ঢাকা, বুধবার, ৯ আশ্বিন ১৪৩২, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিল্প-সাহিত্য

আলোকচিত্রে স্বপ্নতাড়িত ফোজিত শেখ বাবু

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪:৪৩, আগস্ট ২১, ২০১৭
আলোকচিত্রে স্বপ্নতাড়িত ফোজিত শেখ বাবু আলোকচিত্রী ফোজিত শেখ বাবু

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তার বিখ্যাত ভ্রমণগ্রন্থ ‘ছবির দেশে কবিতার দেশে’ বইয়ে ছবির রাজধানী ফ্রান্স সম্পর্কে লিখেছিলেন বিষদ। এই গ্রন্থেই তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘যাদেরই একটু আঁকার হাত বা শখ থাকতো, তারা দূর দূর থেকে প্যারিসে এসে জমায়েত হতো ভাগ্যাণ্বেষণে। প্যরিসের কোন প্রদর্শনীতে একবার স্বীকৃতি পেলে সারা পৃথিবীতে নাম ছড়াবে।’

সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় যে ছবির কথা বলেছিলেন, তা শিল্পীর হাতে আঁকা পেইন্টিং। আর ফোজিত শেখ বাবু একজন আলোকচিত্রী।

তবে মিল এই যে, দুটোই শিল্প এবং দুজনেই শিল্পী।

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিস বর্তমানে শুধু হাতে আঁকা ছবির জন্যই বিখ্যাত নয়, বরং শিল্পের রাজধানী বর্তমানে সমৃদ্ধ শিল্পের প্রায় সব শাখাতেই। আর এই সমৃদ্ধ শহরেই সম্প্রতি বাংলাদেশের প্রথম একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী করেছেন আলোকচিত্রী শেখ ফোজিত বাবু।

এ প্রসঙ্গে বাংলানিউজের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমার জানা মতে প্যারিসে বাংলাদেশি আলোকচিত্রের প্রদর্শনীতে আমিই প্রথম। তবে এখানে কোনো ব্যক্তিগত স্বার্থ বা আমার নাম কামানোর অভিপ্রায় নেই। আমি শুধু চেয়েছি আমার দেশকে বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে।

আলোকচিত্রী ফোজিত শেখ বাবু ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে উপস্থাপন করেন ‘দুরন্ত শৈশবে বই আনন্দ’ শীর্ষক প্রদর্শনী। গত এপ্রিলে প্যারিসের পুয়ারদো পান্থা অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ প্রদর্শনীতে স্থান পায় তার ৫০টি আলোকচিত্র। যেখানে সব ছবির মধ্য দিয়েই উঠে আসে নতুন বই হাতে পাওয়ার পর শিক্ষার্থীদের আনন্দ। আর এ ছবিগুলোর মধ্য দিয়েই গভীর আবেগ থেকে তিনি শিক্ষায় বাংলাদেশের সফলতার বার্তা বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন।

আলোকচিত্রী ফোজিত শেখ বাবুর ছবিএ ব্যপারে এই আলোকচিত্রী বলেন, আশির দশকের মধ্যভাগে বইয়ের অভাবে পড়াশোনার পাট চুকাতে হয়েছিল আমাকে। আর এখন যখন দেখি আমাদের সন্তানেরা বছরের প্রথম দিনই নতুন বই হাতে পাচ্ছে, তখন ওদের মতো আমারও আনন্দ লাগে ভীষণ। আর সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই এ আয়োজন।

প্যারিসে অনুষ্ঠিত ‘দুরন্ত শৈশবের বই আনন্দ ছিলো ফজিত শেখ বাবুর ৬ষ্ঠ একক আলোকচিত্র প্রদর্শনী। এর আগে ২০১৫ সালে ‘স্টপ দ্যা ক্লাইমেট চেঞ্জ’ প্রদর্শনীতে বাংলাদেশের পরিবেশ বিপর্যয়ের ভয়াবহতা শুধু তুলে ধরেন তিনি।  

পাশাপাশি বিপন্ন প্রকৃতিকে রক্ষায় সচেতন হওয়ার আহ্বানও জানান এই আলোকচিত্রী।

২০১৬ সালে তার দ্বিতীয় প্রদর্শনী ‘বাঁচাও নদী শীতলক্ষ্যা’ কলকারখানার রাসায়নিক শিল্পবর্জ্যে নদীদূষণের আত্মঘাতী প্রবণতা সম্পর্কে সতর্ক করার প্রয়াস। এ প্রদর্শনী রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের পর নারায়ণগঞ্জে শীতলক্ষ্যার তীর এবং চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হয়। ২০১৭ তে ঢাকার আলিয়ঁস ফ্রঁসেসে আয়োজিত ‘বাঁচাও নদী বুড়িগঙ্গা’ আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে বুড়িগঙ্গাকে দখল ও দূষণমুক্ত করার দাবি জানান এই আলোকচিত্রী।

এরপর গত ১৭ এপ্রিল ফ্রান্সের প্যারিসে ঢাকা বিভাগীয় অ্যাসোসিয়েশনের সহযোগিতায় ‘দুরন্ত শৈশবে বই-আনন্দ’ শীর্ষক একদিনের আলোকচিত্র প্রদর্শনী দেশি-বিদেশি অসংখ্য দর্শনার্থীর প্রশংসা কুড়াতে সক্ষম হয়।

এদিকে প্যারিসে অবস্থানকালীন সেখানকার কৃষ্টি-কালচার নিয়ে তোলা ছবি দিয়ে ‘প্যারিস কেন সুন্দর’ শীর্ষক এক প্রদর্শনী ও আলোচনা অনুষ্ঠান ২৬ আগস্ট (শনিবার) রাজধানী আলিয়ঁস ফ্রঁসেসে অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানান এ আলোকচিত্রী।

বাংলাদেশ সময়: ২০৩৭ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৭
এইচএমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।