ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

বিএনপি অসাম্প্রদায়িক দল: আব্বাস

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২১
বিএনপি অসাম্প্রদায়িক দল: আব্বাস

ঢাকা: বিএনপি উচ্চ পর্যায়ের একটি অসাম্প্রদায়িক দল এবং খালেদা জিয়া অত্যন্ত উচ্চ মানসিকতার একজন নেত্রী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।

শনিবার (১৬ অক্টোবর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত দোয়া মাহফিলে একথা বলেন তিনি।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমার নেত্রী খালেদা জিয়া একদিন রাতে হঠাৎ আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। বললেন, আব্বাস কী করছেন? আমি বললাম, ম্যাডাম ঘুমানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি। তিনি আমাকে বললেন, ঘুমালে তো চলবে না। আপনি কিছু শোনেননি? আমি বললাম, না, ম্যাডাম। তিনি বললেন, ভারতে বাবরি মসজিদ ভাঙা হচ্ছে। আপনি যান আপনার এলাকার মন্দিরগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। তিনি তখন খুব সুন্দরভাবে আমাদের দেশের মুসলমানদের ধৈর্য ধারণ করতে বলেছেন। ’

বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘সরকারকে পরিষ্কার ভাষায় বলতে চাই, এই সমস্ত নোংরামি ছাড়েন। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বহু পন্থা অবলম্বন করেছেন। খুন করেছেন, গুম করেছেন। আমাদের যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও বিএনপির নেতাকর্মীদের দিয়ে জেলখানা ভরে ফেলেছেন। কোর্টে গেলে আমাদের লোক ছাড়া কাউকে দেখা যায় না। দেশে কোনো বিচার ব্যবস্থা নেই। আছে শুধু পুলিশ, আছে শুধু কোর্ট। আর এগুলো দিয়েই সরকার টিকে আছে। ’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আজকে যারা লম্বা লম্বা কথা বলেন তাদের চিনতে গেলে সার্চলাইট দিয়ে খুঁজতে হয় এরা কারা। তাদের নাম কী? বাপের পরিচয় কী? সাহস থাকলে আসেন আমাদের সঙ্গে একটু হাঁটুন। আমরা আপনাদের পাহারা দেব। দেখি আমাদের কতজন ফুল দেয় আর আপনাদের কতজন থুতু দেয়। সেই সাহস আপনাদের হবে না। আপনারা শুধু কাচের ঘরে বন্দি হয়ে লম্বা লম্বা কথা বলবেন আর বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর অত্যাচার করবেন। ’

তিনি বলেন, ‘আমাদের সময় বাংলাদেশে ৫০ হাজার পুলিশ ছিল। এখন বাংলাদেশে ৫ লাখ পুলিশ। এই যে বিশাল পুলিশবাহিনী কাকে পেটানোর জন্য? যদি ডাকাত ধরা না যায়, ব্যাংক লুটেরাদের ধরা না যায়, যদি চোর ধরা না যায়, যদি খুনি ধরা না যায়, যদি পূজামণ্ডপ ভাঙার লোক ধরা না যায় তাহলে এ পুলিশের কাজ কী? বিএনপিকে ঠেঙ্গানো? এটা বোধ হয় বেশিদিন আর চলবে না। কারণ সমস্ত কিছুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ একটা আছে। নিজ থেকেই আপনা-আপনি প্রতিরোধ ব্যবস্থা হয়ে যায়। ’

মির্জা আব্বাস আরও বলেন, ‘আমি এখানে গাড়ি থেকে নামার সময় দেখলাম অনেক পুলিশ। আরে ভাই কেন? এটা কি জঙ্গি অফিস? এটা তো বিএনপি কার্যালয়। স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত একটি দোয়া মাহফিল হবে। এখানেও আপনারা আমাদের বসতে দেবেন না?’

ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক এই মেয়র বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার উন্নতমানের চিকিৎসা দরকার। কিন্তু এই সরকার সেটা তো দেবে না। তিলে তিলে তাকে মেরে ফেলা সরকারের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্যই মাত্র ২ কোটি টাকার একটি মিথ্যা মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। দেশবাসী জানে ট্রাস্টের টাকা ট্রাস্টেই আছে। সেই দুই কোটি টাকা ব্যাংকে এখন ৮ কোটি টাকা হয়ে গেছে। সেই টাকা তিনি নিজেও খাননি ও বিদেশেও পাচার করেননি।  আজকে আপনাদের হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি ধরা পড়ছে। আপনার এক মন্ত্রী বলছেন, চার হাজার কোটি টাকা নাকি কোনো বিষয় না। আর সে জায়গায় মাত্র ২ কোটি টাকার জন্য দেশনেত্রী খালেদা জিয়া জেল খাটবেন, এটা কোনো কথা হতে পারে না। আসল কথা হলো ওনাকে আটকে রাখা, ওনাকে তিলে তিলে হত্যা করা। এটাই হচ্ছে এই সরকারের পরিকল্পনা। ’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ফকরুল ইসলাম ইসলাম রবিনের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে আরও অংশ নেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলী প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৬, ২০২১
এমএইচ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।