রোববার (১৮ মার্চ) বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এসময় আয়োজনের বিস্তারিত তুলে ধরেন শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী।
শিল্পী শাহাবুদ্দিনের ‘শান্তি’ শীর্ষক এ প্রদর্শনী যৌথভাবে আয়োজন করছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও ভারতের গ্যাঞ্জেস আর্ট গ্যালারি। ৩২টি চিত্রকর্ম নিয়ে সাজানো হয়েছে এ প্রদর্শনী। শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালার ২ নম্বর গ্যালারিতে চলবে প্রদর্শনীটি। আগামী ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনী সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে বলে জানানো হয়।
সোমবার (১৯ মার্চ) বিকেলে শিল্পকলা একাডেমি’র জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে অনুষ্ঠিত হবে উদ্বোধনী আয়োজন। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সংস্কৃতি সচিব মো. ইব্রাহীম হোসেন খানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করবেন একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী। শুভেচ্ছা বক্তৃতা করবেন কলকাতার গ্যাঞ্জেস আর্ট গ্যালারির পরিচালক স্মিত বাজেরিয়া এবং শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, উদ্বোধনী এ আয়োজনে আলোচনা পর্ব ছাড়াও শিল্পী শাহাবুদ্দিনের লেখা ‘আমার মুক্তিযুদ্ধ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন, শিল্পীর ওপরে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘কালার অব ফ্রিডম’ প্রদর্শন ও অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনী রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে শিল্পী শাহাবুদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করা, জাতির জনককে হৃদয়ে ধারণ করা খুব কঠিন। আমি গত পঞ্চাশ বছর ধরে এ চেতনা বহন করে চলেছি। এ পথ খুব কঠিন। পৃথিবীকে ব্যবসায়ীরা নিয়ন্ত্রণ করছেন। বঙ্গবন্ধু চেষ্টা করেছিলেন এদের বলয় থেকে বেরিয়ে আসতে। নতুন আশার পথ দেখিয়েছিলেন। এটা আজকের তরুণদের ভালোভাবে উপলব্ধি করতে হবে।
তিনি বলেন, অনেকেই বলে আমি নাকি চিত্রকর্মে রাজনীতি করি। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে ছবি আঁকাকে রাজনীতি করা বলা হলে আমার আর কিছুই বলার নেই। আমি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ দেখেছি, করেছি। বিশ্বের আর কেনো শিল্পীর এ অভিজ্ঞতা নেই। মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর বাইরে চলে গেলে আমার অস্তিত্ব থাকবেনা।
বঙ্গবন্ধু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ১৯৭৩ সালে ক্যাবিনেট মিটিং চলছিলো। সেখানে আমার আঁকা ‘প্রিজনার’ ছবি নিয়ে হাজির হই। তিনি ছবিটি দেখে বললেন, আমি ছবি খুব ভালো বুঝি না। কিন্তু ছবিটা দেখে আমার কষ্ট হচ্ছে। সারাজীবনতো জেলেই কাটালাম।
ভালো ছবি প্রসঙ্গে শাহাবুদ্দিন বলেন, কোনো কিছু সৃষ্টি করা খুব কঠিন। সাধনা করতে হবে। সাধনার বিকল্প নেই। তবে সাধনাতেও সবসময় কাজ হয় না। সঙ্গে নিজস্ব গুণাবলী থাকতে হবে। এটা ঈশ্বর প্রদত্ত বিষয়। সৃষ্টি খুব বিপদজনক শব্দ। এটা কারো জীবনে একবারই ঘটে।
‘শান্তি’ শীর্ষক প্রদর্শনীটি ২০১৫ সালের ১২ ডিসেম্বর কলকাতায় প্রথম অনুষ্ঠিত হয়। ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি ওই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেছিলেন। ভারতের কোনো রাষ্ট্রপতির সেটিই প্রথম কোনো চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন। সে প্রদর্শনীতে স্থান পাওয়া ৩২টি ছবিই প্রদর্শিত হবে এবার।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০১৮
এইচএমএস/জেডএস