বাংলাদেশে আসার সময় রবীন্দ্রনাথ ভাতিজি ববকে (সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের মেয়ে ইন্দিরা দেবী) কথা দিয়ে এসেছিলেন, বাংলাদেশে এসে যা কিছু দেখবেন তার সবই লিখে জানাবেন। শিলাইদহ-শাহজাদপুর-পতিসরে বাংলাদেশের প্রকৃতির রূপ নতুন করে আবিষ্কার করতে থাকেন রবীন্দ্রনাথ, মানুষগুলোকেও আবিষ্কার করতে থাকেন নতুন রূপে।
কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা ‘ছিন্নপত্র’ অবলম্বনে তৈরি ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’ নাটকটিতে চিত্রিত হয়েছে এমন দৃশ্য। তার জীবনের আলাদা আলাদা সব ঘটনাকে তুলে ধরে সব্যসাচী লেখক কবি সৈয়দ শামসুল হক রচিত এ নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন আতাউর রহমান।
বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে হয়ে গেলো নাটকটির ২৯তম প্রদর্শনী। কবিগুরুর জীবনের বিভিন্ন ঘটনাকে তুলে ধরতে ঢাকার থিয়েটার সংগঠন ‘পালাকার’ বেশ কয়েক বছর আগে মঞ্চে এনেছে নাটক ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’।
১৮৮৯ থেকে ১৮৯৫ সময়কাল নিয়ে রবীন্দ্রনাথের জীবনের সাধনা পর্যায় নামে পরিচিত। এই সাধনা ছিল রবীন্দ্রনাথের সম্পাদিত পত্রিকাগুলির মধ্যে অন্যতম এবং তার সৃষ্টিউৎকর্ষের অন্যতম নিদর্শন। এই সময়টাতে তিনি বাংলাদেশে অবস্থান করেছেন, কাছ থেকে দেখেছেন বাংলার মানুষ, একান্ত হয়েছেন বাংলার বৈচিত্র্যময় প্রকৃতির সঙ্গে, যার চমৎকার চিত্র রয়েছে সেই সময়ে রচিত তার সমস্ত রচনাকর্মে, বিশেষত ছিন্নপত্রে। মূলত এই বাংলার জল-বায়ু-মাটি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে প্রভাবিত করেছিলো, প্রভাবিত করেছিলো তার রচনাকে।
মোট কথা, রবীন্দ্রনাথকে ঘিরেই নাট্যকাহিনীর আবর্তন। ফলে বাংলাদেশ ও বিশ্বের নাট্যমঞ্চে এই প্রথম রবীন্দ্রনাথ চরিত্র হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছেন। রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাতিজি ইন্দিরা দেবী চরিত্রটিও। সেই সঙ্গে নাটকটিতে তৎকালীন বাংলাদেশ তথা শিলাইদহ, পতিসর, শাহজাদপুরের বিচিত্র মানুষ এবং তাদের জীবনও উঠে এসেছে।
নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন- শামীম সাগর, আমিনুর রহমান মুকুল, দিপ্তা রক্ষিত লাভলী, শাহরিয়ার খান রিন্টু, কাজী ফয়সল, সোনিয়া আক্তার, শর্মীমালা, অনিকেত পাল বাবু, ইভা খান, সেলিম হায়দার, ফাহমিদা মল্লিক শিশির, রফিক নটবর, লিয়াকত লিকু, ফাইজুর মিল্টন, নভেম্বর টুইসডে রোদ, মুনিরা অবনী, অধরা হাসান, অরিত্র, আরিফুল হক চঞ্চল, শেখজাদা প্রিয়ঙ্কর শুদ্ধ, ঐক্য, শুভ্র নীল, ঐশ্বী, মাহমুদ নূরী শাহ ও শতাব্দী সানজানা প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ০২১৩ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৮
এইচএমএস/এএ