ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

খালেদার সিটি স্ক্যান রিপোর্টের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২১
খালেদার সিটি স্ক্যান রিপোর্টের পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত

ঢাকা: কোভিডের ক্ষেত্রে কেউ বলতে পারবে না যে রোগীর অবস্থা কখন কেমন হবে। এটা খুব দ্রুত পরিবর্তনশীল একটা রোগ।

সেজন্য ওনার দ্রুত সিটি স্ক্যান করে ফেলবো। সিটি স্ক্যান দেখে আমরা যদি মনে করি যে বাসায় রেখে চিকিৎসা করলে ওনার জন্য ভালো হবে, তাহলে বাসায় রাখবো। আর যদি মনে করি কয়েকদিনের জন্য হাসপাতালে অবজারভেশনে রাখা দরকার, সেটাও করবো। সিটি স্ক্যানের রিপোর্টের ওপর সব নির্ভর করছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) বিকেলে গুলশানে খালেদা জিয়ার বাসায় গিয়ে তাকে দেখে বের হয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে একথা বলেন খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রফেসর এফএম সিদ্দিকী।

ডা. সিদ্দিকী বলেন, সেদিন আমরা ম্যাডামকে (খালেদা জিয়া) দেখে গিয়েছিলাম। পরে শনিবারের রিপোর্টের সঙ্গে পরশুদিনের রিপোর্ট ম্যাচ করিয়েছি। পালস, ব্লাড প্রেসার, অক্সিজেন স্যাচুরেশন সব ঠিক আছে। গত তিনদিন আমরা একটা নতুন পরীক্ষা সংযোজন করেছিলাম, সেটা হলো ম্যাডাম যখন অক্সিজেন স্যাচুরেশন দেখতেন সেটা বসা অবস্থায় রেস্টে থাকাকালে দেখতেন। আমরা গত তিনদিন রেস্টিং স্যাচুরেশন দেখি, আবার একটু ফিজিওথেরাপি করে বা হেঁটে তারপরে আবার দেখি স্যাচুরেশন কত থাকে।  

‘কারণ অনেক কোভিড রোগীর রেস্টিং অবস্থায় দেখা যায় স্যাচুরেশন ঠিক আছে, কিন্তু একটু এক্সারসাইজ করলে বা একটু হাঁটাহাঁটি করলে যদি স্যাচুরেশন পড়ে যায়, তাহলে এটা একটা দিকনির্দেশনা দেয় যে সামনের সপ্তাহে হয়তো ফল করতে পারে। সেজন্য আমরা এই টেস্টগুলো করে দেখেছি, ওনার রেস্ট এবং অ্যাকটিভিটির পর স্যাচুরেশন ভালো থাকে। ’

তিনি বলেন, ওনার নতুন একটুখানি যে উপসর্গটা আমরা দেখেছি সেটা হলো কাল রাতে ওনার ১০০’র মতো জ্বর উঠেছিল। সকালেও ১০০’র মতো ছিল কিছুক্ষণ। এইমাত্র আমরা ওনার চেস্ট টেস্ট করেছি। যেহেতু ওনার চেস্ট ক্লিয়ার আছে, তাই আমরা মনে করছি উনি ভালো স্ট্যাবল আছেন।

‘আমাদের মনে রাখতে হবে আজ (বৃহস্পতিবার) হলো সপ্তম দিন, কোভিডের পরিভাষায় এখন দ্বিতীয় সপ্তাহে এন্ট্রি হচ্ছে। আমি আগেও বলেছি কোভিডে প্রথম সপ্তাহ এবং দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে একটা পার্থক্য আছে। কোভিডের যত জটিলতা সেগুলো দ্বিতীয় সপ্তাহে হয়। সেজন্য আমরা আরও একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে চাই। ওনার সবগুলো টেস্ট করা হয়েছে। তবে সিটি স্ক্যান করানো হয়নি। সেজন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, কোনো এক সময় সিটি স্ক্যান করিয়ে ফেলবো। এছাড়া অন্য সব বায়োকেমিকেল ব্যারোমিটার, ফিজিক্যাল স্ট্যাটাস, অক্সিজেন স্যাচুরেশনসহ অন্য সবগুলো ভালো আছে। ’

তিনি বলেন, ওনার ডায়েবেটিস  ও রিউমাটেড আর্থারাইটিস আছে। ব্লাড সুগার এখন খুব ভালো কন্ট্রোলে আছে। আমরা প্রতিদিন তিনবার ব্লাড সুগার মনিটর করছি। সে অনুযায়ী ট্যাবলেট অথবা ইনসুলিন দিয়ে ব্লাড সুগার কন্ট্রোল করছি।

কোভিড সংক্রান্ত বিষয়ে ওনার মানসিক অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. সিদ্দিকী বলেন, কোভিড সংক্রান্ত মানসিক অবস্থা হলো, সেদিনও আমি বলেছি। উনি বলেছেন যে ‘আমি সেরকম কিছুতো বুঝতে পারছি না। উনি বলেছেন টেস্ট করা না হলে উনি বুঝতেই পারতেন না যে তার কোভিড আক্রান্ত। তাতে বোঝা যায় যে উনি মানসিকভাবে বেশ স্ট্যাবল আছেন। ওনার ফিজিওথেরাপি চলছে। এছাড়া আনুষঙ্গিক যে চিকিৎসাগুলো দরকার সেগুলো চলছে। ম্যাডাম আমাকে একটু আগেও বলেছেন, আপনাকে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে বলবেন যে সবাই যেন আমার জন্য দোয়া করে।

উনার চিকিৎসার ব্যাপারে আগেও বলেছি যে আমরা দেশে এবং দেশের বাইরেও ম্যাডামের পুত্রবধূ আছেন ডা. জোবাইদা রহমান তার সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছি। আপনারা জানেন যে কোভিডের চিকিৎসা এখন একটা প্রোটকল বেজড হয়ে গেছে। মানে এখন একটা স্ট্যান্ডার্ড ট্রিনমেন্ট প্রাকটিস আছে। যেটা পৃথিবীর সব জায়গায় গ্লোবালি ফলো করা হয়। সে অনুযায়ী সবার সঙ্গে সমন্বয় করে চিকিৎসা করছি।

সিটি স্ক্যান কোথায় করানো হবে এর জবাবে তিনি বলেন, আমরা ঠিক করে রেখেছি। তবে যখন করাবো তখন জানতে পারবেন। খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে এটা করে ফেলবো।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২১
এমএইচ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।