বাংলাদেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির মানোন্নয়নে ‘বঙ্গবন্ধু ১’ নামে স্যাটেলাইট স্থাপনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের এক বৈঠকে স্যাটেলাইট স্থাপনের বিষয়ে প্রস্তাব দেওয়া হয়।
এ স্যাটেলাইটকেন্দ্রিক সার্বিক অগ্রগতি নিয়ে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) কমিশনার মল্লিক সুধীর চন্দ্র বাংলানিউজকে বিশেষ সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এ সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মনোয়ারুল ইসলাম এবং শরিফুল ইসলাম
নতুন স্যাটেলাইট স্থাপন প্রসঙ্গে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন নিয়ন্ত্রক সংস্থার (বিটিআরসি) কমিশনার মল্লিক সুধীর চন্দ্র বাংলানিউজকে জানান, বাংলাদেশের স্যাটেলাইট স্থাপন এবং উৎক্ষেপণ বিষয়ে কোনো ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা নেই। তাই স্যাটেলাইট নির্মাণ এবং উৎক্ষেপণের প্রস্তুতি, নকশা, সম্ভাব্য খরচ, মহাকাশে কিভাবে এবং কোথায় এটি উৎক্ষেপণ করা হবে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
এরই মধ্যে বিটিআরসির নিজস্ব উদ্যোগে দেশেই স্যাটেলাইট স্থাপনে বিশেষজ্ঞ খোঁজা হয়। কিন্তু উপযুক্ত সাড়া না পাওয়ায় এখন বিদেশ থেকেই বিশেষজ্ঞ আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
বিটিআরসির কমিশনার মল্লিক সুধীর চন্দ্র বাংলানিউজকে বলেন, মহাকাশের যে স্থানে স্যাটেলাইট স্থাপন করা হবে এ বিষয়ে বিশ্বের টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের (আইটিইউ) কাছে এরই মধ্যে আবেদন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মহাকাশে স্যাটেলাইট স্থাপনের জন্য তারা অরবিটাল স্লট (মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের সম্ভাব্য স্থান) বরাদ্দে প্রয়োজনীয় এবং পরামর্শক সহযোগিতা করে। একটি দেশ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করলে তা যেন অন্য দেশের বিদ্যমান স্যাটেলাইট বা সংশ্লিষ্ট যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ব্যাহত না করে বা সমস্যার সৃষ্টি না করে এজন্য তারা নিকটবর্তী দেশগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করে।
অর্থাৎ কোনো দেশ মহাকাশের অরবিটাল স্লটে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে চাইলে আইটিইউ তার নিবন্ধিত ১৯২টি সদস্য দেশের কাছে এ বিষয়ে লিখিত চিঠি পাঠায়। এতে কোনো দেশ আপত্তি না করলে তারা স্যাটেলাইট স্থাপনের জন্য স্লট বরাদ্দ দেয়।
বাংলাদেশ এ মুহূর্তে আইটিইউয়ের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তবে বিশেষজ্ঞের মাধ্যমে আইটিইউয়ের সঙ্গে এ যোগাযোগ ফলপ্রসূ হবে বলে বিটিআরসি কমিশনার মল্লিক সুধীর চন্দ্র বাংলানিউজকে জানিয়েছেন।
অন্যদিকে বিশেষজ্ঞ নিয়োগের প্রশ্নে কমিশনার মল্লিক সুধীর চন্দ্র বাংলানিউজকে বলেন, এরই মধ্যে আইটিইউয়ের কাছে অবৈতনিক একজন বিশেষজ্ঞের জন্য আবেদন করা হয়েছে। কিন্তু সে আবেদনে প্রত্যাশিত সাড়া না পাওয়ায় এখন বেতনভুক্ত বিশেষজ্ঞ নিয়ে আসার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ফলে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে।
অচিরেই এ দরপত্র আহ্বানের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশের নিজস্ব স্যাটেলাইট স্থাপনের প্রাথমিক কাজ শুরু হবে বলে বিটিআরসি সূত্র জানিয়েছে।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৮২৫, নভেম্বর ৭, ২০১০