ঢাকা: প্রথম রমজানেই গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানি সঙ্কটে ধর্মপ্রাণ মানুষদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা বিরাজ করছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘রমজান মাসের প্রথম দিনই ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গ্যাসের অভাবে মানুষ ইফতার বানাতে পারেননি। চারদিকে মানুষের মধ্যে হতাশা বিরাজ করলেও সরকারের সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।
সোমবার (৪এপ্রিল) দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘রমজান মাসে মানুষ রোজা রাখে। এই মাসে যেসব জিনিসপত্র খুবই প্রয়োজন সেসব না থাকলে মানুষ অসহায় হয়ে পড়ে। রোববার (৩এপ্রিল) প্রথম রমজানে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস ছিল না। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অনেকের বাসায় চুলা জ্বলেনি, ইফতারের আয়োজন করতে পারেননি। এমন একটি পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে যে, চারিদিকে মানুষের মধ্যে হা-হুতাশ চলছে। কারণ হচ্ছে এই সরকার মানুষের যে অসুবিধাগুলো, মানুষ যে চরম সঙ্কটের মধ্যে রয়েছে এটাকে ভ্রুক্ষেপ না করে শুধু উন্নয়ন উন্নয়ন বলে চিৎকার করছে। আজকে উন্নয়নের ভয়াবহ পরিণতি হচ্ছে চরম গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির সঙ্কটে মানুষের জীবন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। ’
রিজভী বলেন, ‘তারা(সরকার) বিদ্যুৎ উৎপাদনের কথা বলে, তারা নাকি বিদ্যুতের আলো বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে। আসলে কথাটা প্রধানমন্ত্রী উল্টো করে বলেছেন। উনি আলো বাসায় বাসায় পৌঁছে দেননি, উনি অন্ধকার বাড়িতে বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছেন। উনি কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করার কথা বলে, চিৎকার করে মানুষের কাছে বলেন যে বিদ্যুৎ সরবরাহ বেড়েছে, বাড়িতে বাড়িতে বিদ্যুতের আলো পৌঁছেছে। আসলে এগুলো মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য বলেন। এই রমজান মাসেও অসত্য কথা বলতে আওয়ামী লীগের নেতা মন্ত্রীদের জুড়ি নেই। দেশে যা ঘটছে সম্পূর্ণরূপে তার বিপরীত কথা বলে দেশ ও দেশের বাইরর মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। এটাই হচ্ছে তাদের মূল কাজ। যারা গণবিরোধী সরকার তাদের এই সমস্ত কাজের ওপরই নির্ভর করতে হয়। কারণ তাদেরতো জনগণকে দেওয়ার মতো কিছু নেই। নেই বলেই তারা মিথ্যার আশ্রয় নেয়, গুম-খুন-গুপ্ত হত্যার আশ্রয় নেয়। নিত্য প্রয়োজনীয় যেসব পণ্য জনগণের বাঁচা মরার যে বিষয়টি সেটাতে তাদের ভ্রক্ষেপ থাকে না। তারা একটা গভীর সঙ্কটে দেশবাসীকে ঠেলে দিচ্ছে। ’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘এই রমজান মাসে দেশের মানুষ যে গ্যাস-বিদ্যুৎ নিয়ে গভীর সঙ্কটের মধ্যে আছে সেটি সম্পূর্ণরূপে সরকারের ব্যর্থতা, এই ব্যর্থতার জন্য আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সারাদেশে তারা উন্নয়নের নামে যে হরিলুট করছে সেটাকে বন্ধ করে দেশের মানুষ রমজান মাসে যাতে স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপন করতে পারে, রোজা রাখতে পারে সেদিকে গুরুত্ব দেওয়া দরকার’।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-প্রচার সম্পাদক কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০২২
এমএইচ/এসআইএস