ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

পাইকগাছা বিএনপির নেতৃত্বে এক-এগারোর সুবিধাভোগীরা!

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০২২
পাইকগাছা বিএনপির নেতৃত্বে এক-এগারোর সুবিধাভোগীরা!

ঢাকা: খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতৃত্বে রয়েছেন এক-এগারোর সরকারের সুবিধাভোগী নেতারা। এ বিষয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে একটি অভিযোগপত্র দিয়েছেন স্থানীয় বিএনপি নেতারা।

অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, এক-এগারোর সরকারে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য ডা. আবদুল মজিদকে আহ্বায়ক করে ২০১৬ সালে পাইকগাছা উপজেলা কমিটি গঠন করা হয়। তিন মাসের জন্য ওই কমিটি করা হয়েছিল সম্মেলন করার জন্য। কিন্তু গত ৬ বছরে সেখানকার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে সাতটিতে আংশিক কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাও প্রকৃত পরীক্ষিত, সৎ, ত্যাগী, সাবেক ছাত্রদল, যুবদল নেতাদের বাদ দিয়ে। ফলে বিএনপির ঘাঁটি খ্যাত ওই উপজেলার নির্বাচনে মাত্র ২ হাজার ৪০০ ভোট পায় বিএনপি। পরবর্তীতে ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে তার কমিটির কোনো নেতাকর্মী প্রচারে অংশ না নেওয়ায় নিজ কেন্দ্রেও ডা. আব্দুল মজিদ ভোট দিতে যাননি। ফলে দলীয় নেতাকর্মীদের মনোবল ভেঙে যায়।

উপজেলা বিএনপির নেতারা জানান, দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচিতে সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে চাঙাভাব ফিরে এলেও পাইকগাছা উপজেলা ও পৌর বিএনপির মধ্যে তেমন কোনো সাড়া ফেলতে পারেনি।

ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে দেওয়া ওই চিঠিতে অবিলম্বে পদবঞ্চিত ত্যাগী, সাবেক ছাত্র নেতা, যুবনেতাদের সমন্বয়ে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানানো হয়েছে।

বর্তমান কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক আসলাম পারভেজ বাংলানিউজকে বলেন, ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় ডা. আবদুল মজিদ দেশনেত্রী খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দুর্নীতিবাজ বলেছিলেন। গত ১২ বছর তাদেরকে রাজনীতির মাঠে দেখা যায়নি। এরা সুবিধাবাদী দালাল। আওয়ামী লীগের বিনাভোটের এমপির সঙ্গে হাত মিলিয়ে, ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো মানুষ কীভাবে বিএনপির লোক হয়। আমাদের দাবি এদেরকে বাদ দিয়ে ছাত্রদল, যুবদলের ত্যাগী নেতাদের দিয়ে কমিটি করতে হবে।

যুগ্ম-আহ্বায়ক শেখ ইমাদুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, তিন মাসের সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ৬ বছর হয়ে গেছে। এই কমিটি ভেঙে দিতে হবে। যিনি আহ্বায়ক তিনি ওয়ান-ইলেভেন সরকারের লোক। কখনও ছাত্রদল বা যুবদলের রাজনীতি করেননি। তিনি কীভাবে আসলেন জানি না। তারপরও তিন মাসের কমিটি নিয়ে এসে কোথাও পূর্ণাঙ্গ কমিটি করতে পারেননি। আমাদের দাবি এই কমিটি ভেঙে দিয়ে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের নিয়ে নতুন কমিটি করতে হবে। বিএনপি একটি গণতান্ত্রিক দল, এই দলে এভাবে কমিটি থাকতে পারে না।  

আহ্বায়ক ডা. আব্দুল মজিদ বাংলানিউজকে বলেন, দুই বছর আগে সম্মেলনের তারিখ দেওয়া হয়েছিল। তখন একজন প্রার্থীর অসুস্থতার কারণে করতে পারেনি। তারপর করোনা, এখন সুবিধামতো সময়ে জেলা থেকে সম্মেলনের তারিখ দেবে।

তিনি বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ২০০৭ সালে দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি করার সময় আমি জানতাম না। পরে জানতে পেরে আমি পদত্যাগ করেছিলাম। এসব বিষয়ে চেয়ারপারসনের কাছে আগেও অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল। তারা সবকিছু জানে। নতুন করে এসব অভিযোগ দিয়ে কোনো লাভ হবে না।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বরাবরে দেওয়া ওই আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক শেখ ইমাদুল ইসলাম, আসলাম পারভেজ, মো. আবদুল মজিদ ও মো. হাবিবুর রহমান মোল্লা, পৌর বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক সেলিম রেজা লাকি ও মোস্তফা মোড়ল, থানা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম তারিকও শেখ বেনজীর আহমেদ, পৌর বিএনপির মো. জিয়াউদ্দিন নায়েব, সাবেক ছাত্র নেতা শেখ আবু তালেব, মো. ইব্রাহিম, গাজী সোহেল রাশেদ জনি, শ্রমিক দল নেতা শেখ হাবিবুর রহমান, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সহ-সভাপতি এসএম রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১১২১ ঘণ্টা, ৫ এপ্রিল, ২০২২
এমএইচ/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।