ঢাকা, শুক্রবার, ৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

প্রবাসে বাংলাদেশ

ইন্দোনেশিয়া থেকে জাহিদুর

ইন্দোনেশিয়ায় নেমেই কোটিপতি!

জাহিদুর রহমান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২৯ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৭
ইন্দোনেশিয়ায় নেমেই কোটিপতি! ইন্দোনেশিয়ার মুদ্রা রুপিয়াহ; ছবি-বাংলানিউজ

জাকার্তা (ইন্দোনেশিয়া) থেকে: গরম গরম এক কাপ সাধারণ চায়ের দাম ১৫ হাজার রুপিয়াহ! চোখ কপালে ওঠারই কথা!

আতংকের সাথে রয়েছে স্বস্তি। সেই স্বস্তি মনে এনে দেয় রাজার ভাব।

মানে ফাও ফাও কোটিপতি বনে গেলে মনে হতেই পারে আলাদিনের চেরাগের আর কি দরকার! আর কোটিপতি হলে তো হিসেবটা ক্যালকুলেটরে না ধরারই কথা। হিসেবটা হাজার ছাড়িয়ে লাখ। আর এক পা দু পা বাড়িয়ে তখন মিলিয়ন আর বিলিয়নে।

বেশি না! দেশে মাত্র ৬০ হাজার টাকার মালিক হলেও এখানে অনায়াসেই আপনি কোটিপতি! মানে এক কোটি রুপিয়াহ' র মালিক। তবে শর্ত একটাই প্রায় সেই পরিমাণ অর্থ উড়োজাহাজ ভাড়া দিয়ে তবেই এভাবে হতে হবে কোটিপতি!

আর এভাবে ভিসা ছাড়াই আপনার কোটিপতি বনে যাবার সাক্ষী হতে অপেক্ষায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দ্বীপ রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়া।

দেশটিতে প্রবেশে আগে ভিসা লাগলেও এখন লাগে না।  পর্যটকদের সহসাই কোটিপতি বনে যাবার জন্য দুয়ার খোলা রেখেছে দেশটি।  চাইলেই ‘ভিসা অন অ্যারাইভাল’ নিয়ে ঘুরে আসা যায় দ্বীপরাষ্ট্রের হাজারো দ্বীপে। অবস্থান করা যায় ৩০ দিন।  তবে তার আগে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র বিশেষ করে ফিরতি টিকেট,হোটেল বুকিং বা আমন্ত্রণপত্র সঙ্গে থাকতে হবে।

ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা। দেশটির প্রধান সুকর্ন হাত্তা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামা মাত্রই মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্রগুলোতে গেলেই কপালে উঠবে চোখ। যুক্তরাষ্ট্রের ১ ডলার সমান ১৩৩১৬.৫৫ ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়াহ।

যদিও ডলারের নোটের মূল্যমান ভেদে এই রেট ওঠানামা করে।  যেমন ১ ডলার ভাঙাতে গেলে মিলবে ১২,০০০ ইন্দোনেশিয়ান রুপিয়াহ।

নোট যত বড় মাপের রেটও বাড়বে তার সাথে সাথে। গড় পড়তা এক ডলারে ৮০ বাংলাদেশি টাকা ধরলে ১ টাকায় মিলবে ১৬৭ টাকা।  তবে ইন্দোনেশিয়ায় সর্বনিন্ম কাগুজে নোট ১ হাজার রুপিয়াহ।  এর নিচের হিসেবটা সেন্টে। আর সেটার বিনিময় মুদ্রা কয়েনে।

টাকা পয়সা নিয়ে যাদের আত্মা ছোট, আর দেশের বাইরে গেলে যাদের সব কিছুতেই ৮০ দিয়ে (টাকায় ১ ডলারের মূল্যমান) গুণ করার স্বভাব তাদের এসব অভ্যাস ত্যাগ করেই আসতে হবে এখানে।

ভুলে গেলে চলবে না দেশটিতে এসেই বনে যাচ্ছেন কোটিপতি। ‘যস্মিন দেশে যদাচার’ স্টাইলে অভ্যস্ত হতে হবে কোটি টাকা নাড়াচাড়া করায়।

নচেৎ বিমানবন্দর থেকে জার্কাতায় গন্তব্যে যেতে দেড় লাখ রুপিয়াহ ট্যাক্সি ভাড়া গুনতে গিয়ে হার্টফেল হতে পারে কারো।

প্রবাসী বিশেষ করে বাংলাদেশিদের কি পরিস্থিতি হয় প্রথম প্রথম এখানে এসে? জিজ্ঞেস করেছিলাম জাকার্তায় পেশাজীবি প্রবাসী সেলিমকে।

"আমার তো প্রথম প্রথম মাথা ঘুরাতো। এলোমেলে হয়ে যেত সব কিছু। লাখ লাখ করে কোটি কোটি রুপিয়াহ'র সাথে তাল মেলাতে সময় লেগেছে বেশ।

আচ্ছা এ দেশটি এত বড় মূল্যমানের নোট কেন ব্যবহার করছে। দুটো তিনটে শূন্য তো কমিয়ে দিতে পারে? জিজ্ঞেসা করেছিলাম জাকার্তা প্রবাসী আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং বিশেষজ্ঞ সাজিদ রহমানকে।

বাংলানিউজকে তিনি জানান,দেশটির মুদ্রা ব্যবস্থাটাই এমন। শূন্য কমিয়ে যে সাধারণ সীমায় নামিয়ে আনার চেষ্টা হয়নি এমনটি নয়। তবে রুপিয়াহ'র অবমূল্যায়নে নাগরিকদের মনস্তাত্ত্বিক চাপ কিংবা মুদ্রাস্ফীতির ভয়েই বহাল রয়েছে এই ব্যবস্থা। যা কি'না গরিব দেশের সাধারণ মানুষকেও বানিয়ে দিতে পারে কোটিপতি।

সহাস্য উত্তর সাজিদ রহমানের।

আরও পড়ুন....

** বাংলার পুকুরেই সাগরের ভেটকি
** প্রবাসে ভবিষ্যত বাংলাদেশ
** ইন্দোনেশিয়ায় অনন্য বাংলাদেশকেই মেলে ধরছেন হুমায়রা 
** সন্ধ্যা হতেই বাতি নেভে শাহজালালের ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের
** এবার ইন্দোনেশিয়ার পথে বাংলানিউজের জাহিদ
**ঢাকা-জাকার্তা অনন্য উচ্চতায়
** ইন্দোনেশিয়া হতে পারে সেরা গন্তব্য

বাংলাদেশ সময়: ০৯১৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৭
আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।