ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

সরকার বিরোধী দল নিশ্চিহ্ন করার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে: রিজভী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২০
সরকার বিরোধী দল নিশ্চিহ্ন করার কর্মসূচি গ্রহণ করেছে: রিজভী এক মানববন্ধনে একথা বলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি: শাকিল আহমেদ

ঢাকা: সরকার বিরোধী দল ও বিরোধী মত নিশ্চিহ্ন করার জন্য বিভিন্ন অমানবিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। এগুলোর মধ্যে গুম, নিরুদ্দেশ করে দেওয়া, অদৃশ্য করে দেওয়া, বিচারবহির্ভূত হত্যা অন্যতম।

শনিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে একথা বলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি'র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক একেএম ওয়াহিদুজ্জামানকে চাকুরিচ্যুত করার প্রতিবাদে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে ফিচার অফ বাংলাদেশ।

মানববন্ধনে সরকারকে উদ্দেশ্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আপনি মনে করছেন আপনার অনেক ক্ষমতা। ধরে নিয়ে যাবেন, গুম করে দেবেন। কিন্তু কখন যে আপনার সিংহাসন চোরাবালির মধ্যে ডুবে যাবে আপনি সেটা টেরই পাবেন না।

তিনি বলেন, সরকার বিরোধী দল, বিরোধী মত নিশ্চিহ্ন করার জন্য অমানবিক কর্মসূচি এতদিন ধরে গ্রহণ করেছেন। সেটা কি? সেটা গুম, সেটা নিরুদ্দেশ করে দেওয়া, সেটা অদৃশ্য করে দেওয়া, বিচারবহির্ভূত হত্যা। এটাতেও তারা শান্তি পাচ্ছেন না। তাহলে কী করতে হবে? ওরা (বিরোধী মত) যাতে না খেয়ে থাকে, ওরা যেনো ক্ষুধার্ত থাকে, ওরা যেনো অনাহারে থাকে তাই তারা যে কর্মকাণ্ড করে সেখান থেকে তাদের সরিয়ে দিতে হবে।

রিজভী বলেন, আজ দুই জন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। কেনো করা হয়েছে? তারা কি কোনো অন্যায় করেছে? কোনো দুর্নীতি করেছে? বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিচ্যুত করার যে আইন আছে সেই আইনের মধ্যে কি তারা পড়েছে? অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানকে কেনো চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তা আপনারা জানেন। সে জিয়াউর রহমানের নিয়ে একটা প্রবন্ধ লিখেছেন। এইটা হচ্ছে অপরাধ। আর একেএম ওয়াহিদুজ্জামান রাজনীতির করুণ দশা নিয়ে ফেসবুকে বিভিন্ন মন্তব্য করতেন। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে প্রথমে মামলা করা হলো, চাকরিচ্যুত করা হলো ডা. মোর্শেদকে। ওয়াহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা চলছে, মামলা নিষ্পত্তি হয়নি, তার আগেই চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি সরকারের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আপনি যদি বলেন যারা ভিন্নমতে বিশ্বাসী, যারা বিরোধী দলের বিশ্বাসী, তোমাদের খাওয়ার অধিকার নাই, তোমাদের তৃষ্ণা পেলে পানি খাওয়ার অধিকার নেই, তোমরা ক্ষুধায়- তৃষ্ণায় মরে যাও। আপনি এই কর্মসূচি দেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, ভাইস-চ্যান্সেলর এতই পা চাটা হয়েছেন যে তিনি আইন কানুনের পরোয়া করেননি। বিশ্ববিদ্যালয় কোনো আইনেই মোর্শেদ হাসান খান ও ওয়াহিদুজ্জামানকে চাকরিচ্যুত করা যায় না। চাকরিচ্যুত করা যায় একমাত্র শেখ হাসিনার চোখ-রাঙানিতে, শেখ হাসিনার ধমকানিতে, দেশ শেখ হাসিনার হুমকিতে। শেখ হাসিনার হুমকিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মোর্শেদ হাসান খান ও একেএম ওয়াহিদুজ্জামানকে চাকুরিচ্যুত করেছে। এখানে আইনের দরকার পড়েনি, এখানে বিশ্ববিদ্যালয় বিধিবিধানের দরকার পড়েনি, এখানে কোনো অন্যায় ন্যায্যতার দরকার পড়েনি। দরকার পড়েছে একজন ব্যক্তি নির্দেশ। সেই হুকুম তামিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর।

বিএনপি এ নেতা বলেন, আমরা এর আগের ভাইস চ্যান্সেলর দেখেছি। বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের আন্দোলন হচ্ছে, তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুমতি ছাড়া আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রবেশ করতে পারেনি। এখন আমরা কী দেখছি? অবলীলাক্রমে তারা ঢুকে যায়। যারা ভিন্নমতালম্বী, যারা বিএনপিকে সমর্থন করে অথবা অন্য কোনো মত পোষণ করে। ভাইস চ্যান্সেলর কোনো কিছু তোয়াক্কা না করে তাদের চাকরিচ্যুত করছে।

মানববন্ধন থেকে এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক একেএম ওয়াহিদুজ্জামানকে চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিও জানান বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব। মানবন্ধনে এসময় বিভিন্ন সংগঠনের নেতা কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৭ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২০
এইচএমএস/এমএমএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।