ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বিএনপি

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা চলতে বাধা নেই

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৭
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা চলতে বাধা নেই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা চলতে বাধা নেই

ঢাকা: জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচারিক কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার করা আপিল আবেদনে কোনো আদেশ দেননি (নো অর্ডার) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

সোমবার (৩০ অক্টোবর) দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আব্দুল ওয়াহ্‌হাব মিঞার নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
 
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও জয়নুল আবেদীন।

সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী জাকির হোসেন ভূঁইয়া।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।

তিনি জানান, এ মামলায় ১১ সাক্ষীকে পুনঃজেরা করতে চেয়ে তার করা আবেদনের ওপরে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন জানিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। ওই আবেদনে খালেদা জিয়ার পক্ষে মামলার কার্যক্রমও স্থগিত চাওয়া হয়েছিল। সর্বোচ্চ আদালত ‘নো অর্ডার’ দিয়েছেন। ফলে মামলার কার্যক্রম চলতে বাধা নেই। ১১ সাক্ষীর বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশ রোববার (২৮ অক্টোবর) প্রকাশিত হয়েছে। ওই আদেশের বিরুদ্ধে আসামিপক্ষ চাইলে লিভ টু আপিল করতে পারেন।

১১ সাক্ষীকে পুনঃজেরা করার বিষয়ে হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করা হবে বলে জানান খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন।

গত ২৭ জুলাই জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১১ সাক্ষীকে পুনরায় জেরা করতে খালেদা জিয়ার করা আবেদন নাকচ করে দেন ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ মো. আখতারুজ্জামানের আদালত। সাক্ষীরা হলেন- ৫, ৬, ৭, ৮, ১৫, ১৬, ২২, ২৩, ২৬, ২৭ ও ২৮ নম্বর সাক্ষী।

এরপর হাইকোর্টে আবেদন জানান খালেদা জিয়া। আবেদনে রাষ্ট্রপক্ষের ৯ সাক্ষীকে মূল জেরা ও অন্য দুই সাক্ষীর পুনঃজেরা করতে চাওয়া হয়।

শুনানি শেষে গত ২২ অক্টোবর ৯ সাক্ষীকে মূল জেরা করতে চেয়ে করা আবেদনটি পর্যবেক্ষনসহ নিষ্পত্তি করে দেন বিচারপতি মো. শওকত হোসেন ও বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের হাইকোর্ট বেঞ্চ। অন্য দুই সাক্ষীর পুনঃজেরার প্রয়োজন নেই বলেও আদেশ দেন।

খালেদার আইনজীবী জাকির হোসেন সেদিন জানান, হাইকোর্ট ২ সাক্ষীর পুনরায় জেরার প্রয়োজন নেই বলে আদেশ দিয়েছেন। তবে ৯ জনের বিষয়ে তারেক রহমানের ক্ষেত্রে যে জেরা করা হয়েছে, ওই জেরাই খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে বলেছেন।

খুরশীদ আলম খান জানান, ৯ সাক্ষীর বিষয়ে তারেক রহমানের পক্ষের জেরা খালেদা জিয়ার ক্ষেত্রে অ্যাডপ্ট করতে বলেন হাইকোর্ট।

এরপর এ আদেশের বিরুদ্ধে আবেদন জানান খালেদা জিয়া। আবেদনে একইসঙ্গে মামলাটির বিচারিক কার্যক্রমও স্থগিত চাওয়া হয়। গত ২৪ অক্টোবর আপিল আবেদনটি পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে পাঠিয়ে বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) শুনানির দিন ধার্য করেন চেম্বার বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদালত।

গত বৃহস্পতিবার শুনানি শেষে সোমবার আদেশের দিন ধার্য করেন আপিল বিভাগ।

২০০৮ সালের ০৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা করে দুদক। এতিমদের সহায়তার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলাটি করা হয়।

মামলায় খালেদা জিয়াসহ আসামি মোট ছয়জন। অন্য পাঁচ আসামি হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।

২০১৪ সালের ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠন করে এ মামলার বিচার শুরু হয়।

এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৩২ জন সাক্ষী। বর্তমানে ৩৪২ ধারায় প্রধান আসামি খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থন চলমান। অন্য দুই আসামি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন।

ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। আর লন্ডনে থাকা তারেক রহমানকে পলাতক দেখিয়ে মামলাটির বিচার চলছে।
     
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৭
ইএস/এসএইচ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।