ঢাকা, বুধবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

বিশেষ নিবন্ধ

প্রধানমন্ত্রীর সফল সফর

বিশেষ প্রতিনিধি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১১
প্রধানমন্ত্রীর সফল সফর

ক্ষমতায় আসার মাস চারেক পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি আরব সফর করেন। আর তাঁর সরকারের দুই বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পর ৫দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে গেছেন যুক্তরাজ্যে।

এর আগে আরো ১৯বার বিদেশ সফর করেছেন রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে। কখনো দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানদের আমন্ত্রণে, কখনোবা আন্তর্জাতিক সংস্থার আমন্ত্রণে।

অর্থাৎ তাঁর কিছু সফর বেসরকারিভাবেও সম্পন্ন হয়েছে। তবে সরকারি হোক বা বেসরকারিই হোক, তার প্রতিটি সফরই বাংলাদেশের জন্য কিছু না কিছু অর্জন নিশ্চিত করতে সম হয়েছে। যার অধিকাংশেরই সুফল পেতে শুরু করেছে বাংলাদেশ। কোনো কোনোটি থেকে প্রাপ্তির সূত্রপাত হয়েছে।

সফরগুলোর উদ্দেশ্য এবং প্রাপ্তি সম্পর্কে বিশ্লেষণ করতে গেলে দেখা যাবে যে, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে তার সফরগুলোর অগ্রাধিকার চিহ্নিত করেছেন। প্রতিটি সফরের পেছনেই প্রধানমন্ত্রীর সংশ্লিষ্টতার প্রয়োজনীয়তাও প্রতিভাত হয়েছে।

 যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্র এবং সেই দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক সম্পর্কের কারণে সেদেশে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সফরটি অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ ওই দেশে বাংলাদেশের ৫ লাখেরও বেশি মানুষের বসবাস। সেখানে থেকে তাঁরা বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের পথকে সুগম করেছেন। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এসব মানুষকে বাংলাদেশের বেসরকারি দূত হিসেবেও গণ্য করা হয়। কমনওয়েলথভুক্ত দেশ হিসেবেও বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্ক সুদৃঢ়। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর দুটি দেশের সম্পর্ককে আরো ঘনিষ্ঠ করতে সহায়তা করবে।

বাঙালি জনগোষ্ঠীর অবস্থান বিবেচনা করতে গেলে যুক্তরাজ্য এবং মধ্যপ্রাচ্যকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজন হয়। আর সেই কাজটিই প্রধানমন্ত্রী করেছেন বলে আমাদের বিশ্বাস। বিদেশ সফরকালে প্রধানমন্ত্রীর বৈশিষ্ট্যগত কিছু বিষয় আমাদের চোখে পড়ে। তিনি যেখানেই যান সেখানেই বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ায় তাঁর প্রত্যয়, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোতে অবস্থানকারী বাংলাদেশী কমিউনিটির সাধারণ মানুষের সঙ্গে মত বিনিময়ের মাধ্যমে উন্নয়নচিন্তায় তাদের সংশ্লিষ্ট করার কাজটি তিনি গুরুত্বসহ করে থাকেন।

বাংলাদেশে বৈদেশিক বিনিয়োগকে উৎসাহ দানের বিষয়ে সরকারের গৃহীত পদপেগুলো তিনি যুক্তরাজ্য কর্তৃপক্ষকে বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন। তিনি সেখানে অবস্থানকারী বাংলাদেশিদেরও দেশের মাটিতে অধিকতর বিনিয়োগ করতে আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, তাঁর এই আহ্বান আমাদের অর্থনীতিতে সুবাতাস বইতে সহায়তা করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। যুক্তরাজ্য সফরের ক্ষেত্রেও আমরা তেমনি কিছু কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছি। তিনি সেখানে প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরুনের সঙ্গে প্রায় ঘন্টাখানেক সময় ধরে দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে আলোচনা করে বিশ্বসভায় বাংলাদেশের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন। আলোচনা হয়েছে দ্বিপাক্ষিক আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েও। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা, সেদেশে অবস্থানকালে ব্রিটিশ পত্রপত্রিকা এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সাক্ষাৎকার প্রদানের মাধ্যমেও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন তিনি। বিশেষ করে ব্রিটেনে বসবাসরত বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থী ও তরুণদের সঙ্গে তার খোলামেলা আলোচনা ও তাদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দিয়ে তিনি বাংলাদেশের অগ্রগতি এবং লক্ষ্যকে তাদের সামনে উপস্থাপন করতে সম হয়েছেন। ফলে এই সফর থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্তির মাত্রা অবশ্যই উল্লেখ করার মতো।
 
প্রধানমন্ত্রী দেশ পরিচালনা করার জন্য শুধু দাপ্তরিক কাজের মধ্যেই লিপ্ত থাকবেন এমন কথা নয়। তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ককে কাজে লাগিয়েও তিনি বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা-পর্যালোচনা মাধ্যমে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারেন। এসব সুবিধা অর্জনের জন্য তাকে যে প্রটোকলের কঠোরতা মেনে চলতে হবে এমন নয়। প্রটোকলের বাইরে থেকেও দেশের জন্য বৈদেশিক সুবিধা আদায় করা সম্ভব হতে পারে। তেমনি উদাহরণও আমরা দেখেছি।

বাংলাদেশ সময়:১৬৪১ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।