প্রতিটি অভিযানে প্রায় লাখ খানেক টাকা খরচ হয়েছে। এমন ৬২টি অভিযানে মোট ৫৭ লাখ ৭ হাজার ১৬০ টাকা খরচ করেছে সাভার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড।
বাংলাদেশে করোনার প্রাদুর্ভাব হওয়ার আগে ২০১৯ সালের শুরু থেকে উচ্ছেদ হওয়া প্রায় প্রতিটি এলাকার অবৈধ গ্যাস সংযোগ ফের সংযোগ দিয়ে চোরা কারবারিরা বাড়িওয়ালার কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছেন মোটা অংকের টাকা। আর এসব টাকা কৌশলে আদায় করে নিচ্ছেন খেটে খাওয়া ভাড়াটিয়া- সাধারণ শ্রমিকদের কাছ থেকে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সাভার ও আশুলিয়ার ২২১টি স্থানে ৬২টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে ১৬৮৪৮০ ফুট পাইপ উদ্ধার ও জড়িত ব্যক্তিদের ৬ লাখ ৫৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ২ হাজার ৯২০ জনকে আসামি করে সাভার ও আশুলিয়া থানায় ১০টি মামলাও দায়ের করা হয়েছে গ্যাস চোরা কারবারিদের বিরুদ্ধে।
শুধু মামলায় সীমাবদ্ধ থাকার কারণে আবার বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন চোরা কারবারিরা৷ সাভার ও আশুলিয়া থানায় হওয়া মামলায় ২ হাজার ৯২০ জন আসামিকে গ্রেফতারে তৎপরতা না থাকায় এসব চোরা কারবারিদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। বারবার এ ১০ মামলার আসামিরাই পুনরায় সংযোগ দেওয়ার দুঃসাহস দেখিয়ে যাচ্ছেন বলে মনে করছে সচেতন মহল৷
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আশুলিয়ার ঘোষবাগ, তৈয়বপুর, গৌরিপুর, কাঠগড়া, মানিকগঞ্জ পাড়া, নরসিংহপুর, কাশিমপুর ও বাংলাবাজারসহ প্রায় সব স্পটে পুনরায় সংযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রতি সংযোগ বাবদ হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে মোটা অংকের টাকা।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের আঞ্চলিক বিপণন বিভাগ সাভার শাখার উপ-ব্যবস্থাপক ও অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন অভিযানের সমন্বয়কারী আব্দুল মান্নান পুনঃসংযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পুনঃসংযোগের কিছু তথ্য আমাদের কাছে এসেছে। কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা পেলে আমরা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, উপজেলা প্রশাসন ও বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা এবং তিতাস গ্যাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করব।
সাভার তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (বিক্রয়) প্রকৌশলী আবু সাদাৎ মোহাম্মদ সায়েমের নেতৃত্বে ঘন ঘন উচ্ছেদ অভিযানে দৌরাত্ম্য কমেছিল গ্যাস চোরা কারবারিদের। তিনি দ্বায়িত্বে থাকার সময় অবৈধ গ্যাস সংযোগ একের পর এক উচ্ছেদ করে গেছেন।
সাদাৎ মোহাম্মদ সায়েম বাংলানিউজকে বলেন, অবৈধ গ্যাস সংযোগের স্থানগুলোতে যে আবার সংযোগ দেওয়া হয়েছে বলে আমাদের কাছে তথ্য আছে। বর্তমানে বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করতে চাইলেও পুলিশ প্রশাসনের কারণে করতে পারছি না। পুলিশ প্রশাসন বলছে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তারা আমাদের সাপোর্ট দেবে। গত অভিযানগুলোর চেয়ে এবার আরো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করব গ্যাস চোরা কারবারিদের বিরুদ্ধে।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের আঞ্চলিক বিপনণ বিভাগ, সাভার শাখার উপ-মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আনিছুর রহমান বলেন, উচ্ছেদকৃত লাইনে আবার অবৈধভাবে সংযোগ দেওয়ার তথ্য পাওয়া গেলে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪২ ঘণ্টা, জুলাই ০২, ২০২০
এসআই