ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ মে ২০২৪, ০০ জিলকদ ১৪৪৫

রাজনীতি

‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ দিশেহারা’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩, ২০২২
‘নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ দিশেহারা’

ঢাকা: নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে দাবি করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশে ভয়ঙ্কর সর্বগ্রাসী দুর্ভিক্ষ ধেয়ে আসছে। একদিকে দেশের মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ টিসিবির গাড়ির পেছনে ছুটছে।

মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। অন্যদিকে উন্নয়নের মহাসড়কের দাবিদার নিশিরাতের প্রধানমন্ত্রী সাঙ্গ পাঙ্গ নিয়ে রাষ্ট্রের শত কোটি টাকা খরচ করে জমকালো কনসার্টে গান বাজনা আর আমোদ-ফূর্তিতে মেতে রয়েছেন।

রোববার (৩ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শুধুমাত্র নিজের পিতাকে মহিমান্বিত করার জন্য রাষ্ট্রের তহবিল দেদারসে খরচ করছে। দেশের মানুষের সঙ্গে এমন মশকরা কেবলমাত্র গণবিরোধী জালিম সরকারই করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার নিমঘুটু গ্রামের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর দুই কৃষক বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। একজনের নাম রবি মারান্ডি অপরজন অভিনাথ মারান্ডি। এ দুই ভাই জমি বর্গা নিয়ে বোরো ধানের চাষ করেছিলেন। কিন্তু পানির অভাবে নষ্ট হচ্ছিল তাদের ধান। অথচ বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কাছে বারবার অনুরোধ করেও তারা জমিতে সেচের পানির ব্যবস্থা করতে পারেননি। ফলে হতাশা আর ব্যর্থতায় গত ২৩ মার্চ সন্ধ্যায় এ দুই কৃষক আত্মহত্যা করেন।

বিএনপির এ নেতা বলেন, দেশের বাস্তব পরিস্থিতি হলো কেবলমাত্র স্বল্পমূল্যের খাবারের আশায় হাজার হাজার বুভুক্ষ মানুষ টিসিবির ট্রাকের পেছনে ছুটছে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশে বর্তমানে ৪২ শতাংশের বেশি মানুষ দরিদ্র সীমার নিচে। দেশের জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ মানুষ এখন অত্যন্ত কষ্টে দিন যাপন করছে। মানুষের ক্ষুধার জালা না মিটিয়ে শুধুমাত্র একজন ব্যক্তির ক্ষমতার লালসা মেটাতে গিয়ে রাষ্ট্র ও সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ঘৃণা ও বিদ্বেষ। লোভ-লালসা, প্রতিশোধ-প্রতিহিংসা এটিই যেন এখন রাষ্ট্রের দর্শন। ধর্ষণ, আত্মহত্যা, মায়ের হাতে সন্তান হত্যা, সন্তান বাবাকে খুন, সীমাহীন দুর্নীতি, দ্রব্যমূল্যে নাভিশ্বাস, গরিব খেতে না পেলেও শত কোটি টাকায় আয়োজন করা হয় কনসার্ট।

তিনি বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশ যারা শেখ হাসিনার তথাকথিত উন্নয়নের মতো মডেল গ্রহণ করেছিল তাদের দেশে এখন লালবাতি জ্বলছে। আমাদের দেশে যেমন উন্নয়নের নামে লুটপাট হচ্ছে ঠিক তেমনি ওইসব দেশেও তাই হয়েছে। তথাকথিত উন্নয়নে সেসব দেশ এখন দেওলিয়া হয়ে পড়েছে। সেসব দেশে এখন বিদ্যুৎ নেই, কাগজের জন্য পরীক্ষা নিতে পারছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো, পাঁচশো টাকা কেজিতেও চাল মিলছে না। ওইসব দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা জনরোষ থেকে রেহাই পাচ্ছে না। এ বিষম চিত্র বাংলাদেশেও বিরাজমান।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০২২
এমএইচ/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।