আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে এই আসনে আওয়ামী লীগের এক প্রার্থীর বিপরীতে বিএনপির তিন প্রার্থী মনোনয়ন পেতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এরা হলেন- কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য দিলদার হোসেন সেলিম, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান ও বর্তমান গোয়াইনঘাট উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সহসভাপতি আব্দুল হাকিম চৌধুরী।
দলীয় সূত্র জানায়, বিগত সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর থেকে ঘরমুখো হয়ে পড়েন দিলদার হোসেন সেলিম। নির্বাচনকে সামনে রেখে তার প্রকাশ্যে আসা এবং সমাবেশ করে কেন্দ্রীয় নেতাকে দিয়ে মনোনয়ন পাওয়ার নিশ্চয়তার ঘোষণায় দলের নেতাকর্মীর মধ্যে ক্ষোভ দানা বেঁধেছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন ব্যতিরেকে সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেওয়ার এমন ঘোষণার সত্যতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন নেতাকর্মী ও স্থানীয় জনসাধারণ।
নেতাকর্মীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের দখলে থাকা সিলেট-৪ আসন পুনরুদ্ধারের স্বপ্ন দেখছে বিএনপি। নির্বাচনী মাঠে প্রার্থীও রয়েছেন একাধিক। খালেদা জিয়া এখনো কোনো আসনে চুড়ান্তভাবে কোনো প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেননি।
দিলদার হোসেন সেলিম ছাড়াও এ আসনে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে আছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহস্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সামসুজ্জামান জামান। দলের দু:সময়ে সামনে থেকে মাঠে ময়দানে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া দলের হাইকমান্ডে গুডবুকে রয়েছেন তিনি।
এছাড়া বিএনপির মনোনয়ন পেতে বসে নেই বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সহ সভাপতি আব্দুল হাকিম চৌধুরী। মনোনয়ন পেতে তিনি কেন্দ্রে তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তাঁরই ঘনিষ্ঠ সূত্র।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আব্দুল হাকিম চৌধুরীসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ সম্প্রতি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, তৃণমূল নেতৃবৃন্দের সঙ্গে যাদের সুসস্পর্ক রয়েছে, দল তাদেরই মূল্যায়ন করবে। এ ক্ষেত্রে সময়ের প্রেক্ষিতে নেতারও পরিবর্তন হবে। দেশবাসীর স্বার্থে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় নির্বাচন করতে হবে। এ জন্য মাঠ পর্যায়ে সাহস ও শক্তি নিয়ে কাজ করার নির্দেশনা দেন তিনি।
সূত্র জানায়, গত শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার পূর্বজাফলং ইউনিয়নের আমির মিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে বিএনপির সদস্য সংগ্রহ কর্মীসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, ‘এখানে অনেকেই সুর তোলার চেষ্টা করছেন। সুর তোলার কোনো অবকাশ নেই। এই আসনে মনোনয়ন পাবেন দিলদার হোসেন সেলিম। আপনাদের কাজ শুধু তাকে নির্বাচিত করা। ’ এমন ঘোষণায় নড়েচড়ে বসেন বিএনপির অন্য প্রার্থীরাও।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জনপ্রতিনিধি বলেন, আজীবন জাতীয়তাবাদের আদর্শ লালন করে আসছি। নির্বাচনে মনোনয়ন দিতে দেখেছি দলীয় চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে। এখন দেখছি মনোনয়ন দিচ্ছেন মোহাম্মদ শাহজাহান।
এ ব্যাপারে সিলেট জেলা বিএনপি সভাপতি আবুল কাহের শামীম বাংলানিউজকে বলেন, সংসদ নির্বাচনে কিংবা সিটি নির্বাচনে এখনো কাউকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়নি। নেত্রী যাকে মনোনয়ন দেবেন নেতাকর্মীরা তার পক্ষেই কাজ করবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৭৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০১৭
এনইউ/জেডএম