ঢাকা: বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ’র তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে (বাদ জোহর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে কয়েক হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থকের অংশগ্রহণে তার নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়।
এতে ইমামতি করেন বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুল মালেক।
জানাজার আগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির রাজনীতিতে আ স ম হান্নান শাহ ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। ওয়ান ইলেভেনের পরিবর্তী পরিস্থতিতে অনেক নেতা যখন সরকারের চাপে দলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন, ঠিক সেই সময় নিজের জীবন বিপন্ন করে বিএনপি এবং জিয়া পরিবারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন তিনি। জেল-জুলুম, হুমকি-ধামকিতেও তিনি অগণতান্ত্রিক শক্তির কাছে মাথা নত করেননি। তার এই চলে যাওয়া কেবল বিএনপির রাজনীতিতে নয়, বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিশাল এক শূন্যতা সৃষ্টি করলো। আমরা তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় বলেন, রাজনীতি করতে গিয়ে আ স ম হান্নান শাহ অনেকবার কারাবরণ করেছেন, কিন্তু মাথা নত করেননি। তার মতো নেতা দলের জন্য খুব প্রয়োজন ছিলো। বড় অসময়ে তিনি চলে গেলেন। তার এই শূন্যতা পূরণ হবার নয়।
স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, সৎ এবং নির্ভিক রাজনীতিবিদ ছিলেন আ স ম হান্নান শাহ। তার মতো রাজনীতিবিদ চলে যাওয়া মানে বড় ধরনের ক্ষতি হওয়া। এ ক্ষতি শুধু বিএনপির নয়, গোটা জাতির জন্য।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে যখন তার মরদেহ গুম করার চেষ্টা চলছিলো, সে সময় আ স ম হান্নান শাহ অসীম সাহসের পরিচয় দিয়ে রাঙ্গুনিয়া পাহাড় থেকে জিয়াউর রহমানের মরদেহ শহরে নিয়ে এসেছিলেন।
বিএনপির আরেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, হান্নান শাহ গণতন্ত্রের নির্ভিক সৈনিক ছিলেন। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ওয়ান ইলেভেনসহ বিভিন্ন সময় তিনি সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন। বিএনপির এই ক্রান্তিলগ্নে হান্নান শাহ’র অভাব মর্মে মর্মে অনুভব করছি। আমি বিশ্বাস করি- হান্নান শাহ যে আদর্শ রেখে গেছেন, সে আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা সামনের দিকে এগিয়ে যাবে।
জানাজার পর বিএনপির পক্ষ থেকে হান্নান শাহ’র মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ঢাকা মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে সংগঠনের আহ্বায়ক মির্জা আব্বাস।
এরপর একে একে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দল, শ্রমিক দল, তাঁতীদল, মৎস্যজীবী, মুক্তিযোদ্ধা দল, ডক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব), জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা-জাসাস, তৃণমূল দলসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে হান্নান শাহ’র মরদেহে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এদিকে হান্নান শাহ’র জানাজা উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ঢাকার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থক এবং হান্নান শাহ’র শুভাকাঙ্ক্ষিরা নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে হাজির হন। প্রিয় নেতাকে শেষ বারের মতো দেখা ও শেষ শ্রদ্ধা জানাতে তারা অধীর আগ্রহে অপেক্ষ করেন।
মহাখালী ডিওএইচএস মসজিদে প্রথম জানাজা ও জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় দ্বিতীয় জানাজা শেষে দুপুর সাড়ে ১২টায় নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আনা হয় হান্নান শাহ’র মরদেহ। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকরা তাকে এক নজর দেখার জন্য হুমরি খেয়ে পড়েন।
** সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় হান্নান শাহ'র দ্বিতীয় জানাজা
বাংলাদেশ সময়: ১৪১৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৬
এজেড/এটি