ঢাকা: দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, যানজট নিরসন, হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ, খালেদা জিয়া, তারেক রহমান ও দলীয় নেতাকর্মীদের মামলা প্রত্যাহারসহ ২৩ দফা দাবি জানিয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি।

মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম এসব দাবি তুলে ধরেন।

আব্দুস সালাম বলেন, রাজধানীতে ডেঙ্গু মশক নিধনের বছর ব্যাপী পরিকল্পনা, করোনা চিকিৎসায় ঢাকা দক্ষিণের হাসপাতালগুলোতে পর্যাপ্ত আইসিইউ স্থাপন, মহানগরীর হোল্ডিং ট্যাক্স মওকুফ, মাদক, শিশু নির্যাতন ও নারীর সম্ভ্রমহানীর মতো অপরাধের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া, যানজট নিরসনের ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দখলকৃত খেলার মাঠ উন্মুক্তসহ নতুন মাঠের ব্যবস্থা করা, জলাবদ্ধতার নিরসন, বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহার এবং কারাবন্দিদের মুক্তিসহ ২৩ দফা তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, গত ২ আগস্ট ঢাকা মহানগর বিএনপির আহবায়ক কমিটি হয়েছে। দক্ষিণে ২৪টি থানা ও ৭৫টি ওয়ার্ড রয়েছে। নতুনভাবে সংগঠন গড়ে তুলতে ৮টি ভাগে নেতাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ২৫ হাজারের কাছাকাছি তথ্য ফরম নেতাকর্মীদের কাছে বিতরণ করা হয়েছে এবং দু-এক দিনের মধ্যে তথ্য ফরম আমাদের কাছে চলে আসবে। এরপর আমরা প্রত্যেক থানা এবং ওয়ার্ডে কর্মীসভা করবো।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক সংগঠন। গণতান্ত্রিকভাবে আমরা সংগঠন গড়ে তুলতে চাই। যেখানে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে আমরা কাউন্সিল করবো, কাউন্সিলের মাধ্যমে সংগঠন হবে। এ লক্ষ্যে প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানায় যাতে কর্মীসভা করা যায় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি। আমাদের কর্মীসভাগুলো করতে পুলিশ যেন বাধা না দেয় সে ব্যাপারে আমরা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে অনুরোধ করবো। আমরা এ বিষয়টি নিয়ে তার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করছি।

তিনি অভিযোগ করে বলেন,  আমরা কোথাও কোনো সভা করতে পারি না। কেবলমাত্র কেন্দ্রীয় অফিস ও মহানগর এবং এই অঞ্চলে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস সাহেবের বাসার অফিস ছাড়া আর কোথাও আমরা বসতে পারি না। যারা এই সরকারের অধীনে এখনো নির্বাচনের কথা বলেন তাদের বলবো, আগে সরকার অন্তত এগুলো নিশ্চিত করুক। আমাদের অফিসে যাতে হামলা না হয়, আমাদের কর্মীসভাগুলো করতে দেয়, আমাদের সম্মেলনগুলো যাতে করতে দেয়। এসব তারা করতে দেয় না। শুধু আওয়ামী লীগ সভা করে বেড়াবে, তাদের অফিসের সামনে জনসভা করবে, মিছিল করবে আর বিএনপিকে করতে দেবে না- এটা হতে পারে না।

আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু।  

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর দক্ষিণ আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্ল্যাহ নবী, ইউনুস মৃধা, মো. মোহন, আব্দুস সাত্তার, আনম সাইফুল ইসলাম, হারুন উর রশিদ হারুন, তানভীর আহমেদ রবিন, লিটন মাহমুদ, এস কে সেকেন্দার কাদির ও মনির হোসেন প্রমুখ।
 
বিএনপির কেন্দ্রীয় দফতরের দায়িত্বে থাকা সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মহিলা দলের আফরোজা আব্বাস, যুব দলের সাইফুল আলম নিরব, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের মুস্তাফিজুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন, ওলামা দলের শাহ নেছারুল হক, নজরুল ইসলাম তালুকদারসহ সহযোগীসংগঠনের নেতারাও মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন।

গত ২ আগস্ট দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আব্দুস সালামকে আহবায়ক ও যুবদল দক্ষিণের সভাপতি রফিকুল আলম মজনুকে সদস্য সচিব করে ৪৯ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় বিএনপি।

একই সময়ে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমানউল্লাহ আমানকে আহ্বায়ক ও ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হককে সদস্য সচিব করে উত্তরের ৪৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটিও করা হয়।

সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল হাবিবউন নবী খান সোহেলকে সভাপতি ও কাজী আবুল বাশারকে সাধারণ সম্পাদক করে দক্ষিণ এবং এম এ কাইয়ুমকে সভাপতি ও আহসানউল্লাহ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করে ঢাকা উত্তরের কমিটি করা হয়েছিল।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০২১
এমএইচ/আরআইএস