ফ্রান্সে অনিয়মিত অভিবাসনের প্রবাহ ঠেকাতে দুই দিনের বিশেষ অভিযান শুরু করেছে দেশটির সরকার। বুধবার (১৮ জুন) থেকে শুরু হওয়া এ অভিযানে ট্রেন স্টেশন, বাস টার্মিনাল, সীমান্ত এলাকা ও গুরুত্বপূর্ণ নগরকেন্দ্রগুলোতে কঠোর নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ডানপন্থি 'লে রিপাবলিকান' (এলআর) দলের নেতা ব্রুনো রোতাইয়ো ফরাসি গণমাধ্যম সিনিউজ ও ইউরোপ-১ কে জানিয়েছেন, ‘অভিযানের মূল উদ্দেশ্য হলো সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকানো, মানবপাচারকারীদের শনাক্ত করা এবং অনিয়মিত অভিবাসীদের আটক করা। ’
তিনি জানান, দেশব্যাপী এই অভিযান চালাতে পুলিশ, জন্দারমেরি, কাস্টমস ও সেনাবাহিনীসহ প্রায় চার হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। শুধুমাত্র বুধবার ও বৃহস্পতিবার—এই ৪৮ ঘণ্টায় ফ্রান্সের বিভিন্ন শহরের প্রধান রেল ও বাস স্টেশনগুলোতে তল্লাশি কার্যক্রম চালানো হবে।
এদিকে, ব্রুনো রোতাইয়ো আজ সকালে প্যারিসের 'গার দ্যু নর্দ' স্টেশন পরিদর্শনে যান, যেখানে দক্ষিণ এশীয়—বিশেষ করে বাংলাদেশি ও শ্রীলঙ্কান—অভিবাসীদের উপস্থিতি বেশি। এ স্টেশনটি ইউরোস্টার ট্রেনেরও প্রধান টার্মিনাল, যা যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ফ্রান্সের সংযোগ তৈরি করে।
ইতিমধ্যে চলতি বছরে ফ্রান্সে ৪৭ হাজার অনিয়মিত অভিবাসীকে আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি আরও জানান, মে মাসে অনুষ্ঠিত জাতীয় অভিযানে একসঙ্গে ৭৫০ জন অভিবাসীকে আটক করা হয়, আর সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে আটকসংখ্যা ২৮ শতাংশ বেড়েছে।
জানা যায়, ইংলিশ চ্যানেল হয়ে ফ্রান্সে প্রবেশের হার রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। সাম্প্রতিক এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, একদিনেই এক হাজারেরও বেশি অভিবাসী এই বিপজ্জনক পথ পাড়ি দিয়েছেন। ফরাসি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে, দেশের প্রধান শহরগুলো থেকে আন্তর্জাতিক সীমান্তে চলাচলকারী ট্রেনগুলোর যাত্রীদের ওপর বিশেষ নজরদারি চালানো হচ্ছে।
ব্রুনো রোতাইয়ো বলেন, ‘যারা অনিয়মিতভাবে ফ্রান্সে অবস্থান করছেন, তাদের জন্য আমাদের দেশে কোনো জায়গা নেই। ’
প্রসঙ্গত, রোতাইয়ো সম্প্রতি লে রিপাবলিকান দলের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন এবং আগামী ২০২৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। সীমান্তে কঠোর নীতিমালা বাস্তবায়ন ও ‘সীমান্ত ফোর্স’ মোতায়েন তার রাজনৈতিক অবস্থানকে আরও দৃঢ় করছে।
আরআইএস