ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

নাসিক নির্বাচনে সরকারের পালস বোঝার চেষ্টা বিএনপির

আসাদ জামান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৬
নাসিক নির্বাচনে সরকারের পালস বোঝার চেষ্টা বিএনপির

পূর্বের তিক্ত অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে মূলত সরকারের পার্লস বোঝার চেষ্টা করছে বিএনপি।

ঢাকা: পূর্বের তিক্ত অভিজ্ঞতা সত্ত্বেও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিয়ে মূলত সরকারের পার্লস বোঝার চেষ্টা করছে বিএনপি।
 
এ নির্বাচনে সরকারের মনোভাব ভালো করে বুঝে নিয়ে শেখ হাসিনার অধীনে জাতীয় নির্বাচনে যাওয়া, না যাওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে তারা।


 
নির্বাচন ভালো হলে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনীর আলোকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে খালেদা জিয়ার দল। আর নির্বাচন ভালো না হলে ভিন্নপথে হাঁটতে হবে বিএনপিকে।
 
গত কয়েকদিন দলটির বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতা ও নাসিক নির্বাচনে দায়িত্বপালনরত শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।
 
সূত্রমতে, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচন ও সারাদেশে অনুষ্ঠেয় জেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপি এবং বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট যাবে কিনা?- সে বিষয় নিয়ে অক্টোবর ও নভেম্বরে একাধিক বৈঠক করেন খালেদা জিয়া। ওইসব বৈঠকে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের নেতারা নির্বাচনে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে ভিন্ন ভিন্ন মত প্রকাশ করেন।
 
বিএনপির শীর্ষ নেতাদের বড় একটি অংশ নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে মত দেন। ২০ দলীয় জোটের কয়েকজন শীর্ষ নেতাও নির্বাচনে না যাওয়ার পক্ষে তাদের যুক্তি তুলে ধরেন।
 
ওইসব নেতাদের যুক্তি ছিল পৌরসভা, উপাজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সবাই মিলে মাঠে নেমেও নির্বাচন কমিশন ও সরকারের সদিচ্ছার অভাবে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আদায় করা সম্ভব হয়নি। ফলে কাঙ্ক্ষিত ফল লাভে ব্যর্থ হয়েছে ২০ দল সমর্থিত বিএনপি প্রার্থীরা। এতে ২০ দল ও বিএনপির সাংগঠনিক সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে।
 
কারও কারও যুক্তি ছিল, নির্বাচনে জিতলেও জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ পায় না বিএনপির বিজয়ী প্রার্থীরা। এতে দল ও জোটের মধ্যে হতাশা আরও বেড়ে যায়। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগ্রহও হারিয়ে ফেলেন কেউ কেউ। সুতরাং, নির্বাচনে না যাওয়াই ভালো।
 
কিন্তু, বিএনপি ও ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতাদের আরেকটি অংশ খালেদা জিয়ার কাছে পাল্টা যুক্তি উপস্থাপন করেন। তারা খালেদা জিয়াকে বোঝাতে সক্ষম হন, জাতীয় নির্বাচনের সময় ঘনিয়ে আসছে। এর আগ পর্যন্ত স্থানীয় নির্বাচনগুলোতে অংশ নিয়ে সরকারের মনোভাব যাচাই করতে হবে। দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে ভোট যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার মানসিকতা ফেরাতে হবে। নইলে হঠাৎ করে জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে গেলে সমন্বয় ও আত্মবিশ্বাস ঘাটতি দেখা দিতে পারে দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে।
 
নাসিক নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরের দিন এক অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, সর্বশেষ অ্যাসিড টেস্ট হিসেবে নাসিক নির্বাচনে যাচ্ছে বিএনপি। নির্বাচন কমিশন ও সরকার যদি এই নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে তারা ভয়াবহ ভুল করবে। পরের নির্বাচনগুলোতে যাওয়ার ব্যাপারে দেশের জনগণ দ্বিধান্বিত থাকবে।
 
বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) বাংলানিউজকে খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই ভালো হয়নি। তারপরও শেষবারের মতো সরকারের মনোভাব (পালস) বোঝার জন্য আমরা নাসিক নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। এখন নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ করে জনগণের আস্থা ফেরানোর দায়িত্ব সরকারের।
 
দলটির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের অনুষ্ঠিত সিটি করপোরেশন নির্বাচন ছিল বিএনপিকে ‘পটানোর’ নির্বাচন। এবারও হয়তো নাসিক নির্বাচনে বিএনপিকে জিতিয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনে তাদের ভেড়ানোর চেষ্টা করবে বিএনপি।
 
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই ভাবনাটা একেবারে অমূলক নয়। সরকার হয়তো চেষ্টা করবে নাসিক নির্বাচনসহ সামনের নির্বাচনগুলো মোটামুটি ভালো করে তাদের ইমেজ ফেরাতে। যাতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে এই বিষয়টিকে তারা ইস্যু করতে পারে।
 
বাংলাদেম সময়: ১৩০২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৬
এজেড/এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।