ঢাকা: অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত চিঠির দেখা পেয়েছে ‘নর্থ-ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি’(নওজোপাডিকো)। এই চিঠির জন্য সাড়ে ৯ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে রাষ্ট্রীয় এই কোম্পানিটিকে।
আর এই চিঠি অনুযায়ী, ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হচ্ছে নওজোপাডিকো। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন রংপুর বিভাগের ৫৮ উপজেলায় ৩ লাখ ৮২ হাজার ৪৮০ জন গ্রাহক, রাজশাহী বিভাগের ৭২ জেলায় ৬ লাখ ১৬ হাজার ১৫০ জন গ্রাহক স্বয়ংক্রিয়ভাবে নওজোডিকোর নিয়ন্ত্রণে চলে যাবে।
২০০৫ সালে গঠন করা হয় রাষ্ট্রীয় এই কোম্পানিটি। ‘রেজিস্ট্রার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ এন্ড ফার্মস’ নিবন্ধন পায় ওই বছরের আগস্টের তিন তারিখে। কোম্পানি গঠনের পর অফিস নেওয়া হয়। কোম্পানির বোর্ড গঠন এবং এমডি নিয়োগ দেওয়া হয় ২০০৫ সালেই। সেই এমডি বসে বসেই অবসরে গেছেন ২০১১ সালে।
মিটিং আর দৌড়-ঝাঁপের মধ্যে কেটে গেছে সাড়ে ৯ বছর। পিডিবির পক্ষ থেকে বার বার আশ্বাস দিলেও চুড়ান্তভাবে দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার জন্য চিঠি দিতে টালবাহনা করা হয়। ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এলে আবার তোড়-জোড় শুরু হয়। এবারও থেমে যায় অদৃশ্য কারণে। ২০১৪ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয়ে অফিস করেন প্রধানমন্ত্রী। সেই দিন এই কোম্পানি দ্রুত কার্যকরের নির্দেশ দেন। কিন্তু তারপরও পার হয়ে গেছে পুরো দেড় বছর।
অবশেষে চলতি সপ্তাহে সেই কাঙ্খিত চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৩ আগস্ট বসছে যৌথসভা। ওই সভায় চুক্তি স্বাক্ষরের দিনক্ষণ নির্ধারণ হবে।
নতুন এই কোম্পানি গঠনের প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে, সেবার মান বৃদ্ধির পাশাপাশি দুর্নীতি লুটপাটে নিমজ্জিত বিপিডিবির ক্ষেত্র কমিয়ে আনা। বর্তমানে এ সব এলাকায় সিস্টেম লস দেখানো হচ্ছে প্রায় ১৭ শতাংশের মতো। যার বেশিরভাগই অবৈধ সংযোগের কারণে।
নওজোপাডিকোর পরিচালক(অর্থ)মশফিকুর রহমান বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ বিভাগ ৩১ আগস্ট মধ্যরাত থেকে নওজোপাডিকো কার্যকর করার নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ২৩ আগস্ট এ লক্ষ্যে যৌথসভা ডেকেছেন প্রতিমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বিপিডিবির সমস্ত স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ আমাদের হয়ে যাবে। আর স্টাফ যারা আছেন তারাও কোম্পানির অধীনে চলে আসবে। কাউকে চাকরিচ্যুত করা হবে না।
তবে এই প্রক্রিয়ার প্রতিবাদে সিবিএ আন্দোলন শুরু করেছে বলে জানা গেছে। তারা সোমবার বিপিডিবির চেয়ারম্যানের কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি পালন করেছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, অনেকদিন টালবাহনা করলেও এবার আর কালক্ষেপনের সুযোগ নেই। কারণ বিশ্বব্যাংক ও এডিবি’র সংস্কার প্রস্তাবের মধ্যে এই কোম্পানি গঠনের কথা বলা হয়েছে। তারা এই কোম্পানি কার্যকর করার জন্য একাধিক চিঠি দিয়েছে। এই কোম্পানি কার্যকর করতে ব্যর্থ হলে অর্থায়ন বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৫
এসআই/জেডএম