রোববার (০৯ ডিসেম্বর) বিকেলে ধানমন্ডির দৃক গ্যালারিতে আয়োজন করা হয় এ প্রদর্শনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানের। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত ড্যানিশ রাষ্ট্রদূত উইনি এসট্রুপ পেটারসেন।
উপস্থিত ছিলেন সুইডিশ দূতাবাসের ডেপুটি হেড অব মিশন অ্যান্ডার্স অস্ট্রাম ও বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের ডিপার্টমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টের (ডিএফআইডি) গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ইনস্টিটিউশনাল অ্যাডভাইজার ড. লুকে মুকুভু।
টিআইবি’র বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন অ্যাডভোকেট সুলতানা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানের শুরুতেই প্রদর্শনীর বিভিন্ন বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্য রাখেন টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
এসময় তিনি বলেন, প্রদর্শনীর এসব চিত্রের মধ্য দিয়ে সমাজের বিভিন্ন অসংগতি উঠে এসেছে। বাংলাদেশে দুর্নীতিবিরোধী আইনি ও নীতি কাঠামোতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলেও সেই আইন চর্চা ও প্রয়োগে এখনও ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে। শুধু মুখে দুর্নীতি প্রতিরোধের কথা বলে দুর্নীতি হ্রাস করা সম্ভব হবে না। দুর্নীতি প্রতিরোধে আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছার কার্যকর প্রয়োগ করতে হবে।
ড্যানিশ রাষ্ট্রদূত উইনি এসট্রুপ পেটারসেন বলেন, তরুণদের সম্পৃক্ত করে আলোকচিত্র ও কার্টুন নিয়ে এধরনের আয়োজন দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে একটি কার্যকর মাধ্যম। আমি প্রত্যাশা করি, জনসাধারণকে সম্পৃক্ত করে টিআইবি যেভাবে দুর্নীতিবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করছে তা সফল হবে।
প্রদর্শনীতে ট্রাফিক, প্রশাসন, পাহাড় কাটা, বন্যপ্রাণী শিকার, নদী দখল, উল্টা পথে গাড়ি চালানো, ঘুষ বাণিজ্য, বিমানবন্দরে স্বর্ণ দুর্নীতি, বিভিন্ন দফতরে ফাইল বাণিজ্য, কর ফাঁকি, কৃষিক্ষেত্রে দুর্নীতি, কালো টাকা ও প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ সমাজের বিভিন্ন অনিয়মের চিত্র নিয়ে ৬১টি কার্টুন ও ২৩টি আলোকচিত্র স্থান পেয়েছে।
১৩তম ‘দুর্নীতিবিরোধী কার্টুন প্রতিযোগিতা ২০১৮ এর ‘ক’ বিভাগে (১৩-১৮ বছর) প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেন পাবনা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী আইজায়া ট্রিপ্লেন্ড হেভেন, রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের শিক্ষার্থী মো. তৌহিদুল হাসান ও ঢাকার ছোলমাইদ উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আক্তার।
‘খ’ বিভাগে (১৯-২৫ বছর) প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেন যথাক্রমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের অংকন ও চিত্রায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মাসুদ আল মামুন, আশরাফুল ইসলাম ও প্রসুন হালদার।
উভয় গ্রুপের বিজয়ী তিনজনকে যথাক্রমে ৭৫ হাজার, ৫০ হাজার ও ৪০ হাজার টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়। এছাড়া দু’টি বিভাগ থেকে মোট ৩৫ জন কার্টুনিস্টকে বিশেষ মনোনয়ন দেওয়া হয়। এবছর এই দু’টি বিভাগে মোট ৭৫১টি কার্টুন জমা পড়ে।
৪র্থ ‘দুর্নীতিবিরোধী আলোকচিত্র প্রতিযোগিতা ২০১৮’ এর প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেন যথাক্রমে চিত্র সাংবাদিক মোহাম্মদ আসাদ, নজরুল ইসলাম এবং রেহমান আসাদ।
বিজয়ী তিনজনকে যথাক্রমে ১ লাখ, ৬০ হাজার ও ৪০ হাজার টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়। এছাড়া মোট ১৬ জন আলোকচিত্রীকে বিশেষ মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
এবছর আলোকচিত্র প্রতিযোগিতায় পেশাদার ও সৌখিন আলোকচিত্রীদের কাছ থেকে মোট ৪৯৬টি আলোকচিত্র জমা পড়ে।
কার্টুন প্রতিযোগিতার বিজয়ী ও বিশেষ মনোনয়নপ্রাপ্ত এবং আলোকচিত্র প্রতিযোগিতার বিজয়ী ও বিশেষ মনোনয়নপ্রাপ্ত মোট ৮৪টি আলোকচিত্র নিয়ে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ধানমন্ডির দৃক গ্যালারির গ্যালারি-২ এ প্রদর্শনী চলবে।
প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য এ প্রদর্শনী উন্মুক্ত থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৯, ২০১৮
এইচএমএস/এমএ