মৃত্যুবোধ
যাকেই মানুষ ভাবি শ্বদন্ত বের করে ভেংচি কাটে।
সালাম-আদাব সব শোনা গেল গালির মতো
ঘামগুলো মনে হলো শিশিরফোঁটা
আর ভালোবাসা—শব্দটাতেও প্রায় নিঃশব্দে ঢুকে গেল
সমস্ত শরীর...
কাকে আর কী বলব ইনিয়ে বিনিয়ে?
জীবনের কথা হলো,
নিঃশ্বাসে বরাদ্দ বায়ু—
আর
সাতশোকোটি দেহ শুধু অপচয় হলো;
রোদ ও জোছনা ওরা পরস্পর থেকে পরস্পর হলো
কত কোটিবার, শুধু মৃত্যুকে মনে হলো
এমনই নির্বাসন কোনো—
যেন সবারই উঠোনজুড়ে চাষ হয়
গন্ধম ফলের বাগান।
এরকম হয়
হয়, এরকম মাঝে মাঝেই হয়—
কেউ মুখ দেখে চিনতে পারে না,
জুতা দেখে বলে, ‘তুমি সিরাজদ্দৌলা?’
দুরবিন
মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা দুজন কোনো
দুরবিনের দুইপাশে দাঁড়ানো মানুষ,
দেখাদেখি হয়—
তুমি দেখো আরো কাছে আছি,
আমি দেখি তুমি আরো দূরে সরে যাও।
দীর্ঘশ্বাস
আমার বুকের ভেতর—
পাশাপাশি দুটি দীর্ঘশ্বাস,
একটি যুবতী তার, আর
অন্যটি যেন যুবক পুরুষ।
আশেপাশে ফার্মেসি নেই!
ফলে এই বুকের ভেতর—
প্রায় মিনিট দশেক অন্তর
নতুন নতুন আরো দীর্ঘশ্বাস
যেন জন্মগ্রহণ করে।
অবিশ্বাস
আমার স্ত্রী ছিল সাদাসিধে মধ্যবিত্ত ভদ্রমহিলা।
রান্নাবান্না করত, নামাজ পড়ত, নিঃশ্বাস ফেলত
আর বিশ্বাস করত, প্রতিটি পুরুষের পাঁজরের
হাড় থেকে উপরওয়ালা যার যার নারীদের তৈরি
করেছেন...
উপরতলার ভাবীর সাথে ছিল তার শাড়ি আর
গহনার ভীষণ আলাপ, রান্নাবান্না করত, নিঃশ্বাস
ফেলত কিনা জানি না, প্রতি সন্ধ্যায় আমি
অফিস ফেরত এলে ঘামে ভেজা শার্ট থেকে
মেয়েলি পারফিউমের অচেনা গন্ধ পেত...
আমার স্ত্রী ছিল সাদাসিধে মধ্যবিত্ত ভদ্রমহিলা।
টিভি দেখত, বেঁচে থাকত, আমাকে বহুগামী
পুরুষ ভেবে সন্দেহ করত, দীর্ঘশ্বাস ফেলত,
আর প্রতিরাতে ঘুমোতে যাবার আগে আমার
পাঁজরের হাড়গুলো গুনে দেখত।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০১৬
টিকে/