ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

বড়পুকুরিয়া দুর্নীতি মামলা

২৫ এপ্রিল খালেদাকে হাজিরের নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৬
২৫ এপ্রিল খালেদাকে হাজিরের নির্দেশ বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া

ঢাকা: বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ১১ আসামিকে আগামী ২৫ এপ্রিল হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। অন্য আসামি কারাগারে আটক সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামীকে হাজির করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কারা কর্তৃপক্ষকে।

 

বুধবার (৩০ মার্চ) ঢাকার ২য় বিশেষ জজ হোসনে আরা বেগমের আদালত এ নির্দেশ প্রদান করেন।

এ মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামি ছিলেন ১৩ জন। কিন্তু মানবতাবিরোধী অপরাধে রায়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি কার্যকর হওয়ায় বর্তমানে আসামির সংখ্যা ১২ জন।

খালেদা জিয়া ছাড়া মামলার অন্য আসামিরা হলেন- সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন, সাবেক কৃষিমন্ত্রী এমকে আনোয়ার, সাবেক তথ্যমন্ত্রী এম শামসুল ইসলাম, মো. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, হোসাফ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন, সাবেক জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব নজরুল ইসলাম, পেট্রোবাংলার সাবেক পরিচালক  ‍মুঈনুল আহসান, সাবেক জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশারফ হোসেন এবং সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ব্যারিস্টার মো. আমিনুল হক।

১২ আসামির মধ্যে বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ছাড়া বাকি আসামিরা জামিনে আছেন। তবে মতিউর রহমান নিজামী এ মামলায় জামিনে থাকলেও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কারাগারে আটক আছেন।

বুধবার মামলার দিন ধার্য থাকলেও কারাগার থেকে মতিউর রহমান নিজামীকে আদালতে হাজির করা হয়নি। আগামি ২৫ এপ্রিল তাকেও আদালতে হাজির করার জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক মো. সামছুল আলম।

ওই বছরের ৫ অক্টোবর দুদকের উপ-পরিচালক মো. আবুল কাসেম ফকির খালেদা জিয়াসহ ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।

চার্জশিটভুক্ত আসামিদের মধ্যে সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী মো. সাইফুর রহমান, বিএনপির সাবেক মহাসচিব ও সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী আবদুল মান্নান ভূঁইয়া এবং পেট্রোবাংলার সাবেক চেয়ারম্যান এসআর ওসমানী আগেই মারা যাওয়ায় তাদের মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

মামলায় অভিযোগ করা হয়, বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি খনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের ঠিকাদার নিয়োগের জন্য আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করলে ৩টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান দরপত্র দাখিল করে।

দরপত্রগুলো কারিগরি ও আর্থিভাবে যাচাইয়ের জন্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের  অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল আজিমকে আহবায়ক করে ৭ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটি শ্যান্ডং লুদি কনসোর্টিয়ামকে প্রথম, সুজু কোল মাইনিং গ্রুপ কনসোর্টিয়ামকে দ্বিতীয় ও সিএমসি কনসোর্টিয়ামকে তৃতীয় নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

শ্যান্ডং লুদি কনসোর্টিয়াম চুক্তি বাস্তবায়ন না করায় সিএমসিকে একই মূল্যে ও শর্তে কাজটি দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু সিএমসি একই মূল্যে কাজ করতে অপারগতা প্রকাশ করায় সময় স্বল্পতার অজুহাত দেখিয়ে আসামিরা পুনঃদরপত্র আহ্বান না করে সিএমসি’র দাখিল করা মূল্যে ও শর্তে তাদের কার্যাদেশ প্রদান  করেন।

মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, পুনঃদরপত্র আহ্বান না করে সিএমসি দাখিল করা মূ্ল্যে ও শর্তে তাদের কাজ দেওয়ায় সরকারের ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ ২৬ হাজার ৩৪৩ টাকা ক্ষতি হয় এবং আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে তা আত্মসাৎ করেন।

ঘটনার সময় খালেদা জিয়া জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ছিলেন। তার জ্ঞাতসারেই পুনঃদরপত্র ছাড়াই সিএমসিকে কার্যাদেশ দেওয়া হয় বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

মামলাটির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ও বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়ার আবেদনের প্রেক্ষিতে ২০০৮ সালের ১৬ অক্টোবর মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট।

দীর্ঘ সাত বছর পর গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর খালেদার আবেদন খারিজ করে বিচারিক আদালতে মামলাটির কার্যক্রম বৈধ বলে রায় দেন হাইকোর্ট। ওই স্থগিতাদেশ তুলে নেওয়ার পর অন্য দুই দুর্নীতি মামলার (গ্যাটকো ও নাইকো) সঙ্গে এ মামলারও বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে বিচারিক আদালতে।

বাংলাদেশ সময়: ১২১৫ ঘণ্টা, মার্চ ৩০, ২০১৬
এমআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।