ঢাকা: খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর তাকে অবিলম্বে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে তাকে বিদেশে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৬নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় প্রধান খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় আয়োজিত দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখার চক্রান্তে এখন তিনি গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। আমরা সবাই জানি তাকে রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে একটা মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে প্রথমে একটি পরিত্যাক্ত কারাগারে রাখা হয়। তখন তার কোনো চিকিৎসা হয়নি। পরে জনগণের চাপে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তারও পর করোনা শুরু হলে ভয়ে তাকে বাসায় যাওয়ার অনুমতি দেয় সরকার। খালেদা জিয়া বর্তমানে খুবই অসুস্থ অবস্থায় সিসিইউতে আছেন।
তিনি বলেন, আমরা সবাই জানি খালেদা জিয়া প্রথমে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। পরে দীর্ঘ চারমাস জীবন মরণের সঙ্গে যুদ্ধ করে বাসায় ফেরেন। তার কিছুদিন পরই অসুস্থ হলে তাকে এভার কেয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বাসায় ফেরার মাত্র ছয়দিনের মাথায় আবারও তাকে হাসপাতালে আসতে হলো।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ, যা আমি আপনাদের বলে বোঝাতে পারবো না। সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাতে প্রথম তিনি সিসিইউতে নিজের বেড থেকে চেয়ারে বসেছেন। তিনি অত্যন্ত দুর্বল অবস্থায় আছেন। আমরা জানি দেশনেত্রীকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার যে ভয়াবহ চক্রান্ত চলছে, তারই অংশ হিসেবে তাকে এখন পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত শুরু হয়েছে। আমরা আল্লাহর কাছে আজকে এই প্রার্থনা করবো, তিনি যেন খালেদা জিয়াকে সুস্থ করে দেন। শুধু বিএনপির জন্য নয় দেশের ১৬ কোটি মানুষের জন্য তাকে আমাদের খুব প্রয়োজন।
খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চেয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আসুন আমরা তার জন্য দোয়া করি। আজকে তার জন্য দোয়া করতে আমরা একটা খোলা জায়গা পাই না। আমরা সভা-সমাবেশ করতে জায়গা পাই না। কারণ এই ফ্যাসিস্ট সরকার জানে যে খালেদা জিয়ার মুক্তির প্রশ্নে যদি আমরা বাইরে বের হই তাহলে সারা দেশ উজ্জীবিত এবং অনুপ্রাণিত হবে।
তিনি বলেন, আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, চিকিৎসকরা বলেছেন, তার অনেক ধরনের অসুখের চিকিৎসা প্রয়োজন। এগুলোর সুষ্ঠু চিকিৎসার জন্য এ দেশে তেমন কোনো হাসপাতাল নেই, যারা মাল্টিডিসিপ্লিনারি রোগের চিকিৎসা করতে পারে। এজন্য বার বার তার পরিবার থেকে আবেদন করা হয়েছে। অন্তত মানবতার স্বার্থে তাকে বাইরে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হোক। আমরা এ বিষয়ে বার বার কথা বলেছি, কিন্তু তাকে সেই চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, আজকে যখন খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ তখন পত্রিকায় দেখছি তার পরিবার থেকে আবারও বিদেশে নেওয়ার আবেদন করা হয়েছে। আমরা সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি অবিলম্বে চিকিৎসার জন্য তাকে বাইরে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হোক। কারণ এই নেত্রী গণতন্ত্রের নেত্রী, তার যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে সব দায় এই সরকারকেই বহন করতে হবে। আমরা বলতে চাই, আপনাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হোক, মানবতার স্বার্থে তাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ করে দেন।
দোয়া মাহফিলে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, আব্দুল আওয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, ডা. সিরাজউদ্দীন আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহানগর দক্ষিণের বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, সদস্য সচিব আমিনুল হক, দক্ষিণের সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, সাবেক এমপি জহির উদ্দিন স্বপন, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল, সহ-দপ্তর সম্পাদক বেলাল আহমেদ, সহ-প্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম আলীম, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২১
এমএইচ/এমএমজেড