ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

‘আওয়ার কিংডম’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৮
‘আওয়ার কিংডম’ আওয়ার কিংডম নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: কল্পনার রাজ্যে দেখা মিলে হাজারো স্বপ্ন। আর শিশুরা তাদের ভাবনার মধ্য দিয়ে সেই কল্পনার রাজ্যে ঘুরে বেড়ায়। তাইতো তাদের ভাবনায় নাড়া দেয় মাংসাশী কোনো প্রাণীও হতে পারে ভেজিটেরিয়ান। শিশুদের এমনি এক ভাবনাকে নাট্টিক উপাদানে মঞ্চে নিয়ে এসেছে বরিশালের নাট্যদল শব্দাবলী গ্রুপ থিয়েটার পরিচালিত বরিশাল শিশু থিয়েটার।

প্রথাগত নামের বাইরে এসে বরিশাল শিশু থিয়েটারের ১০ম প্রযোজনায় এই নাটকটির নাম করণেও রয়েছে বেশ ভিন্নতা। শিশুর কল্পনার রাজ্যের হাতছানির মতো নাটকটির নামকরণ করা হয়েছে ‘আওয়ার কিংডম’।

নাটকটিতে দেখানো হয়েছে, পশু-পাখিদের রাজা সিংহ। তার রাজত্বে সবাই তাকে ভয় পেয়ে পালিয়ে যায় বলে সে গর্ববোধ করে। একই সঙ্গে আনন্দ উপভোগ করে তাদের পালিয়ে যাওয়াটাকে। একদিন ঘটনা চক্রে একটি ছোট ছাগল ছানার সঙ্গে সিংহের বন্ধুত্ব হয়ে যায়। সে ছাগল ছানার কাছে ফাঁস করে তার গোপন খবরটি। সিংহ রাজা ভেজিটেরিয়ান।

অন্যদিকে সুন্দরী অহংকারী খরগোস অন্যান্য প্রাণীদের সঙ্গে মিশতে চায় না। কারণ অন্যান্য প্রাণীদের থেকে তার বাসস্থান, খাবার, পোশাক সবই উন্নত এবং সুন্দর। অন্যান্য প্রাণীদের সে সব সময় তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে। একদিন চূড়ান্ত বিপদে পড়লে ওইসব তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা প্রাণীরাই তার জীবন রক্ষা করে। তখন সে তার ভুল বুঝতে পারে এবং অনুধাবন করে এরাই আসলে তার প্রকৃত বন্ধু।

নাটকটির প্রযোজনা সমন্বয়কারী মশিউর রেজা রিফাত জানান, আধুনিক ইলেট্রনিক্সের যুগেও শিশুরা যে রূপকথার কল্পনার রাজ্যে ঘুরে বেড়ায় তারই প্রতিচ্ছবি ফুটে ওঠেছে এই নাটকে। নাটকটিতে বর্ণনা করা হয়েছে শিশুর রাজ্যে থাকবে না কোন ভয়, হিংসা, ক্রোধ। ভালোবাসায় বাসযোগ্য হবে শিশুর পৃথিবী। নাটকটিতে ওঠে এসেছে সমসাময়িক কিছু বিষয়ও। সব হিংসাবিদ্দেশ ভুলে সবাই মিলে আগামীর সুন্দর একটি বাংলাদেশ গড়বে নাটকের মাধ্যমে এটাই বলে দিয়েছে ক্ষুদে এই নাট্যকর্মীরা।

নাটকটির রচনা ও নির্দেশনার কাজটি করেছেন শামীমা শওকত লাভলী। আর এতে অভিনয় করেছেন বরিশাল শিশু থিয়েটারের একঝাঁক ক্ষুদে নাট্যকর্মী। যাদের বেশিরভাগই প্রথম শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

খেলার মাঠ আর সুস্থ বিনোদনের অভাবে যখন শিশুর কাঁধে বইয়ের বোঝা আর কোচিংয়ের চাপ, সেই সময় বরিশাল শিশু থিয়েটারের এমন উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে শিশুর অভিভাবকেরা।

শিশুদের মেধা বিকাশে এমন সুস্থ ধারার সাংস্কৃতি চর্চা সুন্দর জীবন গঠনে সহায়ক হবে বলে জানিয়েছেন অধ্যাপক নজমুল হোসেন আকাশ।

এদিকে, নাটকটি বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের সারা জাগানো অন্যতম একটি শিশুতোষ নাটক হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন নাটকটির প্রযোজনা অধিকর্তা ও দলটির কর্ণধার নাট্যজন সৈয়দ দুলাল। একই সঙ্গে নাটকটির ভবিষ্যত নিয়েও তিনি বেশ আশাবাদী।

তিনি বলেন, বরিশাল শিশু থিয়েটার সব সময়ই ভিন্নধর্মী কাজ করে। একই সঙ্গে নাটকের মাধ্যমে সমাজের নানা অসঙ্গতি তুলে ধরে। শিশুদের এই নাটকটিতেও তেমনি বার্তা দেওয়া হয়েছে। নাটকটি নিয়ে দেশে ও দেশের বাইরে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন শিশুনাট্য উৎসবে অংশগ্রহণ করার বাসনাও রয়েছে এই নাট্যজনের।

উল্লেখ্য, গত ১২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় শব্দাবলীর নিজস্ব স্টুডিও থিয়েটার হলে নাটকটির প্রিমিয়ার শো করেছে দলটি। আর প্রতি শুক্রবার শব্দাবলীর নিজস্ব স্টুডিও থিয়েটারে দর্শনীর বিনিময়ে যে শো অনুষ্ঠিত হয় তারই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় এটি প্রদর্শিত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৯ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৪, ২০১৮
এমএস/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।