ঢাকা, বুধবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

ডিএমপির ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী- (১)

প্রশংসনীয় পদক্ষেপও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে !

সাঈদুর রহমান রিমন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট/ মুরসালিন হক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২৩৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৫, ২০১১
প্রশংসনীয় পদক্ষেপও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে !

ঢাকা: রাজধানীর আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) নেওয়া কিছু কর্মসূচি অচল হয়ে পড়েছে। পুলিশকে জনমুখী করতে গত ক’বছরে নেওয়া নানা উদ্যোগের কিছুই আর চোখে পড়ে না এখন।

মিইয়ে এসেছে পুলিশ-জনতার সহায়তামূলক তৎপরতাও।

ভূতপূর্ব পুলিশ কমিশনার একেএম শহীদুল হকের উদ্যোগে লেন পদ্ধতি ও সিগন্যাল বাতি মেনে চলা, বাসাবাড়ির ভাড়াটিয়াদের তথ্য ফরম পূরণ, ওপেন হাউস ডে, কমিউনিটি পুলিশিং সার্ভিস, হকার উচ্ছেদ, মাসিক আইন-শৃংখলা পর্যালোচনা কর্মসূচি বরাবরই কার্যকর ছিলো।

এসব কর্মসূচি নগরবাসীর মধ্যে বেশ সাড়াও ফেলে। কিন্তু উদ্যোক্তা পুলিশ কর্মকর্তা বদলিজনিত কারণে ডিএমপি ছাড়ার পর থেকেই তার গৃহিত পদক্ষেপগুলোও বন্ধ হয়ে হতে থাকে। ডিএমপি কমিশনার হিসেবে বেনজীর আহমেদ যোগদানের পর সেসব উদ্যোগ আর বহাল থাকেনি।

চলছে গাড়ি আগের মতোই: যানজট নিরসনের জন্য লেন পদ্ধতি ও সিগন্যাল বাতি মেনে চলার জন্য গত বছর ৮ ডিসেম্বর থেকে ট্রাফিক ও গাড়িচালকদের উপর কড়াকড়ি আরোপ করা হয়। তৎকালীন ডিএমপি কমিশনারের ঘোষণার পর বেশ কিছুদিন রাস্তায় পরিবর্তন দেখা গেলেও বর্তমানে যানবাহন ব্যবস্থাপনা আবার আগের অবস্থায় ফিরে গেছে।

ডিএমপি কমিশনার একেএম শহীদুল হকের ঘোষণার পর চালকরা লেন অনুযায়ী গাড়ি চলার বিষয়টি মেনে নিলেও  তিনি বদলি হওয়ার পর লেজে গোবরে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এখন রাজধানীর কয়েকটি ভিআইপি সড়ক ছাড়া বাকি সড়কগুলোর যানবাহন ব্যবস্থাপনায় হিমশিম খাচ্ছেন ট্রাফিক পুলিশ।

এদিকে বিশ্বকাপ ক্রিকেট-২০১১ উপলক্ষ্যে রাজধানীতে যান চলাচল সীমাবদ্ধ করে নানা কঠোরতা আরোপের চেষ্টা চলছে। আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির পর রাজধানীতে কোনো ভাঙ্গাচোরা গাড়ী চলবে না মর্মে গত বৃহস্পতিবার যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে বিশ্বকাপ ক্রিকেট-২০১১ উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত আন্ত:মন্ত্রণালয়ের এক সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাছাড়া শ্রেণী অনুযায়ী বিভিন্ন গাড়ি চলাচল সীমিত করার মাধ্যমে পুলিশ আপাত যানজট নিরসনের উদ্যোগও নিয়েছে। তবে বিশ্বকাপ শেষ হতেই আবারো তীব্র যানজটের কবলে পড়ার আশংকা করছেন নগরবাসী।

প্রতি মাসে আইন-শৃংখলা বৈঠক নেই: রাজারবাগ পুলিশ লাইনের পুলিশ টেলিকম অডিটোরিয়ামে প্রতি মাসেই খুবই গুরুত্বের সাথে অনুষ্ঠিত হতো মাসিক আইন-শৃংখলা পর্যালোচনা বৈঠক। পুলিশ কমিশনারের সভাপতিত্বে রাজধানীর সব থানার ওসি, সব জোনের এসি-ডিসিসহ পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিতি ছিলো বাধ্যতামূলক। আমন্ত্রণ জানানো হতো সাংবাদিকদেরও।

সে বৈঠকে আইন-শৃংখলা বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হতো। সার্বজনীন আলোচনার ভিত্তিতে আইন-শৃংখলা বিষয়ে নেওয়া হতো গুরুত্বপূর্ণ নানা পদক্ষেপ। কিন্তু বর্তমান পুলিশ কমিশনার দায়িত্বে যোগদানের পর থেকে গুরুত্বপূর্ণ ও জবাবদিহিমূলক মাসিক আইন-শৃংখলা বৈঠকটি আর হচ্ছে না।

উচ্ছেদ হয়নি হকার: নগরীর রাস্তাঘাট ও ফুটপাত হকার মুক্ত করার জন্য গত বছরের ৩ এপ্রিল ডিএমপি কমিশনার একেএম শহীদুল হক স্বারিত একটি নির্দেশনা পাঠানো হয়েছিলো সব অঞ্চলের উপ-পুলিশ কমিশনারদের। সেই নির্দেশ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নেওয়া হলেও দরিদ্র হকার জনগোষ্ঠেীর কথা ভেবে পরবর্তীতে কমিশনার একেএম শহীদুল হক হকারদের উচ্ছেদ না করে পুনর্বাসনের চেষ্টা করেন।

বর্তমানে বিশ্বকাপ ক্রিকেট-২০১১ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশে আগত বিদেশি খেলোয়াড়দের ব্যবহৃত সড়কগুলোর আশপাশের ফুটপাত  থেকে হকার উচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে হকার উচ্ছেদের এ প্রক্রিয়া চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নয়। এ আয়োজন আসন্ন বিশ্বকাপ ক্রিকেট অনুষ্ঠানের সময়কালের।

পুলিশ কমিশনার বললেন: এ ব্যাপারে পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘ভাল উদ্যোগ অবশ্যই বহাল থাকবে। অনেক পদক্ষেপ সচল আছে। তবে গাড়ি চেকিং, ভাড়াটিয়া তথ্য সংগ্রহ, অনলাইন জিডি পদ্ধতি সচল, হকার উচ্ছেদসহ বেশ কিছু কার্যক্রম চালু রাখা বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। ’

তিনি বলেন, ‘এসব নিয়ম পালন করতে গেলে পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ ওঠে। ’

অনলাইন জিডি কার্যক্রমের সফলতাও তথ্য প্রযুক্তি জ্ঞানের উপর নির্ভর করে বলে মন্তব্য করেন পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদ।

তিনি বাংলানিউজকে তিনি আরো বলেন, ‘সবার সহযোগিতা পাওয়া গেলে সুন্দর-সুস্থ ব্যবস্থা উপহার দেওয়া সম্ভব।

বাংলাদেশ সময়: ২৩২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৫, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।