ঢাকা, রবিবার, ২৪ ফাল্গুন ১৪৩১, ০৯ মার্চ ২০২৫, ০৮ রমজান ১৪৪৬

অন্যান্য

নর্থসাউথের সামনের ঘটনায় সারজিসের অভিযোগ ভিত্তিহীন: ছাত্রদল

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৪ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০২৫
নর্থসাউথের সামনের ঘটনায় সারজিসের অভিযোগ ভিত্তিহীন: ছাত্রদল

ঢাকা: ঢাকায় নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটির সামনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমের উপস্থিতি ঘিরে মারামারির ঘটনায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে দায়ী করা বিভ্রান্তিমূলক বলে দাবি করেছে সংগঠনটি।

শুক্রবার (৭ মার্চ) বিকেলে গণমাধ্যমে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি করা হয়।

 

ছাত্রদল বিবৃতিতে বলেছে, তারা ঘটনার তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে পর্যালোচনা করেছে। সেখানে ছাত্রদলের কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম ছিল না। তবে ছাত্রদলের কেউ সংশ্লিষ্ট থাকলে তার জন্য তারা দুঃখ প্রকাশ করেছে।  

একইসঙ্গে দেশে যেকোনো জায়গায় অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটলে ছাত্রদলকে জড়ানো উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং দূরভিসন্ধিমূলক বলে উল্লেখ করেছে সংগঠনটি।  

বিবৃতিতে বলা হয়, ৫ মার্চ রাত ১০টার পরে সারজিস আলম তার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ নম্বর গেটের দিকে আসেন। এসময় ৮ নম্বর গেটে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আড্ডারত ছিলেন। গেটের সামনে সারজিস আলমের উপস্থিতি দেখে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সারজিস আলমকে উদ্দেশ করে ‘ঢাবির  সিন্ডিকেট ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’ স্লোগান দেন। এসময় সারজিস আলমের সঙ্গে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।  

“সারজিস আলমের সঙ্গে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিরোধের সূত্রপাত নাগরিক পার্টি এবং গণতান্ত্রিক  ছাত্র সংসদের মধ্যকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বনাম প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে চলমান অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকে। কিন্তু সারজিস আলম এই ঘটনাকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার জন্য ছাত্রদলকে দায়ী করে ফেসবুকে পোস্ট করেন। তার দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও কল্পনাপ্রসূত। সারজিস আলম তার পোস্টে শিক্ষার্থীদের ‘সন্ত্রাসী, দুষ্কৃতকারী এবং টোকাই’ হিসেবে উল্লেখ করে দেশের নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অপমান করেছেন। আমরা তার এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই। ”

সারজিস আলমের বক্তব্যে জুলাই আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন ত্যাগের মর্যাদাহানি করা হয়েছে উল্লেখ করে বিবৃতিতে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করার দাবি জানায় ছাত্রদল।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ঘটনাস্থলে ছাত্রদলের কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম ছিল না। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাও ঘটনাস্থলে ছিলেন না। সারজিস আলমের সঙ্গে ছাত্রদলের কোনো বিরোধ হয়নি। তবে উল্টো সারজিস আলমের শোডাউনে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং জুলাই-আগস্টের গণহত্যার আসামিদের দেখা গেছে। এভাবেই জাতীয় নাগরিক পার্টি ও তাদের ছাত্রসংগঠনে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পুনর্বাসন নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন হচ্ছে। আমরা নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের নিন্দা জানাই।  

গত ৫ মার্চের ঘটনাটির বর্ণনা দিয়ে পরে সারজিস আলম ফেসবুকে লেখেন, এনএসইউয়ের গেটের সামনে দেখি ১০-১২ জন ঢাবি সিন্ডিকেট নিয়ে স্লোগান দিচ্ছে। এর মধ্যে ছাত্রদলের সেন্ট্রাল নেতা আহমেদ শাকিল ছিল। আমি এগিয়ে যাই, তাদের কথা শুনতে। কিন্তু তারা ইচ্ছাকৃতভাবে আমার সঙ্গে থাকা প্রাইভেটের শিক্ষার্থীদের গালিগালাজ করতে থাকে। ওদের ১০-১২ জনের মধ্যে ১-২ জনকে স্টুডেন্ট মনে হলেও বাকিদের দেখে ভাড়া করা টোকাই দুষ্কৃতিকারী মনে হচ্ছিল৷ বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করাই এদের উদ্দেশ্য বুঝতে পেরে আমি দুই পক্ষকে চলে যেতে বলি এবং চলে আসি।  

ফেসবুক পোস্টে তিনি লিখেন, পরে ছাত্রদলের শাকিল তার নেতৃত্বে থাকা টোকাই দুষ্কৃতিকারী সন্ত্রাসীদের নিয়ে পূর্বে আমার সঙ্গে থাকা ওই প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির ছেলেদের ওপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করে এবং সরাসরি মাথায় ও পিঠে আঘাত করে একাধিক জনকে রক্তাক্ত করে। শাকিলসহ অন্য সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। ১৬ বছর ধরে ছাত্রদল টোকাইলীগের দ্বারা নির্যাতিত হওয়ার পর আজকে যদি ছাত্রদলের কেউ একইভাবে টোকাইলীগের সন্ত্রাসীদের মতো আচরণ করে, তাহলে তারও পরিণিতি টোকাইলীগের মতো হতে খুব বেশি দিন লাগবে না। শিক্ষা নেন, সময় থাকতে নিকট অতীত থেকে শিক্ষা নেন।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০২৫
এফএইচ/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।