ঢাকা, বুধবার, ২৯ মাঘ ১৪৩১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ শাবান ১৪৪৬

বাংলানিউজ স্পেশাল

চট্টগ্রামে জামায়াত-শিবিরকে ৩৫ ব্যক্তি অর্থ দেয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১১
চট্টগ্রামে জামায়াত-শিবিরকে ৩৫ ব্যক্তি অর্থ দেয়

চট্টগ্রাম: জরুরি প্রয়োজনে জামায়াত-শিবিরকে সহযোগিতা করেন চট্টগ্রামের বিভিন্ন শ্রেণী পেশার ৩৫ ব্যক্তি। এই ব্যক্তিরা বিপদে-আপদে সংগঠনটিকে বড় অঙ্কের অর্থ সহায়তা দিয়ে থাকেন।

সহায়তাকারীর তালিকায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নামও  আছে ।

এছাড়া যেকোনো মিশন সফল করার জন্য জামায়াত-শিবিরের রয়েছে নির্দিষ্ট ক্যাডার বাহিনী। দলীয় নির্দেশে প্রশিক্ষিত এসব ক্যাডার বাহিনী সুনিদিষ্ট মিশনে অংশ নেয়।

গত ১৯ সেপ্টেম্বর মুরাদুপরে গাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার মিশনে অংশ নিয়েছিল নগরীর বাইরে’র বহিরাগত ও প্রশিক্ষিত ক্যাডাররা।

ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্তে এসব তথ্য পেয়েছে পুলিশ।

এ প্রসঙ্গে নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাংলানিউজকে জানান, জামায়াত-শিবিরের জরুরি প্রয়োজনে আর্থিক সহযোগিতা করে এমন বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার ৩৫ জন ব্যক্তির নাম পেয়েছি আমরা। এসব ব্যক্তির ব্যাপারে তদন্ত চলছে। এছাড়া মিশন সফল করার জন্য আসা সংগঠনটির বহিরাগত ক্যাডারদেরও আমরা সনাক্ত করার চেষ্টা করছি।

তিনি আরও জানান, দেশের ভেতরে ও বাইরে কারা জামায়াত-শিবিরকে অর্থ যোগান দিচ্ছে এবং কোন উদ্দেশ্যে তাদের আমরা চিহ্নিত করার চেষ্টা করছি। যদি নাশকতার উদ্দেশ্যে অর্থ যোগান দেওয়া হয়ে থাকে তবে  ওইসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

গত শুক্রবার রাতে নগর শিবির কার্যালয়ে অভিযানকালে সেখান থেকে অর্থ সহায়তা প্রদানকারী ৩৫ ব্যক্তির তালিকা পাওয়া গেছেও বলে জানান তিনি।

পুলিশ জানায়, অর্থ সহায়তাকারী ৩৫ ব্যক্তির মধ্যে জামায়াত নেতাদের পাশাপাশি রয়েছেন চিকিৎসক, প্রকৌশলী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশাজীবি। শিবিরের কার্যালয় থেকে সহায়তাকারী ব্যক্তির পাশাপাশি চট্টগ্রামে কোন কোন প্রতিষ্ঠান তাদের অর্থ সহায়তা দেয় তার তালিকাও পাওয়া গেছ্। ে এর মধ্যে রয়েছে প্রাইভেট হাসপাতাল, কোচিং সেন্টারসহ বিভিন্ন  প্রতিষ্ঠান। এছাড়া দেশের বাইরেও থেকে জামায়াত-শিবির বড় ধরনের আর্থিক সহযোগিতা পায়।

এদিকে, বড় ধরনের কোনো কর্মসূচি বা মিশন থাকলে বাইরে থেকে প্রশিক্ষিত ক্যাডারদের আনে সংগঠনটি। গত ১৯ সেপ্টেম্বর মুরাদপুরে গাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশের ওপর হামলার কর্মসূচি সফল করতে আনা হয়েছিল বিপুল সংখ্যক ক্যাডার।  
এসি আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ জানান, ওই দিন মুরাদুপরে পুলিশকে টার্গেট করে পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়েছিল জামাত-শিবির কর্মীরা। তিনি বলেন, ওই দিন পুলিশ কোন অ্যাকশনে যায়নি। তারপরও তারা পাঁচলাইশ জোনের এসি আব্দুল মান্নানকে লাঠির আঘাতে গুরুতর আহত করেছিল।

ওই দিন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, হাটহাজারী, সীতাকুন্ড, কক্সবাজারের মহেশখালীসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে জামায়াত-শিবিরের প্রশিক্ষিত ক্যাডাররা অংশ নিয়েছিল। মিশন সফল করে তারা আবার স্ব স্ব জায়গায় চলে যায়।

এ প্রসঙ্গে পাঁচলাইশ জোনের এসি আব্দুল মান্নান জানান, এ পর্যন্ত এসব ক্যাডারদের মধ্যে কয়েক জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে নগর শিবিরের অফিস সহকারী বদিউর রহমান, জমির, লাদেন সোহেলসহ বেশ কয়েক জন ক্যাডার রয়েছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের গ্রেপ্তার করেছে পলিশ।

উল্লেখ্য, গত ১৯  সেপ্টেম্বর বিকেলে নগরীর মুরাদুপর এলাকায় কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে মিছিল করতে চাইলে পুলিশের বাধা পেয়ে ২৫টির মতো গাড়ি ভাঙচুর করে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। এ সময় পুলিশ জামাত- শিবির কর্মীদের মিছিল করতে নিষেধ করলে বিনা উস্কানিতে তারা এ ভাঙচুর চালায়। এসময় জামায়াত-শিবির কর্মীদের হামলায় পাঁচলাইশ জোনের এসি আব্দুল মান্নানসহ চার পুলিশ আহত হন।

এ ঘটনায় পরদিন নগর জামায়াতের আমীর মাওলানা শামসুল ইসলাম ও কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরার সদস্য সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরীসহ ৯৫ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতপরিচয় আরও কয়েক হাজার জনকে আসামি করে মামলা করে পুলিশ।

এ পর্যন্ত ওই মামলায় প্রায় ৯১ জন জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পাঁচলাইশ থানার ওসি ইসমাইল  হোসেন।  

এর মধ্যে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের উপ-উপাচার্য প্রফেসর আবু বকর রফিকসহ রয়েছেন জামায়াত নেতা ড. মোহাম্মদ রফিক, পতেঙ্গা থানা জামায়াতের আমীর জানে আলম, ডবলমুরিং থানা জামায়াতের সভাপতি ফারুক আজম।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।