ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

রাজনীতি

অবৈধ অস্ত্র ছেড়ে শান্তির পথে ফিরে আসার আহ্বান হানিফের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২৬ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২২
অবৈধ অস্ত্র ছেড়ে শান্তির পথে ফিরে আসার আহ্বান হানিফের

রাঙামাটি: আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, অবৈধ অস্ত্র ছেড়ে শান্তির পথে ফিরে আসুন।  

রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের আয়োজনে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গণে সোমবার (২১ মার্চ) দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের এ নেতা আরও বলেন, চাঁদাবাজি করে আদিপত্য বিস্তার করছেন; এটা কোনো জীবন হতে পারে না। আওয়ামী লীগ সরকার শান্তিচুক্তি করেছিল পাহাড়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করার জন্য।  

তিনি এসময় চলতি বছরের ২৪ মে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেন এবং এর মধ্যে মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটিগুলো ভেঙে নতুন কমিটি করার নির্দেশনা দেন।

হানিফ বলেন, জিয়াউর রহমানের হাতেই পাহাড়ে অশান্তির বীজ বপন হয়েছিল। তার হাত ধরে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি হয়, এ পাহাড় এলাকায় অশান্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়। তারই ধারাবাহিকতায় তারা (বিএনপি) এখনো চক্রান্ত করে যাচ্ছে, এখনো সক্রিয় আছে। অস্ত্রের মাধ্যমে কখনো শান্তি আসে না। যারা এখনো বিপথে রয়েছেন, তারা শান্তির পথে আসুন। প্রধানমন্ত্রীর শান্তিচুক্তির সুফল ঘরে তুলুন।

আমরা যখন ২০০৯ সালে যাত্রা শুরু করেছিলাম, ফরেন রেমিট্যান্স ছিল মাত্র ৬ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। আমাদের এখান থেকে অদক্ষ শ্রমিক যাওয়ার কারণে অন্য দেশের শ্রমিকদের থেকে অর্ধেক বেতন পেতেন। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা এজন্য দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র করেছেন। এর মাধ্যমে দক্ষ শ্রমিক বিদেশে যাচ্ছেন। যার কারণে এ সরকারের আমলে রেমিট্যান্স বেড়ে ৬ বিলিয়ন থেকে এখন ৩২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। ৮ বিলিয়ন ডলারের নিচে ছিল রফতানি আয়, আজ তা ৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ২৫০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এসবের জন্য একজন কৃতিত্বের দাবিদার, তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার নেতৃত্বে এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। যার কারণে বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশ সীমিত সম্পদ নিয়েও উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। পৃথিবীর অন্য কোনো দেশ এতো স্বল্প সময়ে এগোতে পারেনি। যা শেখ হাসিনার সরকার করে দেখিয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ অর্থনৈতিক মুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যোগ করেন হানিফ।

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারে থাকা অবস্থায় রাষ্ট্রক্ষমতাকে ধ্বংস করে অন্ধকারে নিমজ্জিত করেছে। অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। আধা ঘণ্টা পরপর লোডশেডিং হয়েছে। ব্যবসা বাণিজ্য ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেই অন্ধকার থেকে আলোয় উদ্ভাসিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সঠিক নেতৃত্ব পেলে দেশ উন্নত হতে পারে এটি আজ প্রমাণ হয়েছে। ২০০৮ সালের দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল ৪০ লাখ মেট্রিক টন। আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আসার সময় দেশে সাড়ে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা ছিল। আজ ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা হয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে ৩০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা হবে। আজ দেশের মানুষ লোডশেডিং ভুলে গেছে। অথচ এক সময় মানুষ কখন বিদ্যুৎ আসে সেটার দিকে তাকিয়ে থাকত। ডাক্তারদের মোমবাতি জ্বালিয়ে অপারেশন করতে হয়েছে। সেই দুর্বিষহ অবস্থার কথা আজ মানুষ ভুলে গেছে।

প্রতিনিধি সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য দেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি হুইফ ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাইদ আল মাহমুদ স্বপন।

খাদ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি দীপংকর তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মুছা মাতব্বরের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক, সংসদ সদস্য ও অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, মহিলা সংরক্ষিত আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ফিরোজা বেগম চিনু।

এছাড়া দলটির জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দরা প্রতিনিধি সভায় তাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে বক্তব্য দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১২৪ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০২২
এসআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।