হাইনরিশ হাইনে (১৭৯৭-১৮৫৬) জার্মান ভাষার কবিতার এক অনবদ্য রূপকার। রোমান্টিক ধারার একজন পথিকৃৎ তিনি।
গাথা
ছিলেন বৃদ্ধ এক সম্রাট
হৃদয়ে বেদনা, চুল গেছে পেকে;
বেচারা রাজন করলেন বিয়ে
সুশ্রীচেহারা এক তরুণীকে।
ছিল সুপুরুষ তরুণ ভৃত্য
স্বর্ণাভ চুল, ফুল্ল চেহারা;
সুশ্রী যুবতী রানির পরনে
রেশমের ট্রেইন—সে ছিল বেয়ারা।
পুরানো সে গান—স্মরণে ফেরাও—
সুরে যা মধুর বিষাদাপ্লুত,
ভাগ্যে তাদের ছিল বিনষ্টি :
সে প্রেমের ছিল অতি মহত্ত্ব।
প্রসূন
সাত সকালেই পাঠাই তোমাকে বেগুনি ফুল
বনপথে পেয়ে সুবেহ সাদিকে,
সন্ধ্যাবেলায় এনে দিই আমি সমূহ গোলাপ
ছিঁড়ি যা আঁধার কুঞ্জের থেকে।
জানো নাকি তুমি কী পাবে শুনতে ফুলগুলো থেকে
যদি শিখে নাও ফুলেদের ভাষা?
বিশ্বাসময়ী হবে তুমি দিনে এবং নিশীথে
মেটাবে আমার উত্তাল আশা।
সূর্য
ছিল সে মহিলা সাগরের তটে দাঁড়িয়ে
সঙ্গী অশ্রু আর দীর্ঘশ্বাস,
দেখেছে তাকিয়ে সূর্যকে যেতে হারিয়ে
বিপুল আবেগ করেছিল তাকে গ্রাস।
শুনুন, ভদ্রে, কেন মিছে ব্যথা পাওয়া?
নিত্য-নিয়ত দৃশ্য এ সাধারণ;
সম্মুখে ওই সূর্যের ডুবে যাওয়া,
পিছনে উদয় উজ্জ্বল অকৃপণ।
শতদল
কোমল পদ্ম ত্রাসে কম্পিতা
সূর্যালোকের কঠিন ছোঁয়ায়,
নিমীলিত চোখে স্বপ্ন দ্যাখে সে,
স্নিগ্ধ রাত্রি একান্তে চায়।
হিমাংশু তার প্রেমিক প্রবর
ডেকে তোলে তাকে রূপালি আভায়;
অবগুণ্ঠন খুলে ফেলে ফুল
প্রেমিকাসুলভ মুখ তুলে চায়।
তরঙ্গ
গর্জনমান জলকরঙ্গ ঝাঁপিয়ে
ক্রমশ আগায় তীরের দিকে,
ফুলে ওঠে তারা, ডিগবাজি খায়, দাপিয়ে
মাৎ করে সারা সৈকতটিকে।
তারা আসে আর অবিরাম ওঠে কেঁপে
ব্যর্থ হয় না কখনো তারা,
অতি প্রচণ্ড কল্লোল বাড়ে মাপে—
পরিমাপে কিছু পাবে কি তারা?
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৫
শিল্প-সাহিত্য
হাইনরিশ হাইনের একগুচ্ছ কবিতা | অনুবাদ: সৈয়দ তারিক
অনুবাদ কবিতা ~ শিল্প-সাহিত্য | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।