লোকনাট্য দলের হাস্যরসধর্মী এ নাটকটি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে তার ৭০০তম মঞ্চায়ন। তরুণ নাট্যকর্মী আর নির্দেশকের প্রয়াসটি সার্থক করতে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন সব কলাকুশলী।
নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র ‘কঞ্জুস’ বা হাড়কিপ্টে চরিত্রে ছিলেন হায়দার আলী খান। তার বয়স ষাট পেরিয়ে সত্তরের ঘরে। তার এক ছেলে এক মেয়ে। ছেলে কাযিম আলী খান ও মেয়ে লাইলি বেগম। কোনো এককালে সমুদ্র ভ্রমণে গিয়ে তার মেয়ে লাইলির সঙ্গে পরিচয় হয় বদিউজ্জামান ওরফে বদি মিয়ার। প্রেমের দাম দিতে গিয়ে বদি মিয়া খাস চাকর হয়ে যায় হায়দার আলী খানের।
এদিকে, হায়দার আলী খানের ছেলে কাযিম আলী খান প্রেমে পড়ে পাশের বাড়ির মর্জিনা বেগমের। কাযিমের সঙ্গে মর্জিনার প্রেম যখন তুঙ্গে, তখন হায়দার আলীর চোখ পড়ে মর্জিনার ওপর। গোলাপজান ঘটকের মাধ্যমে লাইলির সঙ্গে হায়দার আলীর বিয়ের কথাবার্তা এগোতে থাকে। কাযিম তার আব্বা হুজুরের এহেন আচরণে ত্যক্ত-বিরক্ত হয়। এরপর নানা ঘটনার ভেতর দিয়ে এগিয়ে যায় নাটকের গল্প।
অভিনয়ের পাশাপাশি দর্শকদের কাছে প্রশংসা পেয়েছে নাটকের কোরিওগ্রাফিও। অন্তত বিভিন্ন দৃশ্যের শেষে দর্শকদের হাততালি ছিলো তারই স্তুতি। এছাড়া অভিনয়ের দিক থেকে প্রধান চরিত্রগুলোর কুশলীরা যেমন বোদ্ধা শিল্পীর পরিচয় দিয়েছেন, ঠিক তেমনি অসাধারণ দক্ষতা দেখিয়েছেন নাটকটির সহযোগী চরিত্রের কুশলীরাও।
নাটক শেষে দর্শক-শ্রোতা যেমন তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলেছেন, তেমনি বলেছেন দু’একটি গঠনমূলক কথাও। যেমন-নাটকটির কিছু কিছু ক্ষেত্রে অভিনেতাদের আবেগটা প্রয়োজনের তুলনায় একটু বেশি ছিলো। তবে সংলাপগুলো সাধারণ হলেও তা ছিল বেশ আকর্ষণীয়।
দর্শকদের মতে, নাটকটির পরিবেশনায় মঞ্চসজ্জা, নৃত্য, আলোকসজ্জা, পোশাক, সংগীত, রূপসজ্জা ছিলো অত্যন্ত চমৎকার। সব মিলিয়ে একটি সুন্দর গল্পের মধ্য দিয়ে মঞ্চায়ন হয়েছে কঞ্জুস নাটকটির।
নাটক সম্পর্কে এর নির্দেশক কামরুন নূর চৌধুরী বলেন, ১৯৮৭ সাল থেকে যাত্রা শুরু করে বিগত ৩০ বছর ধরে নাটকটি নিয়মিত প্রদর্শিত হচ্ছে। বাংলাদেশে মঞ্চ নাটকের দর্শক তৈরিতে এ নাটকটি বিশেষ ভূমিকা পালন করছে। এছাড়া কঞ্জুস বাংলাদেশের অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি নাটক। এ নাটকের কুশীলবরা দীর্ঘদিন ধরে এ নাটকে অভিনয় করেছেন। দীর্ঘ সময়ের মঞ্চায়ন অভিজ্ঞতা থেকে এ নাটকের ডিজাইন ও অভিনয় রীতি দর্শকদের মুগ্ধ করার এক অনন্য প্রয়াস।
হাসির নাটক হিসেবে শুরু থেকেই সর্বাত্মক চেষ্টা করা হয়েছে নাটকটিতে একটি প্রাণবন্ত নাট্য-আবহ তৈরির। রূপান্তরের ক্ষেত্রেও প্রচলিত ভাষা ও কথ্যরীতির ব্যবহার বেশ চমৎকার বলেই মন্তব্য করেছেন দর্শকরা। তাদের মতে, পুরনো ঢাকার বাসিন্দা, যারা ‘ঢাকাইয়া’ ভাষায় কথা বলেন, তাদের প্রাত্যহিক জীবনের ভাষা ও সংস্কৃতি তুলে ধরেছে নাটকটি।
বাংলাদেশ সময়: ২৩০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৮
এইচএমএস/এইচএ/
** ‘পুরুষোত্তমে’ চিরঞ্জীব বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব