ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

সিনিয়র নেতাদের বৈঠকে দাওয়াত পান না সিনিয়ররাই

আসাদ জামান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৬
সিনিয়র নেতাদের বৈঠকে দাওয়াত পান না সিনিয়ররাই

ঢাকা: ষষ্ঠ জাতীয় কাউন্সিলের ঠিক এক মাস পর ১৯ এপ্রিল রাতে সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে গুলশান কার্যালয়ে বৈঠক করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
 
বৈঠক শুরুর আধাঘণ্টা আগে গুলশান কার্যালয়ে হাজির হন সদ্য ঘোষিত বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।


 
তরুণ এই নেতা পদাধিকার বলে এখন বিএনপির ‘সিনিয়র নেতাদের’ কাতারে। এখন থেকে দলের চেয়ারপারসনের সঙ্গে এ ধরনের বৈঠকে নিয়মিতই ডাক পাবেন তিনি।
 
এর পর একে একে গুলশান কার্যালয়ে হাজির হন সাবেক ছাত্র নেতা খায়রুল কবির খোকন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মুজিবুর রহমান সারোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
 
এসব তরুণ নেতা সদ্য ঘোষিত বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব পদে আসীন হয়েছ্নে। সুতরাং ঢাকায় অবস্থানরত ‘সিনিয়র নেতাদের’ সঙ্গে খালেদা জিয়া বৈঠক করলেই ডাক পাবেন তারা।
 
সূত্রমতে, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য থেকে শুরু করে ভাইস চেয়ারম্যান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, যুগ্ম মহাসচিব এবং কখনো সাংগঠনিক সম্পাদকদের ডাকা হয় সিনিয়রদের বৈঠকে।
 
কিন্তু এই সিনিয়র নির্ধারণের ক্ষেত্রে কেবল দলীয় ‘পদ’-কে মাপকাঠি হিসেবে বিবেচনা করায় সম্পাদক মণ্ডলীতে থাকা অনেক সিনিয়র নেতাই ডাক পান না সিনিয়রদের বৈঠকে।
 
এ কারণেই ১৯ এপ্রিল খালেদা জিয়ার বৈঠকে ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব কেন্দ্রীয় বিএনপির অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সালাম, সাবেক বিরোধী দলের চিফ হুইপ পাঁচ বারের সংসদ সদস্য বিএনপির প্রচার সম্পাদক জয়নুল আবদিন ফারুক, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপনসহ অনেক সিনিয়র নেতাই ডাক পাননি।  
 
এসব নেতা বড় কোনো পদে না থাকলেও বিএনপির রাজনীতিতে সিনিয়র নেতা হিসেবে এদেরকে বিবেচনায় না আনা যৌক্তিক মনে করেন না দলটির বেশির ভাগ নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা।
 
সূত্রমতে, খালেদা জিয়া কোনো বৈঠক ডাকালে তার বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বিএনপির দপ্তর ও চেয়ারপারসনের প্রেস‌উইংকে অবহিত করেন।
 
প্রেস উইংয়ের পক্ষ থেকে বৈঠকের বিষয়টি মিডিয়াকে জানিয়ে দেওয়া হয়। এ কাজ সাধারণত খালেদা জিয়ার প্রেস সেক্রেটারি মারুফ কামাল খান সোহেলের নেতৃত্বে প্রেসউইং কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান ও শামসুদ্দিন দিদার করে থাকেন।
 
আর যাদের সঙ্গে খালেদা জিয়া বৈঠক করবেন তাদের কাছে আমন্ত্রণ পাঠানোর দায়িত্ব বৈঠকের কাঠামো ও গুরুত্বের ওপর নির্ভর করে।
 
গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হলে সাধারণত শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বা দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ওভার টেলিফোনে নেতাদের কাছে দাওয়াত পৌঁছান।
 
অন্য ক্ষেত্রে বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক আব্দুল লতিফ জনি বা শামীমুর রহমান শামীম ওভার টেলিফোনে দাওয়াত পৌঁছান নেতাদের কাছে।
 
সূত্রমতে, কেবল পদ না থাকায় কোনো ক্যাটাগরির মিটিংয়েই শিমুল বিশ্বাস, রুহুল কবির রিজভী, আব্দুল লতিফ জনি বা শামীমুর রহমান শামীমের কাছ থেকে ফোন পান না অনেক সিনিয়র নেতা।
 
এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিএনপির অর্থনীতি বিষয়ক সম্পাদক ঢাকা মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আবদুস সালাম বাংলানিউজকে বলেন, সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে সাধারণত স্থায়ী কমিটির সদস্য থেকে যুগ্ম মহাসচিব পর্যন্ত ডাকা হয়। তাই ওইসব পদে আসীন নেতারা যত তরুণই হোন, তারা ডাক পাবেন। এর বাইরে থাকা নেতারা যত প্রবীণ হোন, তারা ডাক পান না। এটাই নিয়তি।
 
জয়নুল আবদিন ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে চেয়ারপারসনের বৈঠকে আমাকে কখনো ডাকা হয় না। ম্যাডাম আদৌ আমাকে সিনিয়র হিসেবে গণ্য করেন কি না- তাও জানি না। তবে এ নিয়ে আমার কোনো খেদ নেই।
 
তবে গুলশান কার্যালয়ের একটি সূত্রমতে, মিডিয়াতে বৈঠকের অগ্রিম খবর চলে আসায় দাওয়াত না পেয়েও অনেক মধ্যম সারির নেতা নির্ধারিত সময়ে হাজির হয়ে যান গুলশান কার্যালয়ে। অনেক সময় তারা খালেদা জিয়ার বৈঠকেও অংশ নেওয়ার সুযোগ পান।
 
কিন্ত খালেদা জিয়ার বিশেষ সহকারী বা দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা ফোন না দেওয়ায় নিজেদের আত্মসম্মানবোধ অক্ষুণ্ণ রাখতে অনেক সিনিয়র নেতা বৈঠকের দিন গুলশান কার্যালয়মুখী হন না।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৯২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৬
এজেড/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।