ঢাকা: সুন্দরবন হত্যা করে বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরির পরিকল্পনা দেশের বাইরে থেকে করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজ উদ্দিন আহমেদ।
শুক্রবার (২২ জুলাই) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আয়োজিত ‘সুন্দরবন একটাই: সুরক্ষার দায়িত্ব আমাদেরই’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, রামপালের কয়লাভিক্তক তাপ বিদুৎকেন্দ্র প্রকল্প ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব কোনো বাংলাদেশিকে নয়, দেওয়া হয়েছে ভারতের একজনকে। এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের পরিকল্পনাও আমাদের দেশের কারো করা না।
বাংলাদেশের কেউ জেনেশুনে এই ক্ষতি করবে তা বিশ্বাস করা যায় না। সুন্দরবনের যে এত ক্ষতি হচ্ছে এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পুরোপুরি জানেন না। তিনি জানলে এতবড় ক্ষতি হতে দিতেন না। সুন্দরবন বাংলাদেশের জন্য অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। অনেক ঝড়ঝাপ্টা থেকে বাংলাদেশের মানুষকে বাঁচিয়েছে।
আগস্ট মাসের মধ্যে সুন্দরবনের প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি হিসাব করে জাতির সামনে তুলে ধরতে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি অনুরোধ জানান এমাজ উদ্দিন আহমেদ।
পাশাপাশি বিদ্যুৎকেন্দ্র সরিয়ে অন্য জায়গায় স্থাপনেরও আহ্বান জানান তিনি।
সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সৈয়দ তোশারফ আলী, বাপার সাধারণ সম্পাদক ড. আবদুল মতিন, আইনজীবী হুমায়ুন কবির বুলবুল প্রমুখ।
সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিএইচআরএমের নির্বাহী প্রধান মোজাহেদুল ইসলাম মুজাহিদ।
প্রবন্ধে বলা হয়, সুপার ক্রিটিক্যাল পদ্ধতিতে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনার ফলে শতকরা ১২ ভাগ দূষণ কম হবে। সরকার এমন দাবি করলেও ৮৮ ভাগ দূষণের কথা বলছে না।
কয়েকটি গবেষণা প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রবন্ধে বলা হয়েছে, এ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে আগামী ২০ বছরের মধ্যে ওই এলাকার শতভাগ পানি, ২০ ভাগ বাতাস এবং ৬৫ ভাগ মাটি দূষণের শিকার হবে।
সরকারের পক্ষ থেকে কয়েক হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টির দাবি করা হলেও বাস্তবে ৪ হাজার ৬শ’ লোক এতে কাজ করতে পারবে। বাস্তবতা হলো, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রভাবে সুন্দরবন সংলগ্ন ৫টি জেলার ১৯টি উপজেলার কয়েক লাখ লোক তাদের জীবিকা হারাবে। এরা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সুন্দরবনের ওপর নির্ভরশীল।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৩ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৬
এসএমআই/জিসিপি/এটি