ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৯ থেকে বাড়িয়ে ২১ না ২৩ করা হবে- এই নিয়ে দ্বিধায় পড়েছেন দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফলে কাউন্সিলের ১৮ দিন পার হয়ে গেলেও স্থায়ী কমিটির নাম ঘোষণা করতে পারছেন না তিনি।
আর এই কালক্ষেপণের কারণে স্থায়ী কমিটির সম্ভাব্য সদস্যদের ঘুম হারাম হওয়ার উপক্রম হয়েছে। বিশেষ করে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী এই ফোরামে নতুন করে যাদের নাম আলোচনায় আসছে, তাদের উৎকণ্ঠা একটু বেশি।
বিভিন্ন মাধ্যমে তারা জানার চেষ্টা করছেন, স্থায়ী কমিটির সদস্য সংখ্যা ১৯ই থাকছে, নাকি বাড়ছে? বেড়ে সেটা ২১ হচ্ছে, না ২৩? কবেই বা ঘোষণা হচ্ছে জাতীয় স্থায়ী কমিটির নাম।
গত ১৯ মার্চ কাউন্সিলের পর জোর গুঞ্জন উঠে, সপ্তাহ খানের মধ্যে মহাসচিব ও স্থায়ী কমিটি ঘোষণা করবেন খালেদা জিয়া।
কিন্তু কাউন্সিলের ১১ দিন পর ৩১ মার্চ মহাসচিব, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও কোষাধ্যক্ষ পদে যথাক্রমে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, রুহুল কবির রিজভী ও মিজানুর রহমান সিনহার নাম ঘোষণা হলেও স্থায়ী কমিটির নাম ঘোষণা করেননি দলের চেয়ারপারসন।
সূত্রমতে, দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কিমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খালেদা জিয়া। ২০০৯ সালে অনুষ্ঠিত জাতীয় কাউন্সিলে স্থায়ী কমিটির ৪টি পদ বাড়িয়ে ১৫ থেকে ১৯ করা হয়েছিলো।
জানা গেছে, এবারও ৪টি পদ বাড়ানোর ব্যাপারে আগ্রহী দলের চেয়ারপারসন। সেক্ষেত্রে ১৯ থেকে বেড়ে ২৩ সদস্য বিশিষ্ট হবে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটি।
কিন্তু বর্তমান কমিটিতে থাকা বেশ ক’জন শীর্ষ নেতা চান ১৯ সদস্য বিশিষ্টই থাকুক জাতীয় স্থায়ী কমিটি। আর বাড়লেও ২টি পদ বাড়িয়ে ২১ সদস্য বিশিষ্ট করা যেতে পারে। তাদের মতে, সদস্য সংখ্যা বাড়ালে স্থায়ী কমিটির আকার বড় হবে, কিন্তু ভারত্ব কমে যাবে।
সূত্রমতে, শীর্ষ নেতাদের এমন মনোভাবের কারণেই জাতীয় কাউন্সিলের দিন স্থায়ী কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়টি আলোচনায় আনা হয়নি। অথচ পঞ্চম জাতীয় কাউন্সিলে স্থায়ী কমিটির সদস্য সংখ্যা বাড়ানোর বিষয়টি উম্মুক্ত আলোচনায় আনা হয়েছিলো।
বর্তমান কমিটির সদস্য খোন্দকার দেলোয়ার হোসেন, ড. আর এ গণি ও সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মৃত্যুতে ৩টি পদ শূন্য এবং এম শামসুল ইসলাম ও সারোয়ারী রহমান গুরুতর অসুস্থ থাকায় ২টি পদ পুনর্বিন্যাস করতে হবে। সব মিলে স্থায়ী কমিটির ৫টি পদে নতুন লোক নিয়োগ দিতে হবে বিএনপিকে।
এরই মধ্যে একটি পদ পূরণ হয়ে গেছে। মহাসচিব হিসেবে পদাধিকার বলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্থায়ী কমিটির সদস্য হবেন।
বাকি ৪টি পদের জন্য অন্তত এক ডজন নেতার নাম আলোচনায় রয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন বর্তমান কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন, আব্দুল্লাহ আল নোমান, সেলিমা রহমান, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, সাদেক হোসেন খোকা, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন।
স্থায়ী কমিটির বর্তমান আকার ঠিক রাখতে চাইলে এদের মধ্যে ৪ জন ঢুকে পড়বেন বিএনপির এই এলিট ফোরামে। ২টি পদ বাড়িয়ে ২১ করতে চাইলে এদের মধ্যে থেকে ৬ জনকে নিতে হবে। আর ৪টি পদ বাড়িয়ে ২৩ সদস্য বিশিষ্ট করতে চাইলে এদের সবারই ঠাঁই হবে স্থায়ী কমিটিতে। এই হিসাবের বাইরে যাওয়া সুযোগ খুব একটা নেই বলেই মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, শূন্য পদ পূরণ করার জন্য স্থায়ী কমিটিতে নতুন মুখ আনতে হবে। দু’একটি পদ আবার পুনর্বিন্যাস করতে হবে। আর যদি পদের সংখ্যা বাড়ে তাহলে বেশ কয়েকটি নতুন মুখ দেখা যাবে স্থায়ী কমিটিতে। তবে সব কিছুই নির্ভর করছে চেয়ারপারসনের ওপর। কাউন্সিলররা কমিটি পুনর্গঠনের ভাড় তার ওপর ন্যস্ত করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ২২০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৬
এজেড/এটি