শনিবার (২১ এপ্রিল) সন্ধ্যায় সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে প্রকাশনা উৎসব উদযাপন কমিটি আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানে রবীন্দ্র গবেষক অ্যাধাপক আব্দুল হামিদ বলেন, কল্পনার শক্তি দিয়ে আমাদের সাহিত্য চর্চা করতে হবে।
প্রাবন্ধিক গাজী আজিজুর রহমান বলেন, আমরা খুব খারাপ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। সাম্রাজ্যবাদ, বিশ্বায়নের শিকার হয়ে যে সংস্কৃতির অনুসরণ করছি, তা আমাদের একা করে দিয়েছে। আমরা যেন সংঘবদ্ধ আন্দোলন না করতে পারি, সাহিত্যের জন্য কাজ করতে না পারি- সেজন্য প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। আমরা যাতে বই থেকে দূরে সরে যাই সেই প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ইন্টারনেট, ফেসবুক যতো গুরুত্বই বহন করুক না কেন, তার অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার বেশি হচ্ছে। সৃজনশীলতার ক্ষেত্রে যান্ত্রিকতার কোনো গুরুত্ব নেই। শেষ পর্যন্ত আমাদের বই লেখনীর কাছেই ফিরে আসতে হবে। আমাদের সন্তানেরা কতো কিছুতে ভালো করছে। কিন্তু সংস্কৃতি ছেড়ে তারা দূরে যাচ্ছে। আমাদের যে একটা সংস্কৃতি আছে, তা কেউই মানছে না। আমরা চাই আজকের লেখা যেন আগামীতেও কাজ করে।
অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ ওলিউল্লাহ বলেন, ‘শিকারি বিড়াল গোফে চেনা যায়’। পত্রিকার বৈচিত্র্যময় ধারা দেখেই বোঝা যায় সাতক্ষীরাবাসী নতুন একটি পত্রিকা পাবে। আমাদের লেখকেরা উৎসাহিত হবে। সাতক্ষীরার লেখকেরা বাংলাদেশকে উৎসাহিত করবে।
তিনি বলেন, বাইরের লেখকের লেখা পত্রিকাটির বৈচিত্র্য এনে দিয়েছে। পৃথিবীর শক্তিশালী অস্ত্র পত্রিকা। এই পত্রিকাটির প্রচ্ছদই এর ঔজ্জল্য দান করেছে।
‘কাগজ-কলমের’ সম্পাদক নাট্যজন খায়রুল বাসার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, চরিত্রহীন শিল্পকর্মীর স্থানে চরিত্রবান শিল্পকর্মী দরকার। মুক্তিযুদ্ধের সময় আশাশুনি অঞ্চলে কাজ করার সুবাদে সেখানকার ঐতিহ্য দেখেছি। দেখেছি ধানের মাঠ, দেখেছি পানিতে জোঁক, চেচো গাছ। কিন্তু আজ ৪৫ বছর পরে আর সেখানে কোন কিছুরই অস্তিত্ব নেই। মাঠ আছে কিন্তু সে মাঠে ঘেরের রাজ্য হয়ে গেছে। এই ঘেরের রাজ্যকে আমি ‘পগার’ বলেই অভিহিত করি।
তিনি বলেন, নিজের তাগিদেই এই পত্রিকার কাজ শুরু করেছি। কারণ যদি আমি কিছু করতে পারি তবেই এখানকার তরুণসমাজ এগিয়ে যাবে। সবাইকে আগামী প্রজন্ম তৈরির জন্য কাজ করতে হবে। আমাদের চিন্তা করতে হবে।
কবি মনিরুজ্জামান মনিরের সঞ্চালনায় ও সাহিত্যিক অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ ওলিউল্লাহের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন- সাতক্ষীরা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান রাসেল, কবি সালেহা আক্তার, কবি গাজী শাহজাহান সিরাজ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার, রবীন্দ্র গবেষকসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন।
নাট্যকার ও সাহিত্যিক খায়রুল বাসারের সম্পাদনায় প্রকাশিত সাহিত্য সাময়িকী ‘কাগজ-কলম’ এ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন লেখকের লেখা স্থান পেয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ০২১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২২, ২০১৮
জিপি