লেখকের কি কোনো সামাজিক দায় থাকে? নাকি তিনি সবকিছুরে ভেতর থেকে কেবল সৌন্দর্য সন্ধান করতে থাকেন? বাস্তবতা, মানুষের চাল-চরিত্র, সমাজ-ধর্ম-নৈতিকতা, রাজনীতি—সবই তো শিল্পে ও সাহিত্যে স্থান করে নেয় নিজ নিজ শোভা ও শক্তি নিয়ে। লেখক শুধু ওইসব বিষয়কে ঠিক ঠিক জায়গায় রেখে নিজের কল্পনা ও পরিকল্পনা পরিবেশন করার চেষ্টা করেন।
লেখক সবসময় প্রকাশের পরিমিতি বোধ দ্বারা তাড়িত হন। সামাজিক পরিচিতি কিংবা খ্যাতি তাঁর প্রধান আরাধ্য নয়। লোকালয়ে নয়, মনের ভেতরে থাকে লেখকের বসবাস। তিনি আপন ভুবনে ডুবে থেকে নিজেকে তৈরি করেন—প্রকাশ করেন ইমিডিয়েট জেনারেশানের জন্য। মঞ্জু সরকারও তাই, নীরবে নিজের অভিজ্ঞতা, লেখাপড়া, জানার জগৎ আর ভাবনার পরিসরকে তুলে ধরেন উপন্যাসের পাতায় পাতায়। স্বৈরতান্ত্রিক রাজনীতির প্রবল প্রভাবে সমাজের যে বিপত্তি ঘটে, ব্যক্তির প্রতিভা ও মেধা যে বিপন্ন হয়ে পড়ে, তারই এক নিরাভরণ বৃত্তান্ত মঞ্জু সরকারের ‘একনায়ক’। একনায়কত্ব নিশ্চয়ই আমাদের কাছে প্রত্যাশিত নয়। মঞ্জুর কাছেও না। মেধা ও যোগ্যতার বলে সমাজে আত্মপ্রতিষ্ঠার পথ-অন্বেষায় নিবেদিত এক শিক্ষিত যুবক গিয়াসের জীবনের জ্বালা ও যন্ত্রণা বর্তমান উপন্যাসের প্রধান প্রতিপাদ্য। লেখক জানাতে চেয়েছেন যে, ‘রাষ্ট্রক্ষমতার নিয়ন্ত্রক যেখানে হয়ে ওঠে স্বৈরাচারি, সেদেশে ব্যক্তির বিকাশ ও ন্যায়সঙ্গত অধিকার পদদলিত হওয়াটাই হয়ে দাঁড়ায় স্বাভাবিক রীতি। ’ কাজেই কাহিনীতে বিবৃত সরকারি চাকুরিজীবী গিয়াসের সততা-কর্মনিষ্ঠা ও যোগ্যতা কোনো মূল্য পায় না। গিয়াস দেখেছে, দুর্নীতি ও ক্ষমতার কাছে নতজানু লোকেরা যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে। তাদের কাছে আত্মমর্যাদা কোনো বিষয়ই নয়। আর শুধু অফিস কিংবা কর্মস্থল নয়, স্বৈরশাসনের প্রভাব পড়ে ব্যক্তির পরিবার এমনকি দাম্পত্যজীবনেও। মানুষকে এক অজানা-অবোধ্য জটিলতায় পৌঁছে দেয় রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থাপনা। ব্যক্তি মার খায় নানান দ্বন্দ্বে ও দ্বিধায়। এমন এক বাস্তবতায় গিয়াস ও তার স্ত্রীর মধ্যেও তৈরি হয় অস্পষ্ট-সম্পর্করেখা। শেষপর্যন্ত গিয়াসের মানসিক সংঘাত, অসহায়তা আর সম্ভাবনার গল্প হয়ে ওঠে মঞ্জু সরকারের ‘একনায়ক’। সবকিছুর ওপরে ও অন্তরালে একনায়কত্বের প্রবল প্রতাপের কাহিনী এটি।
উপন্যাসের আড়ালে, ইতিহাসের তথ্য-উপাত্তের ভিড়ে, রাজনীতির কোলাহল আর লোকালয়ের নানান বিবরণ-আয়োজনের ফাঁকে মঞ্জু সরকার বোধকরি আত্মজীবনীর এক চিলতে প্রকাশ করেছেন বর্তমান কাহিনীতে। ‘ভালো মানুষের জন্য এ দেশ নয়’—এই সত্য গিয়াস অনুধাবন করেছে তাঁর স্রষ্টা মঞ্জু সরকারের অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে। ‘মামার জোর’ গিয়াস কখনো প্রয়োগ করেনি। করতে চায়নি। রাজনীতির ডামাডোলে তার কিছুটা আপত্তি। গিয়াস চায় ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনের শান্তি। জেনারেলের সাথে শৈশবে পারিবারিক সূত্রে গিয়াসের দেখা হয়েছে। বিয়ের পরে ‘ট্রাংককলের মাধ্যমে রংপুরে জেনারেলের মায়ের সঙ্গে কথা বলেছে গিয়াস ও আবিদা। ’ সম্ভবত, তাই ‘সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে জেনারেল যেদিন রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন, সে দিনটি গিয়াস উদ্দিনের স্মৃতিতে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকার কারণগুলো যতটা না ঐতিহাসিক ও সামাজিক, তার চেয়ে অনেক বেশি পারিবারিক ও ব্যক্তিগত। ’
‘ছাত্রজীবনের শেষ সনদপত্রটি হাতে পেয়ে গিয়াস তখন বিশ্বজয়ের স্বপ্ন-আবেগে ভরপুর। জেগে জেগেও স্বপ্ন দেখে, আর সনদপত্রগুলিকেই প্লেন বানিয়ে বিশ্বের নানা দেশে ঘুরে বেড়ায়। যেহেতু সনদগুলি প্রথম শ্রেণীর, প্লেনটিও তৈরি হয় সুপারজেট। দূরন্ত গতিতে বিশ্বের উন্নত দেশের আকাশে পৌঁছতে পারে অনায়াসে, কিন্তু কোনো দেশের বড় সিটিতেই ল্যান্ড করতে পারে না। বাস্তব কারণ শুধু পাসপোর্ট-ভিসা ও বৈদেশিক মুদ্রা যোগাড়ের অক্ষমতা নয়, কোন দেশে গিয়ে কর্মজীবন শুরু করলে গিয়াস কৃতি ছাত্রের মতো সফল নায়ক হয়ে উঠবে সহজে, সে বিষয়ে তার অজ্ঞতা ও অনিশ্চয়তা বোধও পর্যাপ্ত। ’ সদ্য স্বাধীন একটি দেশের রাজনৈতিক মুক্তি লাভের দশক পূর্তি হতে না হতেই গভীর সংকটে পড়ে যায় রাষ্ট্রভূমিটি। প্রথম দশকে উপর্যুপরি রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পর নতুন রাষ্ট্রটি দ্বিতীয় দশকে এসে পড়ে অপ্রতিরোধ্য এক স্বৈরশাসকের কবলে। তখন তরুণ-শিক্ষিত সমাজে নেমে আসে অন্ধকারের বারতা। ভবিষ্যত নির্মাণের জন্য তারা দেখতে থাকে অন্য দেশে পাড়ি জমানোর স্বপ্ন। কিন্তু কোথায় যাবে তারা? কোনো ঠিকানা তো তাদের জানা নেই। এমনই এক প্রজন্মের বাস্তব প্রতিনিধি ‘একনায়ক’ উপন্যাসের নায়ক গিয়াস। দেশে চাকুরির সংকট, মূল্যবোধের বিরাট অবক্ষয়, নেতিবাচকতার সর্বত্রবিস্তারি প্রভাব—এসব সাধারণ মানুষের নিত্যকার কথা-আলাপের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। কোনোদিকে যেন আশার কোনো পথ দেখা যায় না। চাকুরি নিতে গেলে হয় বড় অঙ্কের ডোনেশন অথবা মামা-চাচার দাপট চাই। অবশ্য ঔপন্যাসিক এই সামাজিক বাস্তবতার বিপরীতে প্রবল আশাবাদী ও প্রত্যয়ী পুরুষ হিসেবে দাঁড় করাতে চেষ্টা করেছেন গিয়াসকে। ‘ঘুষ বা মামার জোরে চাকুরি পাওয়ার চেয়ে নিজের যোগ্যতা বলে যে কোনো একটা সম্মানজনক চাকুরি জোটানোর ব্যাপারে গিয়াসের আত্মবিশ্বাসেও খামতি নেই। ’ গিয়াসের চাচাতো ভাইয়ের মামা জেনারেল রাষ্ট্রক্ষমতায়। গিয়াসের ভাগ্যে একটা সরকারি চাকুরি অবশ্য জোটে, কিন্তু তা সেই জেনারেলের সুপারিশে নয়।
গিয়াসের অফিসজীবনের জটিলতা, দলবাজী, কর্মচারী ইউনিয়ন, তদবির, প্রমোশন; তার মেসবাড়ির নানান অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে এগোতে থাকে উপন্যাসের কাহিনী। ‘ক্ষমতার কাছ থেকে দূরে থাকতে অভ্যস্ত গিয়াস’ দেখেছে ক্ষমতার দাপট ও অপপ্রয়োগ। ‘উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে অসদাচরণ এবং কর্তব্যকর্মে অবহেলার অভিযোগে’ অভিযুক্ত হয় সে। অফিসের কলিগ শাহিনা বলেছে গিয়াসকে: ‘জলে বসে কুমিরের সঙ্গে লড়াই করা ঠিক না। ’ গিয়াস একটা দণ্ডও পেয়েছিল, লঘুদণ্ড—‘তিন বছর সে বিআরডিএ-এর চাকরিতে স্থায়ী হতে পারবে না এবং তিন বছর ইনক্রিমেন্ট বন্ধ থাকবে। ’ একাকীত্ব ও নিঃসঙ্গতা পেয়ে বসে গিয়াসকে। ‘অফিসে তবু অফিস নিয়ে কথাবার্তা বলার জন্য সহমর্মী ও সহকর্মী অনেকেই আছে, কিন্তু অফিসের বাইরে গিয়াস বড় একা। আড্ডা দিয়ে সময় কাটানোর মতো সমমনা বন্ধু নেই, যাওয়ারও জায়গা নেই। মেসের পরিবেশ ভালো লাগে না। মহল্লায় রাস্তা থেকে দেখা লোকজনের সাজানো ঘরসংসারের ছিটেফোঁটা প্রকাশ, যেমন বারান্দায় শুকাতে দেয়া শাড়িকাপড়, জানালার পর্দা সরানো নারীর হাত, রান্নাঘর থেকে ভেসে আসা ইলিশের গন্ধ ইত্যাদি ঘরোয়া অনুষঙ্গ মনকে উদাস করে দেয়। ছোট্ট একটা সুখের সংসার কবে যে হবে গিয়াসের?’ মেসমেট বাউলশিল্পী ইকবাল এবং তার প্রেমিকা কুষ্টিয়ার কুমারখালির মেয়ে মৌসুমির স্বপ্নময় প্রেমময়তা গিয়াসের ঘরবাঁধার আগ্রহকে আরো উসকে দেয়। শেষে বিয়েও করে সে। ‘মেয়ের নাম আবিদা। বাবা-মা রংপুর শহরে থাকে, নিজেদের বাড়ি, বাবা উকিল। কিন্তু মেয়ে থাকে ঢাকায়, বোনের বাসায়। ইডেনে ভর্তি হয়েছে, বিএ পরীক্ষা দিয়েছে...। ’
উপন্যাসের আড়ালে, ইতিহাসের তথ্য-উপাত্তের ভিড়ে, রাজনীতির কোলাহল আর লোকালয়ের নানান বিবরণ-আয়োজনের ফাঁকে মঞ্জু সরকার বোধকরি আত্মজীবনীর এক চিলতে প্রকাশ করেছেন বর্তমান কাহিনীতে। ‘ভালো মানুষের জন্য এ দেশ নয়’—এই সত্য গিয়াস অনুধাবন করেছে তাঁর স্রষ্টা মঞ্জু সরকারের অভিজ্ঞতার ভেতর দিয়ে। ‘মামার জোর’ গিয়াস কখনো প্রয়োগ করেনি। করতে চায়নি। রাজনীতির ডামাডোলে তার কিছুটা আপত্তি। গিয়াস চায় ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনের শান্তি। জেনারেলের সাথে শৈশবে পারিবারিক সূত্রে গিয়াসের দেখা হয়েছে। বিয়ের পরে ‘ট্রাংককলের মাধ্যমে রংপুরে জেনারেলের মায়ের সঙ্গে কথা বলেছে গিয়াস ও আবিদা। ’ সম্ভবত, তাই ‘সেনাবাহিনী প্রধান হিসেবে জেনারেল যেদিন রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন, সে দিনটি গিয়াস উদ্দিনের স্মৃতিতে অবিস্মরণীয় হয়ে থাকার কারণগুলো যতটা না ঐতিহাসিক ও সামাজিক, তার চেয়ে অনেক বেশি পারিবারিক ও ব্যক্তিগত। ’ পারিবারিক-ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা বিবরণের ভেতর দিয়ে উপন্যাসের নায়ক গিয়াস পাঠককে নিয়ে যান ভোট ছাড়া এক সেনাপ্রধানের রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের কথা, থমকে-যাওয়া জীবনযাত্রার ইতিবৃত্ত, লুটপাট-বিশৃঙ্খলা আর মসনদের মোহের রাজনীতির ইতিহাসের অন্ধকারে। আর সেই আঁধারে খানিকটা শিল্পের আলো প্রক্ষেপণের চেষ্টা করেন।
নীতিকে আকড়ে-থাকা গিয়াসের জীবনসঙ্গিনী আবিদার মনে কোনো শান্তি নেই। স্বামীর সাথে মাঝে-মধ্যে বিতণ্ডা হয়। তার অনুভূতির কিছু অংশ এরকম: ‘এই বিল্ডিংয়ের দুজন ভাড়াটিয়া অফিসের গাড়িতে অফিস যায়, আর তুমি বাসে বাদুড়ঝোলা হয়ে অফিস করো। আমার খারাপ লাগে না? বিয়ের পর আজ পর্যন্ত কক্সবাজারেও হানিমুনে যেতে পারিনি। খরচ বাড়বে বলে এখনও মা হওয়ার সাহস পাই না। তুমি ডিরেক্টর হলে আর দেরি করব না কিন্তু। ’ আবিদার আশা গিয়াস তার জেনারেল মামার প্রভাবে অফিসে পদোন্নতি লাভ করুক। প্রসঙ্গত, একদিন স্বপ্নে জেনারেল মামার সাথে গিয়াস-আবিদার কথোপকথনের দৃশ্য হাজির করেন কাহিনীকার। দৃশ্যে দেখা যায়, স্বজনপ্রীতি, দুর্নীতি বিষয়ে আলাপ করছেন জেনারেল ও গিয়াস দম্পতি। আবিদা তার মামা শ্বশুরকে অনুরোধ করে গিয়াসকে অফিসের চেয়ারম্যান করে দিতে। জেনারেল মামা আশ্বাসও দেন। আর বলেন, বাসায় এসে বারবার তাকে মনে করিয়ে দিতে। ভোরবেলার স্বপ্ন সত্যি হয় বলে গিয়াসকে মনে মনে কিছুটা প্রশান্তি পেতেও দেখে পাঠকসমাজ। তবে জেনারেলের সাথে সত্যি সত্যি দেখা করতে বড়ই আপত্তি গিয়াসের।
মানসিক দ্বন্দ্ব, সামাজিক অবনতি, পারিবারিক চাপ ও আত্মীয়-পরিজনের চাঞ্চল্য—সবকিছুর ভেতর দিয়ে গিয়াসকে আশ্রয় করে এগিয়ে চলে কাহিনী। ব্যক্তিগত লাভের ব্যাপারে উদাসীন গিয়াস কি তাহলে ব্যর্থ পুরুষ? তার স্ত্রী আবিদা বলছে: ‘আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে দেখা করতে তোমার আত্মসম্মানে লাগে, এইটা ঠিক বুঝলাম না। তুমি তো মামার সঙ্গে একবার খালি সৌজন্য সাক্ষাত করবা। তোমার মান-সম্মান আর আদর্শ কি দেশের বড় বড় পলিটিশিয়ানদের চাইতেও বেশি গিয়াস? ডানপন্থী আর বামপন্থী বলো, দেশপ্রেমিক আর কমিউনিস্ট বলো, ক্ষমতার ভাগ পাওয়ার জন্য গোপনে সবাই স্বৈরাচারী জেনারেলের সঙ্গে লাইন দিচ্ছে, রাখো সে খবর?’—রাজনীতির এতসব জটিল ও দুর্বোধ্য খবর সাধারণ সরকারি কর্মচারি গিয়াসের জানা না থাকলেও, ইতিহাস তার নীরব সাক্ষী। একটি প্রজন্ম তার ভুক্তভোগী। প্রায় এক দশক তারা অবলোকন করেছে স্বৈরশাসনের নেতিবাচকতা। সুবিধাভোগীদের জঞ্জালে ছেয়ে গেয়ে সারা দেশ। নীতিহীন-আদর্শহীন মানুষের দেশে, দুর্নীতিপরায়ণ-স্বজনপ্রীতিপরায়ণ সমাজে যুগে যুগে এমনটাই ঘটে চলেছে। মঞ্জু সরকারের ‘একনায়ক’ উপন্যাসের পরিণতিতে আমরা দেখতে পাই পরাজিত শিক্ষিত যুবক গিয়াসের প্রবাসে পাড়ি জমানো কিংবা গ্রামে ফিরে যাবার পরিকল্পনার দৃশ্য। স্ত্রী আবিদাকে নিয়ে সে শেষ পর্যন্ত রাজনীতির জটিল শহর ছেড়ে দূর কোনো স্বপ্নের দেশে কিংবা নিজ গ্রামে আবাস গড়ার সিদ্ধান্ত নেয়। গিয়াসের কথা থেকে জেনে নিতে পারি বিষয়টি: ‘বাবাকে বুঝিয়ে বিদেশ যাওয়ার চেষ্টা করব প্রথম। সম্ভব না হলে কোনো এনজিওর চাকরি নিয়ে ঢাকা ছাড়ব, বাড়িতে থেকে বাবার মতো মাস্টারি আর জায়গাজমি দেখাশোনার কাজও করতে পারি। ’
‘সোনার বাংলাদেশ’ ছেড়ে আমাদের দেশের ‘স্কিল্ড, এডুকেটেড, এক্সপেরিয়েন্সড’ ছেলে-মেয়েরা কিংবা আন্টারপ্রেনাররা কেন ইমিগ্রেশান নিয়ে বিদেশের মাটিতে পারি জমাচ্ছে? উচ্চশিক্ষা কিংবা ডিগ্রি আনতে গিয়ে কেন অনেকে আর দেশে ফিরছে না? কেনই-বা এখনও সাগড়পথে ও দুর্গম পাহাড়িপথে ইউরোপ-আমেরিকার পথে পালিয়ে বেড়াচ্ছে প্রজন্মের পর প্রজন্ম?—এইসব জিজ্ঞাসার সমাধান খুঁজেছে কয়জন? সবাই কি তাহলে সুবিধার বাগানে বেড়াতে ব্যস্ত? রাজনীতি তাহলে কাদের জন্য? পলিটিশিয়ানরা আমাদেরকে কী দিচ্ছেন?—এসব প্রশ্নের সমাধান কি মঞ্জু সরকারের ‘একনায়ক’ উপন্যাস? নাকি মঞ্জু সরকার এই কাহিনীতে সমাজ-রাজনৈতিক অভিজ্ঞানের আড়ালে কেবল শিল্প-সৌন্দযই সন্ধান করেছেন?
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৮, ২০১৫