ রক্ষিত হয়েছে খুবই কম। তথাপি বাজেট বাস্তবায়নে সর্বস্তরে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে বরাদ্দকৃত অর্থ হরিলুট, দুর্নীতি, অপচয় রোধ করতে না পারলে কাঙ্খিত সুফল পাওয়া যাবে না।
বৃহস্পতিবার (১১ জুন) সরকার ঘোষিত বাজেটের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এসব কথা বলেন।
তারা বলেন, করোনা ভাইরাস মহামারিতে বর্তমানে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা অস্বাভাবিক হারে হ্রাস পেয়েছে। ফলে তাদের ব্যয় এখন খুবই সীমিত। ফলশ্রুতিতে সরকারের রাজস্ব হ্রাস পেয়েছে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্য হ্রাস করার দাবি করা হলেও সরকার তা আমলে নেয়নি।
তারা আরও বলেন, লুটপাটের ফলে ব্যাংকগুলোর অবস্থা এখন খুবই খারাপ, এর মধ্যে সরকারকে এতো বিপুল পরিমাণ লোন দেওয়া কঠিন হয়ে যেতে পারে। করোনায় জরুরি অবস্থা মোকাবিলা করার জন্য বিশেষ বরাদ্দ যেন সঠিক খাতে, সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয় তার দিকে নজর রাখতে হবে। তা না হলে এ বরাদ্দ দুর্নীতিবাজ আর লুটেরাদের হাতে চলে যাবে। পাশাপাশি চাল, আটা, আলু, পেঁয়াজ, রসুনের স্থানীয় পর্যায়ে সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে আয়কর কমানো, আমদানি করা চিনি ও রসুনের অগ্রিম আয়কর কমানো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য হ্রাস পাবে। ফলে এর সুফল ভোগ করতে পারবে জনগণ।
নেতৃদ্বয় আরও বলেন, শতভাগ রপ্তানিমুখী গার্মেন্টস ও টেক্সটাইল শিল্পকে প্রণোদনা দেওয়ার লক্ষ্যে আগামী অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে কতিপয় পণ্য আমদানিতে রেয়াতি সুবিধার প্রস্তাব করা হয়েছে। এর ফলে পোশাক শিল্পগুলোর ওপর চাপ কমবে, এই সুবিধার কারণে মালিকরা শ্রমিক ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবে বলে আশা করি। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের জন্য বরাদ্দ থেকে প্রতিয়মান হচ্ছে সরকার এ খাতকে গুরুত্ব দিচ্ছে। আমরা প্রত্যাশা করি এ খাতে দুর্নীতি বন্ধে সরকার কঠোর হবে ও স্বাস্থ্য খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হবে। অন্যথায় এ বাজেট জনগণের কোন কল্যাণ করতে পারবে না।
নেতৃদ্বয় বলেন, বরাবরের মতো নতুন অর্থবছরের বাজেটে অপ্রদর্শিত টাকা বৈধ করার সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত সঠিক নয়। এর মাধ্যমে আসলে লুটেরা ও দুর্নীতিবাজদের স্বার্থই বার বার রক্ষা করা হচ্ছে। ফলে দুর্নীতিবাজরা উৎসাহিত হয়। সরকারের উচিত এ প্রস্তাব বাতিল করা। একই সঙ্গে সরকারের কৃষিখাতকে আরও বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি। কৃষককে বিনা সুদে অথবা নামমাত্র সুদে ঋণ দেওয়া উচিত। কারণ করোনা উত্তর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিপর্যয় রোধে অবশ্যই গ্রামীণ অর্থনীতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে স্বক্ষম হবে। মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ওপর শুল্ক বসানোর প্রস্তাব বাতিল করা উচিত।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৩৫ জুন ১১, ২০২০
এমএইচ/আরআইএস/