সাভার (ঢাকা): ঢাকা-২০ ধামরাইয়ের বর্তমান সংসদ সদস্য বেনজির আহমেদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সাকুকে জড়িয়ে করা মানববন্ধনের আয়োজকদের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেয় বর্তমান সংসদ বেনজির আহমেদ।
বুধবার (৬ অক্টোবর) দুপুরে উপজেলার থানা স্ট্যান্ডে প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি। এরআগে একটি বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
এসময় মঙ্গেলবার (০৫ অক্টেবার) জাতীয় প্রেসক্লাবে মানববন্ধন আয়োজনকারীদের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ধামরাইয়ের সাবেক সংসদ সদস্য এমএ মালেককে দায়ী করে আগামী তিন দিনের মধ্যে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঢাকা-২০ ধামরাইয়ের সাংসদ বেনজির আহমেদ। অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
এমপি বেনজির আহমেদ বলেন, ধামরাই এলাকাটি ব্যবসাবান্ধব এলাকা। অনেকে ব্যবসা করতে আসেন এখানে। ব্যবসা করতে এসে যদি কেউ অপরাধ করে সেটা যেমন কঠোরভাবে দেখতে হবে একইভাবে ব্যবসায়ীদের যদি কেউ হয়রানি করে সেটাকেও দমন করতে হবে।
ধামরাইয়ে চাঁদাবাজির বিষয়ে তিনি বলেন, ওই কোম্পানির জায়গাকে ঘিরে একটি রাজনৈতিক চক্র সক্রিয় হয়েছে। তারা আমার নাম ভাঙিয়েও চাঁদাবাজি করেছিল। এজন্য ফরমও ছাড়া হয়েছিল। পরে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়।
এতে আকসির নগরের সঙ্গে সংসদ সদস্যের সম্পর্কের বিষয়ে এই নেতা বলেন, আকসির নগর তো আমি ঠিকমতো চিনিও না। তাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক থাকার প্রশ্নও আসে না। এমনকি এক মাস আগে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আমি সে বিষয়েও কিছু বলিনি। কেউ ব্যবসা করতে এলে তাকে নিয়ে মাথাব্যথার কিছু নেই।
তিনি বলেন, সেখানে বিএনপির দুই নেতা সাইদুর, বদুরা এসব করছে। তারা আগে আকসির নগরের দালালি করতো। এখন আবার বিপক্ষে। লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসছিল। কিন্তু সেটা কোথাও দেয়নি। তাদের উদ্দেশ্য ভালো না। সেটা প্রমাণিত।
আকসির নগরের সঙ্গে জামায়াতের সংশ্লিষ্টতার কোনো প্রমাণ পাওয়া গেছে কি না সে বিষয়ে জানতে চাইলে বেনজির আহমেদ বলেন, তেমন কিছু পাওয়া গেলে তো প্রশাসন ব্যবস্থা নিতো। আমি আরো বহু আগে প্রশাসনকে বলেছি অপরাধী যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি বলেন, একটি চক্র সক্রিয় হয়ে কাজগুলো করছে। আমি বলবো তারা যে অপরাধ করেছে সেজন্য তারা ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি দিক। যদি না তা করে আমি ৭২ ঘণ্টা পর আইনি ব্যবস্থা নিতে বাধ্য হবো।
ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কালিপদ বাংলানিউজকে বলেন, আকশির নগর বা কাইজান গ্রুপ তারা নিজেদের জমিতেই সাইনবোর্ড দিয়েছে। তারপর ওরা ঝামেলা শুরু করছে। আকশির নগর নিয়ে যদি কোনো অভিযোগ থাকে এমপি ও আমাদের কাছে অভিযোগ আনার বলছিলাম। যেনো কৃষকের কোনো ক্ষতি না হয়। কিন্তু যারা আগে অভিযোগ করলো তারাই আবার দেখি মিলেও গেলো। এখন সম্ভবত তারা কোম্পানি থেকে টাকা পয়সা পাচ্ছে না তাই এরকম মানববন্ধন করছে।
বিক্ষোভ মিছিল এবং সংবাদ সম্মেলনে পৌরসভার মেয়র গোলাম কবির মোল্লা গতকালের জাতীয় প্রেসক্লাবে সংসদ সদস্য বেনজির আহমেদের নামে মানববন্ধনের কিছু ভিডিও ফুটেজ সাংবাদিকদের দেখান। সেখানে মানববন্ধনে উপস্থিত কিছু ব্যক্তি তাদের সাক্ষাৎকারে ধামরাইয়ের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মালেকের কর্মী হিসেবে পরিচয় দেওয়ার মানববন্ধনটি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সুনাম নষ্ট করার জন্য আয়োজন করা হয়েছে বলে দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সাকু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম সিরাজসহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মঙ্গলবার (০৫ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এমপি বেনজির আহমেদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন সাকুর পদত্যাগ ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করে কুল্লা ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক মানুষ।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২১
এনটি