ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে বিদেশে পাঠাতে সরকারের প্রতি আবারও আহ্বান জানিয়ে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকারে কাছে পরিষ্কার করে বলতে চাই আর বিলম্ব করবেন না। অবিলম্বে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে বিদেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করুন।
শনিবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসার দাবিতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের গণতন্ত্রের নেত্রী খালেদা জিয়াকে আজকে বন্দী করে রেখেছেন। কারণ আপনারা জানেন, তাকে যদি অসুস্থ অবস্থায় বিদেশে না পাঠান, তিনি যদি জীবন থেকে চলে যান তাহলে আপনার পথের কাটা দূর হবে। বন্ধুগণ তা হয় না। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে তারা ভেবেছিল বোধ হয় বিএনপি শেষ গেল, তা হয়নি। দেশনেত্রী খালেদা জিয়া সঠিকভাবে নির্বাচন করেছেন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবকে। তার নেতৃত্বেই বিএনপির পতাকা আবার ওপরে ধরে রাখবো।
তিনি বলেন, দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক। আমাদের স্বার্বভৌমত্বের প্রতীক, আমাদের গণতন্ত্রের প্রতীক। তিনি আছেন বলেই এখনও গণতন্ত্রের সংগ্রাম চলছে। তিনি আছেন বলেই আমাদের শত্রুরা সীমান্তে ভয় পায়। এখনও আওয়ামী লীগ যে আছে, ওই দেশনেত্রী বেঁচে আছেন বলেই, তা না হলে আওয়ামী লীগ থাকতো না।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, যে কথা আগেও বলেছি, এই দেশের গণতন্ত্র যদি চালু রাখতে চাই, এই দেশে সত্যিকার অর্থে যদি সুশাসন চালু রাখতে হয়, স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্ব চালু রাখতে হয়, আমাদের অধিকারগুলো যদি বহাল রাখতে চাই তাহলে দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে আবার রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনতে হবে। গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করতে হবে। আমাদের নেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
বাংলাদেশের সকল বিজয় অর্জন হয়েছে ছাত্রদের নেতৃত্বে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ছাত্ররা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। অনেকে গুম হয়েছে, অনেক খুন হয়েছে, এখনও অনেকে কারাগারে আছে। এদেরকে মুক্ত করতে হলে, অন্যায় নির্যাতনের প্রতিবাদ করতে হলে আজকে যুবক-তরুণদের জেগে উঠতে হবে। বাংলাদেশের সব বিজয় অর্জন হয়েছে ছাত্রদের নেতৃত্বে। ১৯৭০ সালে ছাত্ররাই নেতৃত্ব দিয়েছিল। ’৭১সালে স্বাধীনতাযুদ্ধ হয়েছিল ছাত্রদের নেতৃত্বে। ’৬৯ এ আইউব খানকে পরাজিত করেছিল ছাত্রদের নেতৃত্বে। আজকে আবার সেই ছাত্রদের জেগে উঠতে হবে। বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের জন্য, স্বাধীনতা স্বার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।
এ সময় তিনি ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের কাছে প্রশ্ন করেন আমরা কি সবাই আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত আছি? আমরা কি সব রকম ত্যাগ স্বীকার করতে প্রস্তুত আছি? ছাত্র নেতারা দুই হাত তুলে প্রস্তুত আছি জানালে মির্জা ফখরুল বলেন, ইনশাল্লাহ আমরা শিগগিরই দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে সক্ষম হবো। তাকে বিদেশে পাঠাতে সক্ষম হবো।
ছাত্র দলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামলের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সাবেক ছাত্র নেতা ড. আসাদুজ্জামান রিপন, আমান উল্লাহ আমান, ফজলুল হক মিলন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নাজিম উদ্দিন আলম, এবিএম মোশারফ হোসেন, সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, আমিরুল ইসলাম আলীম, আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, আকরামুল হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, ছাত্রদলের সিনিয়র সহ সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন, যুগ্ম সম্পাদক আমিনুর রহমান আমিন, তানজিল হাসান, সহ-সাধারণ সম্পাদক সুলতানা জেসমিন জুঁই, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, ঢাবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব আমান উল্লাহ আমান প্রমুখ।
এর আগে সকাল ৯টা থেকে ঢাকা মহানগরের বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র দলের সহস্রাধিক নেতাকর্মী প্রেসক্লাবের সামনের সড়কে অবস্থান নিয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০২১
এমএইচ/এএটি