ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

হাশেম খানের ‘জোড়াতালির চালচিত্র’ প্রদর্শনীর উদ্বোধন

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৮
হাশেম খানের ‘জোড়াতালির চালচিত্র’ প্রদর্শনীর উদ্বোধন হাশেম খানের প্রদর্শনী দেখছেন শিল্পী ও অতিথিরা/ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: চাঁদপুর জেলার ডাকাতিয়া নদীর তীরে সবুজ শ্যামল গ্রাম 'শেখদী'। এ গ্রামেই বাবা মো. ইউসুফ খান ও মা নূরুন্নেসা বেগমের ঘরে ১৯৪২ সালের ১৬ এপ্রিল জন্মগ্রহণ করেন দেশবরেণ্য শিল্পী হাশেম খান। ১৯৫৬ সাল থেকেই নিয়মিত ছবি আঁকছেন এ প্রখ্যাত শিল্পী। অংশ নিয়েছেন দেশ-বিদেশের প্রায় ৫০টি প্রদর্শনীতে।

'নবান্ন' উৎসব, বসন্ত উৎসব, মঙ্গল শোভাযাত্রা, বাংলা নববর্ষ ইত্যাদি উৎসবের প্রথম প্রবর্তনে ও প্রতিষ্ঠার অন্যতম নেতা, ৬৯ এর গণ-আন্দোলনে চারুশিল্পীদের সক্রিয়ভাবে যোগদানের অন্যতম সংগঠক এবং ঢাকায় থেকেই ১৯৭১ সালে সক্রিয়ভাবে মুক্তিযুদ্ধে সম্পৃক্ত ছিলেন তিনি। গুলিবিদ্ধ হয়েও আহত অবস্থায় ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ চালিয়ে যান এ শিল্পী।

শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে কীর্তিমান চিত্রশিল্পী হাশেম খানের ‘জোড়াতালির চালচিত্র’ শীর্ষক বিশেষ প্রদর্শনীর উদ্বোধন হলো।  

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। আরো উপস্থিত ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক শামসুজ্জামান খান, শিল্পী রফিকুন নবী এবং বঙ্গবন্ধু অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন। সভাপতিত্ব করেন অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর।

সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ছাত্র আন্দোলনে জড়িত ছিলেন শিল্পী হাশেম খান। শিল্পী ছাড়াও মানুষ তাকে পেয়েছে মহান হৃদয়ের অধিকারী এক মানুষের রূপে। তিনি সর্বদা মানুষের কল্যাণের চেষ্টা করেছেন। মানুষ যে বয়সে অবসরের চিন্তা করেন শিল্পী তখন নিজেকে নতুনভাবে উপস্থাপন করেছেন মানুষের সামনে।

বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, চিত্রকর্মের মধ্যদিয়ে শিল্পীর প্রতিবাদ তুলে ধরেছেন হাশেম খান। খুব কম মানুষই আছেন যারা একসঙ্গে একুশে ও স্বাধীনতা পদক পেয়েছেন। স্বাধীনতার চেতনা ও চর্চা নিয়ে কাজ করেন শিল্পী হাশেম খান। মানুষ হিসেবেও তিনি সহজ সরল ও মিতভাষী।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক বোরহান উদ্দিন খান জাহাঙ্গীর বলেন, শিল্পী হাশেম খান একজন বিশ্বমানের শিল্পী। এদেশে বসে এ শিল্পীর কাজের মান ও পরিমাপ করা আমাদের দুঃসাধ্য। শিল্পী হাশেম খানের তুলনা তিনি নিজেই। তার কাজের জন্য সর্বদা এদেশ গৌরববোধ করবে।

অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, শিল্পকলার এমন কোনো মাধ্যম নেই যা নিয়ে হাশেম খান কাজ করেননি। ডিগ্রি তার মৃৎশিল্পে অথচ পরিচিতি চিত্রশিল্পী হিসেবে। এখন কাজ করছেন ভাস্কর্যের উপর। দিন দিন তার কাজে অবাক হতে হচ্ছে, কারণ দিন দিন তার কাজের পরিধি বেড়েই চলেছে।

শিল্পী রফিকুন নবী বলেন, দীর্ঘদিন শিল্পী হাশেম খানের সান্নিধ্য পাওয়ায় আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। নানা মাধ্যমে কাজ করেছেন শিল্পী হাশেম খান। এ প্রদর্শনীতে যেমন মুর‌্যালের সব উপাদানের উপস্থিতি রয়েছে, তেমনি গৃহে ব্যবহার করার উপযোগী করেও তৈরি করা হয়েছে এসব শিল্পকর্ম।  

শামসুজ্জামান খান বলেন, ৬১ বছরের পুরনো সম্পর্ক শিল্পীর সঙ্গে আমার। অসাধারণ সব ভাস্কর্য তৈরি করেছেন এ শিল্পী। বহু মমতা ও নৈপুণ্যতার সঙ্গে তিনি এ প্রদর্শনীর শিল্পকর্মগুলো তৈরি করেছেন।

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন শিল্পীপত্নী পারভীন হাশেম খান। সঞ্চালনা করেন বিখ্যাত অভিনেতা আফজাল হোসেন।

আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বৃহস্পতিবার ছাড়া প্রদর্শনী চলবে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। প্রদর্শনী উন্মুক্ত রয়েছে সবার জন্য।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৭
এইচএমএস/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।