লালমনিরহাট: লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেতে আবেদন করেছেন।
জানা গেছে, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী জেলা বিএনপির সভাপতি আসাদুল হাবীব দুলুর আর্শিবাদপুষ্ট মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী বিগত ২০১০ সালে ইউপি নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মহিষখোচা ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
আওয়ামী লীগে যোগদান করলেও দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগের কোনো পদ-পদবি তিনি পাননি। তবুও নিজেকে বঙ্গবন্ধুর সৈনিক দাবি করে স্থানীয় সংসদ সদস্য সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের আস্থাভাজন হতে চেষ্টা করেন। দল পরিবর্তন করার কারণে স্থানীয় আওয়ামী পরিবার তাকে পছন্দ না করলেও আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীক পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন তিনি। নৌকার মনোনীত প্রার্থী উল্লেখ করে পোস্টারও ছাপিয়েছেন। আওয়ামী লীগের মনোনায়ন পেতে আবেদন করেছেন তিনি।
বিগত সময় ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব পালনে বয়স্ক ভাতা আত্নসাৎসহ নানান অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি তার মোবাইল নম্বরে মৃত ব্যক্তির বয়স্ক ভাতার টাকা চলে যাওয়া নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে ব্যাপক সমালোচনা মুখে পড়েন তিনি। সমাজকল্যাণমন্ত্রীর কাছের লোক হয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বয়স্ক ভাতা নিজের মোবাইলে নেওয়ায় সংক্ষুব্ধ হন মন্ত্রী নিজেও। এ নিয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ও সমর্থকদের কাছে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী।
তিনি মাত্র ১০ বছরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ দুই দলের ক্ষমতাসীন চেয়ারম্যান হিসেবে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। আঙুল ফুলে কলাগাছে পরিণত হয়েছেন। নিজের গ্রামে করেছেন আলিশান দোতলা বাড়ি। ঘুরে বেড়ান প্রায় ২৮ লাখ টাকা গাড়িতে।
সম্পদ ধরে রাখতে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থী হতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন তিনি। তাই মাত্র ছয় বছর আগের ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের জন্য জোর লবিং করায় সংক্ষুব্ধ স্থানীয় আওয়ামী লীগ।
মহিষখোচা ইউনিয়নের বাসিন্দা উপজেলা যুবলীগের কার্যনির্বাহী সদস্য তমিজার রহমান বলেন, দলের দুর্দিনে কাজ করে মামলা হামলার শিকার হয়েছি। দলের জন্য যাদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছি, তারা নৌকার মনোনয়ন নিয়ে চেয়ারম্যান হয়ে মৃত ব্যক্তির ভাতা আত্নসাৎ করেন। তারা মূলত, দলকে ভালোবাসেন আসে না। দলের সুনাম ক্ষুণ্ন করতে আসেন। এটা দলের শীর্ষ নেতাদের বোঝা উচিত। আমিসহ কয়েকজন ত্যাগী নেতা নৌকা নিয়ে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়েছি। কিন্তু আমাদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। অথচ দলের না হলেও মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরীকে নৌকা প্রতীক দেওয়া হচ্ছে।
মহিষখোচা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, বিএনপি ছেড়ে আওয়ামী লীগের আসার পর থেকে সম্মেলন হয়নি। তাই কোনো পদ পাইনি। তবে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য হয়েছি। কেন্দ্রের খবর ভালো, নৌকা পাবো।
আদিতমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্পাদক রফিকুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, দলের মনোনায়ন পেতে যারা আবেদন করেছেন, তাদের তথ্য কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে মনোনায়ন চূড়ান্ত হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২১
এসআই