মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টায় খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে শুরু হওয়া যুক্তিতর্ক টানা প্রায় পৌনে দু’ঘণ্টা চলার পর বেলা ১টা ২০ মিনিটে এক ঘণ্টার বিরতি দেওয়া হয়। বেলা আড়াইটায় ফের শুরু হয়ে পৌনে চারটার দিকে যুক্তিতর্ক মুলতবি করা হয়।
যুক্তিতর্কে খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুর রেজ্জাক খান প্রথমেই দুদকের ১৩তম সাক্ষীর সাক্ষ্য খণ্ডানোর যুক্তি তুলে ধরেন। এ সময় তিনি সোনালী ব্যাংকের কোন ডকুমেন্ট আদালতে প্রদর্শিত হয়নি জানিয়ে কোনো সাক্ষী মূল ডকুমেন্টগুলো দেখেছেন এমন কোনো সাক্ষ্য দেয়নি মর্মে আদালতকে অবহিত করেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল, মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আবু, অ্যাডভোকেট মীর আব্দুস সালাম, অ্যাডভোকেট আমিন উদ্দিন মানিক প্রমুখ।
শুনানিকালে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ বিএনপি নেতাদের মধ্যে আদালতে উপস্থিত ছিলেন স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, কেন্দ্রীয় নেতা নাজিমুদ্দিন আলম, আব্দুস সালাম, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, খায়রুল কবীর খোকন, আফরোজা আব্বাস, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু প্রমুখ।
আইনজীবীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, সুপ্রিমকোর্ট বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, সেক্রেটারি মাহবুব উদ্দিন খোকন, অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার প্রমুখ।
এর আগে বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর বকশিবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত ঢাকার বিশেষ জজ ড. মো. আখতারুজ্জামানের আদালতে পৌছান খালেদা জিয়া।
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলা দু’টির প্রধান আসামি খালেদা জিয়া।
চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় মোট আসামি চারজন। খালেদা জিয়া ছাড়া অভিযুক্ত অপর তিন আসামি হলেন- খালেদার তৎকালীন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এ মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মোট ৩২ জন সাক্ষী। জামিনে থাকা অন্য দুই আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্না ও মনিরুল ইসলাম খান আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে লিখিত বক্তব্য জমা দিয়েছেন। হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক।
অন্যদিকে অরফানেজ মামলায় খালেদা জিয়াসহ আসামি মোট ছয়জন। অন্য পাঁচ আসামি হলেন- বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান ও খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমান, মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল ওরফে ইকোনো কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
আসামিদের মধ্যে ড. কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান মামলার শুরু থেকেই পলাতক। বাকিরা জামিনে আছেন।
২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলা দায়ের করা হয়। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
অন্যদিকে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করে দুদক। এতিমদের সহায়তা করার উদ্দেশ্যে একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ এনে এ মামলা দায়ের করা হয়।
বিরতি শেষে ফের শুরু খালেদার যুক্তিতর্ক
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৬, ২০১৭
এমআই/জেডএম