ঢাকা, বুধবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

চিড়িয়াখানার বেহাল দশা-শেষ পর্ব

দেড় হাজার কোটি টাকার জমি উদ্ধার করেছি: কিউরেটর ডা. এবিএম শহিদ উল্লাহ

আহমেদ রাজু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০১০
দেড় হাজার কোটি টাকার জমি উদ্ধার করেছি: কিউরেটর ডা. এবিএম শহিদ উল্লাহ

ঢাকা: ঢাকা চিড়িয়াখানার দেড় হাজার কোটি টাকার জমি দখল হয়ে গিয়েছিলো। আমরা সেই জমি উদ্ধার করেছি।

জমি উদ্ধার করতে গেলে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও প্রাভাবশালীরা আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। আমি কোনো হুমকিকেই ভয় করি না।

ঢাকা চিড়িয়াখানার ভারপ্রাপ্ত কিউরেটর ডা. এবিএম শহিদ উল্লাহ বাংলানিউজকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন।

ডা. এবিএম শহিদ উল্লাহ বলেন, আগে চিড়িয়াখানার সার্বিক অবস্থা ছিলো খুবই খারাপ। চিড়িয়াখানার ভেতরে মাঝে মধ্যেই ছিনতাই ও হাইজ্যাক হতো। মাদকদ্রব্য সেবন ছাড়াও হতো অসামাজিক কর্মকাণ্ড। বোরকা পরে ভেতরে ঢুকতো নারী চোর। ছুটির দিনে ভিড় হলে তারা নারী দর্শকদের ব্যাগ কেটে টাকা পয়সা ও মূল্যবান জিনিস নিয়ে সটকে পড়তো। এমন অনেক ঘটনার নজীর আছে।

কিউরেটর বলেন, চিড়িখানায় ছিলো এক ভীতিকর পরিবেশ। তাই দর্শকরা আসতে ভয় পেতেন। কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগও ছিলো। মানুষ মনে করতো চিড়িয়াখানা মানেই দুর্নীতির আখড়া। কিন্তু এখন সে অবস্থা পাল্টেছে। মানুষের ধারনা পাল্টাতে শুরু করেছে।

ডা. শহিদ উল্লাহ বলেন, আমি চিড়িয়াখানার দায়িত্ব নেওয়ার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগের জন্য ১২ জন কর্মকর্তাকে ওয়াকিটকি দেওয়া হয়েছে। পুরো চিড়িয়াখানা মনিটরিং করতে কর্মকর্তাদের দেওয়া হয়েছে বাইনোকুলার।

চিড়িয়াখানাকে নতুন করে ঢেলে সাজানোর চেষ্টা করছি। আশা করছি আগামী দুই মাসের মধ্যেই চিড়িয়াখানার পরিবেশ পাল্টে যাবে বলে জানান কিউরেটর শহিদ উল্লাহ।

কিউরেটর বলেন, দেশে পশুপাখির রোগের কোনো ওষুধ পাওয়া যায় না। তাই বিদেশ থেকে ওষুধ আনতে আনতেই মারা যায় রোগাক্রান্ত প্রাণী।

পশুপাখির সম্ভাব্য কি কি রোগ হতে পারে, এমন রোগের ১৬ লাখ টাকার ওষুধ বিদেশ থেকে আনা হয়েছে। এই ওষুধে আগামী দুই বছর চলবে বলে জানান কিউরেটর।

ডা. শহিদ উল্লাহ বলেন, প্রাণীদের সুস্থ রাখতে দেওয়া হচ্ছে পুষ্টিকর খাবার। এতে রোগ কমে যাবে, আয়ুও বাড়বে। তৃণভোজী প্রাণীদের দেওয়া হয় কমলা, মালটা, আংগুর, কলা ও আপেলসহ উন্নত মানের ফল।

মাংসাশী প্রাণীদের দেওয়া হয় দুই থেকে আড়াই বছরের ষাঁড়ের মাংস। তিনজন ডাক্তার ষাঁড়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। তারপর জবাই করা হয় চিড়িয়াখানার ভেতরেই। চর্বি, লিভার, কলিজা, জিহবা বাদে হাড়সহ মাংস দেওয়া হয় বলে জানান কিউরেটর।

কিউরেটর জানান, চিড়িয়াখানার ভেতরে দু’টি লেক আছে। দক্ষিণ দিকের লেক ১৮ একর ও পেছনের দিকেরটি ১২ একর। আগে লেক থেকে মাছ চুরি হয়ে যেতো। তাই এখন চারপাশ দিয়ে দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তা দেওয়াল। এখন আর বাইরের কেউ মাছ ধরতে পারবে না।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘন্টা, ০৪ নভেম্বর, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।